ঢাকা ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্দরীগাছে সারবে ডায়াবেটিস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১১:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৩৪৩ বার

সুন্দরবনের সুন্দরীগাছের পাতা ও শ্বাসমূলে এমন কিছু ভেষজ উপাদান রয়েছে, যা ‘টাইপ-টু ডায়াবেটিস’ নিরাময়ে বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে। ভারতের বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ দাবি করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের আর জে কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিজ্ঞানীরা শিগগিরই এ ধরনের আবিষ্কারের ‘পেটেন্ট’ বা উদ্ভাবনীর জন্য আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন। এ খবর জানিয়েছে পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে জি নিউজ।

বঙ্গোপসাগরের জোয়ার-ভাটায় প্লাবিত শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল সুন্দরবনের প্রধান গাছই হলো সুন্দরী। পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন লাগোয়া লোকালয়ের মানুষদের ভেষজ চিকিৎসা ও খাদ্যাভাস নিয়ে গবেষণাটি শুরুর পর সুন্দরীগাছের এমন ঔষধি গুণের কথা জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা।

ডায়াবেটিস সারাতে সুন্দরীগাছের এমন ঔষধি গুণের কথা চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর আগে কখনো জানা যায়নি বলেও দাবি করেছেন ভারতের বিজ্ঞানীরা।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পাঁচ বছর ধরে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে গবেষণাটি চালানো হয়। ‘আইডেন্টিফিকেশন অব অ্যান্টি-ডায়াবেটিক কম্পাউন্ডস ফ্রম সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ’ শিরোনামে পশ্চিমবঙ্গের আর জে কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিজ্ঞানীরা গবেষণাটি চালান।

সুন্দরীগাছে উচ্চমাত্রায় ডায়াবেটিস-নিরোধী উপাদান আছে, যা টাইপ-টু ডায়াবেটিস সারাতে খুবই কার্যকর হতে পারে।

গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সুন্দরীগাছের পাতা, শ্বাসমূলসহ অন্যান্য অংশেও এমন কিছু উপাদান আছে, যা টাইপ-টু ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে ব্লাড সুগার বা শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

ভারতীয় গবেষক দলটির প্রধান বিজ্ঞানী অঞ্জন অধিকারী প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে বলেন, গবেষণায় প্রথমবারের মতো জানা গেছে যে, সুন্দরবনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সুন্দরীগাছে উচ্চমাত্রায় ডায়াবেটিস-নিরোধী উপাদান আছে, যা টাইপ-টু ডায়াবেটিস সারাতে খুবই কার্যকর হতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা শিগগিরই এ বিষয়ে পেটেন্টের জন্য আবেদন করব। পাঁচ বছর আগে আমরা সুন্দরবনের শ্বাসমূলীয় বনের লাগোয়া এলাকাগুলোতে বসবাসরত মানুষের খাদ্যাভাস নিয়ে গবেষণা শুরু করি। তখন জানতে পারি, এসব মানুষ সুন্দরবনের ঔষধি গাছপালার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল এবং তারা বিশ্বাস করে, অনেক গাছের পাতা ও শিকড়ই নানা রোগবালাই সারিয়ে তুলতে পারে।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিস্তৃত। বঙ্গোপসাগরের উপকূল ধরে বিস্তৃত শ্বাসমূলীয় এই বনের ৬০ শতাংশেরও বেশি বাংলাদেশে অবস্থিত। প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতিতে সমৃদ্ধ সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যে এক অনন্য। এ কারণে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনেসকো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সুন্দরীগাছে সারবে ডায়াবেটিস

আপডেট টাইম : ১১:১১:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সুন্দরবনের সুন্দরীগাছের পাতা ও শ্বাসমূলে এমন কিছু ভেষজ উপাদান রয়েছে, যা ‘টাইপ-টু ডায়াবেটিস’ নিরাময়ে বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে। ভারতের বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ দাবি করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের আর জে কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিজ্ঞানীরা শিগগিরই এ ধরনের আবিষ্কারের ‘পেটেন্ট’ বা উদ্ভাবনীর জন্য আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন। এ খবর জানিয়েছে পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে জি নিউজ।

বঙ্গোপসাগরের জোয়ার-ভাটায় প্লাবিত শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল সুন্দরবনের প্রধান গাছই হলো সুন্দরী। পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন লাগোয়া লোকালয়ের মানুষদের ভেষজ চিকিৎসা ও খাদ্যাভাস নিয়ে গবেষণাটি শুরুর পর সুন্দরীগাছের এমন ঔষধি গুণের কথা জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা।

ডায়াবেটিস সারাতে সুন্দরীগাছের এমন ঔষধি গুণের কথা চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর আগে কখনো জানা যায়নি বলেও দাবি করেছেন ভারতের বিজ্ঞানীরা।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পাঁচ বছর ধরে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে গবেষণাটি চালানো হয়। ‘আইডেন্টিফিকেশন অব অ্যান্টি-ডায়াবেটিক কম্পাউন্ডস ফ্রম সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ’ শিরোনামে পশ্চিমবঙ্গের আর জে কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিজ্ঞানীরা গবেষণাটি চালান।

সুন্দরীগাছে উচ্চমাত্রায় ডায়াবেটিস-নিরোধী উপাদান আছে, যা টাইপ-টু ডায়াবেটিস সারাতে খুবই কার্যকর হতে পারে।

গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সুন্দরীগাছের পাতা, শ্বাসমূলসহ অন্যান্য অংশেও এমন কিছু উপাদান আছে, যা টাইপ-টু ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে ব্লাড সুগার বা শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

ভারতীয় গবেষক দলটির প্রধান বিজ্ঞানী অঞ্জন অধিকারী প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে বলেন, গবেষণায় প্রথমবারের মতো জানা গেছে যে, সুন্দরবনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সুন্দরীগাছে উচ্চমাত্রায় ডায়াবেটিস-নিরোধী উপাদান আছে, যা টাইপ-টু ডায়াবেটিস সারাতে খুবই কার্যকর হতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা শিগগিরই এ বিষয়ে পেটেন্টের জন্য আবেদন করব। পাঁচ বছর আগে আমরা সুন্দরবনের শ্বাসমূলীয় বনের লাগোয়া এলাকাগুলোতে বসবাসরত মানুষের খাদ্যাভাস নিয়ে গবেষণা শুরু করি। তখন জানতে পারি, এসব মানুষ সুন্দরবনের ঔষধি গাছপালার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল এবং তারা বিশ্বাস করে, অনেক গাছের পাতা ও শিকড়ই নানা রোগবালাই সারিয়ে তুলতে পারে।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিস্তৃত। বঙ্গোপসাগরের উপকূল ধরে বিস্তৃত শ্বাসমূলীয় এই বনের ৬০ শতাংশেরও বেশি বাংলাদেশে অবস্থিত। প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতিতে সমৃদ্ধ সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যে এক অনন্য। এ কারণে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনেসকো।