ভারতের লোকসভায় সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সর্ম্পকে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। এ চুক্তি আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ ছাড়া এই নতুন সর্ম্পককে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে দ্বিপক্ষীয় সব সমস্যার সমাধান এবং ছিটমহলবাসীদের দ্রুত পুনর্বাসনের মাধ্যমে তাদের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত ‘সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন- ইউজিসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এ কে আজাদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, প্রাক্তন মন্ত্রী জি এম কাদের, প্রাক্তন মন্ত্রী জাফর ইমাম, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ, প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, প্রাক্তন হুইপ সৈয়দ শহীদুল হক জামাল, প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মুহম্মদ জমির, ওয়ালিউর রহমান, সমাজবিজ্ঞানী সাদেকা হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন আহমেদ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ, ৭১ টেলিভিশনের বার্তা পরিচালক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম।
এ কে আজাদ চৌধুরী সীমান্ত সমস্যা সমাধানে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, বাংলাদেশ সরকার ও ভারত সরকারের প্রশংসা করেন। সীমান্ত চুক্তির ধারাবাহিকতায় তিস্তা সমস্যারও দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরীও ভারতের লোকসভায় সীমান্ত চুক্তির অনুমোদনের জন্য উভয় পক্ষকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের আরো সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
সীমান্ত সমস্যাকে ভারতবিরোধী রাজনীতির কার্ড হিসেবে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হয়েছিল, এ মন্তব্য করে সাবেক মন্ত্রী জি এম কাদের বলেন, ‘এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ নেই। পানি সমস্যা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় একটা সমস্যা। এটা ভারতও উপলব্ধি করছে।’
জাফর আহমেদ বলেন, ‘পুরোনো বন্ধুত্বের নতুন দিগন্তকে কাজে লাগিয়ে অন্যান্য সমস্যাগুলোরও সমাধান করে ফেলা উচিত।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে আসলে সংবর্ধনা দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের যে গভীর সম্পর্ক, তাতে আমাদের মধ্যকার সমস্যাগুলো নিয়ে চিল্লাচিল্লি করলেও আমাদের বন্ধুত্বের সর্ম্পক অটুট থাকেবে। বন্ধুত্ব থাকবে, অথচ তিস্তার পানি দেবে না, সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ হবে না, তা হতে পারে না।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘এ চুক্তির ফলে দুদেশের সর্ম্পকের নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ চুক্তি বাংলাদেশের রাজনীতি ও আঞ্চলিক অঙ্গনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেন, ‘এ চুক্তি আঞ্চলিক নিরাপত্তায় প্রতিষ্ঠায় অনেক বড় ভূমিকা রাখবে।’