হাওর বার্তা ডেস্কঃ একতলা বাড়িতে থাকে ৮০ বছরের বৃদ্ধা শান্তিপ্রভা দেব। তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে বিকাশ দীর্ঘ দশ বছর আগে বিয়ে করে আলাদা থাকেন। বাড়িতে এখন বৃদ্ধা থাকেন তাঁর ছোট ছেলেকে নিয়ে। ছোট ছেলে ভুলু বেকার। স্বামী সুকুমার রাজ্য সরকারের ভূমি রাজস্ব দফতরে চাকরি করতেন। তাঁর পেনসনই এখন ভরসা শান্তিপ্রভার। সেই টাকাতেই চলে মা আর বেকার ছেলের সংসার।
মধ্যবয়স্ক ছেলের হাতে লাঠি। সামনে অসহায় বৃদ্ধা মা। তাঁকে সেই লাঠি উঁচিয়ে বা কখনও লাঠির ঘা মেরে শাসাচ্ছে ছেলে। এই ঘটনা এক দিনের নয়। ভারতের নিমতার বিএল মুখার্জি রোডের বাসিন্দাদের কাছে এই দৃশ্য নিত্য দিনের। বৃদ্ধার বড়ছেলে বিকাশও বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমি গিয়ে টাকা দিয়ে আসতাম। তবে, মা কখনই এ সব কথা বলেনি।’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নানা কারণে প্রায়ই মাকে মারধর করতেন ছেলে ভুলু। কখনও টাকার জন্য, আবার কখনও অন্য কোনো কারণে। প্রতিবেশীরা শুরুর দিকে অনেক বার প্রতিবাদ করেন। কিন্তু ছেলে ভুলু উল্টা-পাল্টা হুমকি দেওয়ায় পরে আর প্রতিবাদ করেননি তাঁরা।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, প্রতিবাদ জানানোর পর থেকে বাড়ির মূল দরজায় তালা দিয়ে রাখতেন ভুলু। যাতে কেউ বাড়িতে মায়ের সঙ্গে কথা না বলতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এই ঘটনা সহ্য করতে পারেননি প্রতিবেশীরাও। তাই সুযোগ পেয়েই ঠিক উল্টোদিকের বাড়ির কর্ত্রী প্রত্যাশা রায় চৌধুরী মারধরের গোটা ঘটনা মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করেন। আর সেই ছবিতেই দেখা যাচ্ছে কী ভাবে মধ্যবয়সী ভুলু লাঠি নিয়ে মারধর করছেন বৃদ্ধা মাকে। সঙ্গে তুই করে সম্বোধন।
প্রতিবেশী প্রত্যাশা রায় সেই ভিডিও সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করেন। তার পরেই সেই ভিডিয়ো দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ভিডিও পৌছায় নিমতা থানার পুলিশের কাছেও। তাঁরা প্রথমে ভুলুকে সাবধান করেন। কিন্তু তার পরেও কোনও পরিবর্তন হয় না ছেলের ব্যবহারের। মায়ের পেনশনের টাকা নিয়ে মাকে মারধর করেন ভুলু, অভিযোগ প্রতিবেশীদের। তার পরই ফের খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। এর পরই ভুলুকে গ্রেফতার করা হয়।