২০ গ্রামের মানুষের এক মাত্র ভরসা বাঁশের এই সাঁকো

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বরগুনার তালতলী উপজেলার কলারং ও চরকগাছিয়া গ্রামের মাঝখানের খালের ওপর পাকা সেতু না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। একটি বাঁশের সাঁকোই যাদের একমাত্র ভরসা। তারা বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। দুই গ্রামবাসীর দুঃখের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এ সাঁকো।

সরজমিন দেখা যায়, উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের কলারং থেকে চরকগাছিয়া গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এ বাঁশের সাঁকো। গ্রামের শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়, কলেজে, মাদরাসায়, যাতায়াত করে। শুধু শিক্ষার্থী নয়, ওই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন চরকগাছিয়া গ্রামের দুই শতাধিক লোক জীবনের তাগিদে ও দৈনন্দিন কাজে যেমন যাতায়াত করে তেমনি কলারং গ্রামের শতাধিক কৃষক কৃষি কাজের জন্য সাঁকোটি ব্যবহার করেন। একদিকে যেমন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় তেমনি প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা স্বীকার হতে হয় এই সাঁকোতে।

পঁচাকোড়ালিয়া, আরপঙ্গাশিয়া, চান্দখালি, কলারং, ঘোপখালিসহ এ এলাকার প্রায় ২১টি গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরসহ দেশের অন্যান্য স্থানের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম কলারং টু চরকগাছিয়া বাঁশের তৈীর সাঁকোটি।

স্থানীয় জনতা প্রতি বছরই এই সাঁকো মেরামত করে পারাপারের ব্যবস্থা করেন। ব্যবসা-বাণিজ্য, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ এবং দৈনন্দিন কর্মসংস্থানের কারণে সাঁকো পেরিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলোর কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিক্রিসহ রোগীর জরুরি চিকিৎসার জন্য নড়বড়ে সাঁকোর ওপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয়।

প্রায় ৩০ বছর আগে এ নদে খেয়ানৌকা পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় নদে বাঁশের সাঁকো স্থাপন করে। এলাকাবাসীর প্রাণের  দাবি এমতবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসীর। তাদের দাবি ওই খালের ওপর সেতু নির্মিত হলে পাল্টে যাবে খালের পাড়ের হাজার মানুষের জীবনযাত্রা।

এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রু্রতি দিলেও নির্বাচন শেষ হলে তা বাস্তবায়ন করে না। হয়নি তাই এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় এই বাঁশের সাঁকো স্থাপন করে।

চরকগাছিয়া গ্রামের মহসিন বলেন, আমাদের চাষাবাদের জমিসহ খালের ওপারে হওয়ায় এই সাঁকো দিয়ে ফসল আনা-নেয়া করতে হয়। প্রতিদিনই এখান দিয়ে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। আমি গতকাল সাঁকো ভেঙে পড়ে যাই ।

কলারং গ্রামের মজিবুর রহমান জানান, এই বাঁশের সাঁকো দুই গ্রামবাসীর দুঃখ। ছোটবেলা থেকেই দেখছি এখানে বাঁশের সাঁকো। কবে এখানে ব্রিজ হবে তা জানি না। ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে উভয় গ্রামের লোকজনই উপকৃত হবে।

জোলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানায় এত বড় বাঁশের সাঁকো আছে আমার জানা ছিল না ও আমাকে কেউ বলেনি। তবে এখন দুই চেয়ারম্যান এলজিডিতে আবেদন করতে বলবো এবং আমিও চেষ্টা করবো যাতে ওখানে একটা ব্রিজ হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর