হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজনীতিকে তিনি মনে করেন গণমানুষের স্বপ্নপূরণের মাধ্যম। গণমানুষের এই স্বপ্নপূরণ আর তাদের সামগ্রিক উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা থেকেই রাজনীতিতে তার পদযাত্রা। রাজনীতি আর পেশাগত অবস্থান থেকে বিগত ৪০ বছর ধরে গণমানুষের কল্যাণে নিবেদিত রয়েছেন তিনি। ছাত্রজীবন থেকেই সাধারণ মানুষের সুখে-দু:খে, বিপদে-আপদে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।
বিশেষ করে নিজ এলাকা করিমগঞ্জ ও তাড়াইলের মানুষের প্রতি তাঁর রয়েছে এক অন্যরকম দায়বোধ। যখনই সুযোগ পেয়েছেন নিজ অবস্থান থেকে তাদের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। এলাকাবাসীর অভাব-অভিযোগ, সমস্যা-সংকট উত্তরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। এসবের মাধ্যমে তিনিও জায়গা করে নিয়েছেন এলাকার মানুষের হৃদয়ে। জনগণের কল্যাণে নিবেদিত এই মানুষটি অধ্যক্ষ আসাদুল হক।
করিমগঞ্জ উপজেলার এই কৃতী সন্তান এলাকার ছোট-বড়, যুবক-যুবতী, নারী-পুরুষ, ধনী-গরীব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সব মহলের প্রিয় মানুষ; তাদের প্রাণের মানুষ। আগামী নির্বাচনে তাকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছেন কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সাধারণ মানুষ। স্বভাবতই মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন ৭১’এর রণাঙ্গণের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
অধ্যক্ষ আসাদুল হকের জন্ম ১৯৫৩ সালের পহেলা জুলাই করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মুড়িকান্দি গ্রামে। তার পিতা মরহুম আব্দুল করিম ফকির ও মাতা মরহুমা জয়তুন বানু। দারুণ মেধাবী আসাদুল হক শিক্ষা জীবনের প্রতিটি স্তরে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যায় এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। মহান পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকে বেছে নেন পেশা হিসেবে।
কিন্তু পেশা শিক্ষকতা হলেও নেশা তার রাজনীতিতে। ছাত্রজীবনেই জড়িয়ে ছিলেন রাজনীতির মায়ায়। ১৯৬৮ সালে ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৭১ সালের মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসেবে যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। যুদ্ধ শেষে লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে ঘরে ফেরেন অকুতোভয় এই ছাত্রলীগ নেতা। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্রপতি হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শন উপলক্ষে গঠিত কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের পক্ষে ছাত্রলীগ নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালনের জন্য আসাদুল হক ডেপুটি লিডার মনোনীত হন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শনের আগেই মোশতাক চক্রের হাতে সপরিবারে নিহত হন বঙ্গবন্ধু।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এই সৈনিক বর্তমানে সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গমাতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর সংগঠন এর। মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বোর্ড অব গভর্নর্স এর সদস্য তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি এর সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এর ভাইস চেয়ারম্যান ও পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে শিক্ষক ও পেশাজীবীদের স্বার্থ ও অধিকার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। রাজধানীর তেজগাঁও মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য আসাদুল হক একজন শিক্ষাবিদ হিসেবেও অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। এর বাইরেও তিনি নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছেন।
করিমগঞ্জ ও তাড়াইল নিয়ে গঠিত এই নির্বাচনী আসন থেকে ১৯৮৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের একদিন আগে সামরিক জান্তা এরশাদের নির্দেশে আসাদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এছাড়া পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ ও শিক্ষক সংগঠনের ব্যানারে জোট সরকারের আমলে আন্দোলন-সংগ্রামে প্রত্যক্ষ নেতৃত্ব দেন আসাদুল হক।
পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে নিবেদিত থেকেছেন এই রাজনীতিক। এলাকায় নারী শিক্ষার প্রসার ও ধর্মীয় ধারায় আধুনিক শিক্ষার জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেন দেওপুর আসাদুল হক বালিকা দাখিল মাদরাসা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এর সদস্য সচিব থাকাকালে এলাকার শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে তিনি অনবদ্য ভূমিকা রাখেন।
এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে তিনি আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে কাজ করে আসছেন। দলের দুর্দিনে পাশে থেকে তাদের আগলে রেখেছেন। তাই তিনি আওয়ামী লীগের কাণ্ডারি ও তৃণমূল নেতা হিসেবেও এলাকায় খ্যাতি অর্জন করেছেন।
এলাকাবাসী বলছেন, অধ্যক্ষ আসাদুল হক এর মতো একজন সৎ এবং কর্মীবান্ধব নেতা পেয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উজ্জ্বীবিত। এলাকায় অধ্যক্ষ আসাদুল হক এর ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এসব কারণে অধ্যক্ষ আসাদুল হক দলীয় মনোনয়ন লাভে এই আসনে অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। সব মিলিয়ে অধ্যক্ষ আসাদুল হক এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেলে দীর্ঘদিন জোটের নামে জাতীয় পার্টির কব্জায় থাকা আসনটি আওয়ামী লীগ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে বলেই মনে করছেন তারা।