ঢাকা ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কে আ.লীগের অপকর্ম নিচে পড়ে যাচ্ছে: মির্জা ফখরুল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৪৫:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩ বার

রাজনৈতিক বিতর্কে আওয়ামী লীগের চুরি ও লুটপাটের ঘটনাগুলো নিচে পড়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘বিদ্যুৎ এ জ্বালানি খাতে’ বিগত সরকারের দুর্নীতির ওপর তৈরি করা একটি বিশ্লেষণ প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির মহাসচিব বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের লুটপাটের চিত্র ভালোভাবে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘কারণ আমরা মনে করি, বিদ্যুৎ খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে।’

এটি অনেক আগেই করা উচিত ছিল বলে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কে আওয়ামী লীগের চুরি, লুটপাটের নিচে পড়ে যাচ্ছে। তারা সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ যে ধ্বংস করে দিয়েছে দেশটাকে, অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে, এটা মানুষ ভুলে যাচ্ছে।

‘উই মাস্ট সি দা কন্ট্রাক্ট’

সংবাদ সম্মেলনে ‘গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ লুটপাট ও পাচার’ শীর্ষক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ। তিনি শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে করা সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানান। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ খাতে যে ম্যাজিক দেখাতে চেয়েছিল। ম্যাজিক দেখাতে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষের পকেট কেটে নিয়ে গেছে। আসলে তারা বিদ্যুৎকে একটা ব্যবসার খাত বানিয়েছিল। তারা বুঝতে পেরেছিল, এই খাত থেকে কুইক মানি বানানো যায় কোনো হিসাব না দিয়ে। কারণ, বিদ্যুৎ তো “হাওয়া”, এটি দেখা যায় না। ক্যাপাসিটি চার্জে কোন মেশিনে কত ক্যাপাসিটি? কে এটাকে আইডেনটিফাই করেছে এবং সেই মেশিনগুলোর ইফিসিয়েন্সি কী? এগুলো কেউ বিশ্লেষণ করে না, দেখেও না।’

সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে তারা (আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী) ১৫ বছরে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে।

বিদ্যুৎ খাতের কোনো চুক্তি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল মেনে করা হয়নি বলে অভিযোগ করে ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘উই মাস্ট সি দা কন্ট্রাক্ট। তারা কীভাবে কন্ট্রাক্টগুলো করেছে, এটা পাবলিক হওয়া উচিত…অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হলো প্রতিটা চুক্তি উন্মুক্ত করে দেওয়া।’

‘বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি-লুটপাট’

দুর্নীতির পরিসংখ্যান চিত্র তুলে ধরে ইকবাল হাসান বলেন, বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে মোট খরচ হলো ২ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার। বর্তমান বিনিময় হারে তা ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জে লুটপাট হয়েছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে হয়েছে ১ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে হয়েছে ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে হয়েছে ১৭ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা।

সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী দাবি করেন, ক্যাপাসিটি চার্জ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগের মেশিনগুলো খারাপ। খারাপ মেশিন এসে টাকা কামাই করে চলে গেছে। এর মধ্যে সামিট নিয়েছে ১০ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা, অ্যাগ্রো ইন্টারন্যাশনাল নিয়েছে ৭ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা, আলট্রা পাওয়ার হোল্ডিংস নিয়েছে ৭ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা, ইউনাইটেড গ্রুপ নিয়েছে ৬ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা, আরপিসিএল নিয়েছে ৫ হাজার ১১৭ কোটি টাকা।

ইকবাল হাসান বলেন, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আসে সাধারণত আপত্কালীন বিদ্যুৎ-সংকট নিরসনের জন্য। এই প্ল্যান্ট দুই বছরের, সেটা ১৫ বছর পর্যন্ত চালাচ্ছে এবং এসব কুইক রেন্টালে ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে কোনো রিটার্ন ছাড়া। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির নামে ৯ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছে ১১ হাজার ১৫ কোটি টাকা।

‘যেকোনো সময় মুখ থুবড়ে পড়বে’

যেকোনো সময় বিদ্যুৎ খাত মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুতে যেসব উন্নয়ন করা হয়েছে, এই উন্নয়ন টেকসই নয়, সাসটেইনেবল নয়।

এ প্রসঙ্গে ইকবাল হাসান বলেন, ‘একটা উদাহরণ বলি, প্রতি মিটারের জন্য গড়ে অতিরিক্ত খরচ করেছে ৪ হাজার ৫০০ টাকা…ক্রয় করেছে ৬ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে… তাহলে দেখা যায়, অতিরিক্ত ১ হাজার ৭২০ টাকা প্রতি মিটারে…তাহলে দেখেন কত টাকা নিয়ে গেছে তারা এবং এনআইসি কার্ডের দাম ২ হাজার টাকা, তারা ধরেছে ৫ হাজার ২১৫ টাকা…এভাবে দেখবেন, এই খাতে দুর্নীতির কোনো শেষ নেই।’

‘রূপপুর প্রকল্পে দুর্নীতি’

ইকবাল হাসান বলেন, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের ৫০০ বিলিয়ন ডলার তারা (শেখ হাসিনাসহ তার পরিবার) নিয়ে গেছে। সেটা নিয়ে আরও তদন্ত হচ্ছে লন্ডনে টিউলিপের (ব্রিটিশ সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকী, শেখ রেহানার মেয়ে) ব্যাপারে এবং আরও দুর্নীতি আছে।

প্রি-পেইড মিটার-বাণিজ্যে সিন্ডিকেটের কথা উল্লেখ করে ইকবাল হাসান বলেন, এটা তাদের একটা সিন্ডিকেট। ৭১ লাখ ২০ হাজার গ্রাহকের কাছে তারা মিটার পৌঁছাবে এবং সেখানে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা পাচার করেছে…১ হাজার ২৩৫ কোটি অতিরিক্ত খরচ করেছে, এর মধ্যে দুর্নীতি করেছে ৬১৭ কোটি টাকা…মিটার সরবরাহ ও স্থাপন, বাস্তবায়নে ছিল ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, সেটা ১২ হাজার কোটি টাকা করেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার প্রকল্প, এটার যে নেটওয়ার্ক তৈরি করছে, এই নেটওয়ার্কটা হচ্ছে কিছু ব্যক্তির নেটওয়ার্ক। যেখানে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন আছে। তাতে তারা কোটি কোটি টাকা লাভবান হবে এই প্রকল্পে। এলএনজি প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কোম্পানিসহ ‘একটি চক্র’।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, তাঁরা ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রকল্পগুলো রিভিউ করবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কে আ.লীগের অপকর্ম নিচে পড়ে যাচ্ছে: মির্জা ফখরুল

আপডেট টাইম : ০৬:৪৫:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫

রাজনৈতিক বিতর্কে আওয়ামী লীগের চুরি ও লুটপাটের ঘটনাগুলো নিচে পড়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘বিদ্যুৎ এ জ্বালানি খাতে’ বিগত সরকারের দুর্নীতির ওপর তৈরি করা একটি বিশ্লেষণ প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির মহাসচিব বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের লুটপাটের চিত্র ভালোভাবে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘কারণ আমরা মনে করি, বিদ্যুৎ খাতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে।’

এটি অনেক আগেই করা উচিত ছিল বলে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কে আওয়ামী লীগের চুরি, লুটপাটের নিচে পড়ে যাচ্ছে। তারা সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ যে ধ্বংস করে দিয়েছে দেশটাকে, অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে, এটা মানুষ ভুলে যাচ্ছে।

‘উই মাস্ট সি দা কন্ট্রাক্ট’

সংবাদ সম্মেলনে ‘গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ লুটপাট ও পাচার’ শীর্ষক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ। তিনি শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে করা সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানান। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ খাতে যে ম্যাজিক দেখাতে চেয়েছিল। ম্যাজিক দেখাতে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষের পকেট কেটে নিয়ে গেছে। আসলে তারা বিদ্যুৎকে একটা ব্যবসার খাত বানিয়েছিল। তারা বুঝতে পেরেছিল, এই খাত থেকে কুইক মানি বানানো যায় কোনো হিসাব না দিয়ে। কারণ, বিদ্যুৎ তো “হাওয়া”, এটি দেখা যায় না। ক্যাপাসিটি চার্জে কোন মেশিনে কত ক্যাপাসিটি? কে এটাকে আইডেনটিফাই করেছে এবং সেই মেশিনগুলোর ইফিসিয়েন্সি কী? এগুলো কেউ বিশ্লেষণ করে না, দেখেও না।’

সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে তারা (আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী) ১৫ বছরে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে।

বিদ্যুৎ খাতের কোনো চুক্তি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল মেনে করা হয়নি বলে অভিযোগ করে ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘উই মাস্ট সি দা কন্ট্রাক্ট। তারা কীভাবে কন্ট্রাক্টগুলো করেছে, এটা পাবলিক হওয়া উচিত…অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হলো প্রতিটা চুক্তি উন্মুক্ত করে দেওয়া।’

‘বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি-লুটপাট’

দুর্নীতির পরিসংখ্যান চিত্র তুলে ধরে ইকবাল হাসান বলেন, বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে মোট খরচ হলো ২ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার। বর্তমান বিনিময় হারে তা ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জে লুটপাট হয়েছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে হয়েছে ১ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে হয়েছে ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে হয়েছে ১৭ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা।

সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী দাবি করেন, ক্যাপাসিটি চার্জ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগের মেশিনগুলো খারাপ। খারাপ মেশিন এসে টাকা কামাই করে চলে গেছে। এর মধ্যে সামিট নিয়েছে ১০ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা, অ্যাগ্রো ইন্টারন্যাশনাল নিয়েছে ৭ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা, আলট্রা পাওয়ার হোল্ডিংস নিয়েছে ৭ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা, ইউনাইটেড গ্রুপ নিয়েছে ৬ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা, আরপিসিএল নিয়েছে ৫ হাজার ১১৭ কোটি টাকা।

ইকবাল হাসান বলেন, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আসে সাধারণত আপত্কালীন বিদ্যুৎ-সংকট নিরসনের জন্য। এই প্ল্যান্ট দুই বছরের, সেটা ১৫ বছর পর্যন্ত চালাচ্ছে এবং এসব কুইক রেন্টালে ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে কোনো রিটার্ন ছাড়া। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির নামে ৯ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছে ১১ হাজার ১৫ কোটি টাকা।

‘যেকোনো সময় মুখ থুবড়ে পড়বে’

যেকোনো সময় বিদ্যুৎ খাত মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুতে যেসব উন্নয়ন করা হয়েছে, এই উন্নয়ন টেকসই নয়, সাসটেইনেবল নয়।

এ প্রসঙ্গে ইকবাল হাসান বলেন, ‘একটা উদাহরণ বলি, প্রতি মিটারের জন্য গড়ে অতিরিক্ত খরচ করেছে ৪ হাজার ৫০০ টাকা…ক্রয় করেছে ৬ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে… তাহলে দেখা যায়, অতিরিক্ত ১ হাজার ৭২০ টাকা প্রতি মিটারে…তাহলে দেখেন কত টাকা নিয়ে গেছে তারা এবং এনআইসি কার্ডের দাম ২ হাজার টাকা, তারা ধরেছে ৫ হাজার ২১৫ টাকা…এভাবে দেখবেন, এই খাতে দুর্নীতির কোনো শেষ নেই।’

‘রূপপুর প্রকল্পে দুর্নীতি’

ইকবাল হাসান বলেন, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের ৫০০ বিলিয়ন ডলার তারা (শেখ হাসিনাসহ তার পরিবার) নিয়ে গেছে। সেটা নিয়ে আরও তদন্ত হচ্ছে লন্ডনে টিউলিপের (ব্রিটিশ সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকী, শেখ রেহানার মেয়ে) ব্যাপারে এবং আরও দুর্নীতি আছে।

প্রি-পেইড মিটার-বাণিজ্যে সিন্ডিকেটের কথা উল্লেখ করে ইকবাল হাসান বলেন, এটা তাদের একটা সিন্ডিকেট। ৭১ লাখ ২০ হাজার গ্রাহকের কাছে তারা মিটার পৌঁছাবে এবং সেখানে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা পাচার করেছে…১ হাজার ২৩৫ কোটি অতিরিক্ত খরচ করেছে, এর মধ্যে দুর্নীতি করেছে ৬১৭ কোটি টাকা…মিটার সরবরাহ ও স্থাপন, বাস্তবায়নে ছিল ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, সেটা ১২ হাজার কোটি টাকা করেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার প্রকল্প, এটার যে নেটওয়ার্ক তৈরি করছে, এই নেটওয়ার্কটা হচ্ছে কিছু ব্যক্তির নেটওয়ার্ক। যেখানে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন আছে। তাতে তারা কোটি কোটি টাকা লাভবান হবে এই প্রকল্পে। এলএনজি প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কোম্পানিসহ ‘একটি চক্র’।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, তাঁরা ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রকল্পগুলো রিভিউ করবেন।