সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এক নারী কাউন্সিলরের ওপর হামলা, মারধর, গাড়ি ভাঙচুর ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলীর কার্যালয়ে উন্নয়ন কাজের তদারকির খবর নিতে গেলে এসব ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারী কাউন্সিলর।

আজ দুপুরে রাজধানীর ডিআরইউ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদে সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। ‘সচেতন সিলেটবাসী’র ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগকারী ওই নারী কাউন্সিলরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহিলা যুবলীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আসমা আক্তার। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মঙ্গলবার সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১৯, ২০ ও ২১ নং ওয়ার্ডের মহিলা সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শামীমা স্বাধীন নগরভবনে যান। সোনারপাড়া, গোয়ালিয়া ও দর্জিবন্দ ও শাহ মিরাজী স্কুলের ড্রেন, রাস্তার উন্নয়মূলক কাজের খোঁজ নিতে যান তিনি।

শামীমার অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী নূর আজিজ বসতে বলে বাইরে চলে যান। কখনো খাবারের কথা বলে, কখনো নামাজের কথা বলে সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অপেক্ষায় রাখেন।

এরপর কাউন্সিলর প্রকৌশলীকে বলেন, ‘আমি সকাল থেকে ওয়েট করছি, আপনি কি আমাকে চিনতে পেরেছেন? আমার কাজ আছে, কথা শেষ করে চলে যাবো।’

ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘আরে আপা, বসেন না কেন, আমি আপনাকে ভালোবাসি কিন্তু আপনি আমাকে ভালোবাসেন না।’ এভাবে নানাভাবে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও ইঙ্গিত করতে থাকে।

নারী কাউন্সিলর বলেন, ‘আমি আপনার ভালোবাসার জন্য আসি নাই। আপনি কি আমাকে চিনতে পারেন নাই? নাকি অন্য কিছু ভাবছেন?’

নারী কাউন্সিলরের কথা শুনে স্টুপিড বলে গালি দিয়ে প্রকৌশলী বলেন, ‘আর কখনো আসবেন না।’ এরপর দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

ওই নারী কাউন্সিলর বলেন, ‘প্রকৌশলীর কক্ষ থেকে বের হয়ে মেয়রের কক্ষে যাই। মেয়র বিষয়টি দেখার কথা বলে চলে যেতে বলেন। বাইরে আসার পর আমার ওপর বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে মারধর করে। বিদ্যুৎ শাখার রুহুল আমিন নামে এক কর্মচারী আমাকে টেনে রুমের ভেতরে আটকে রাখেন। কিন্তু সন্ত্রাসীরা দরজা ভেঙে আমাকে মারধর করেন। পরে সাংবাদিক ও পুলিশের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে বাইরে আনা হয়। এসে দেখি আমার গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে।’

সচেতন সিলেটবাসীর সদস্য সচিব কাজী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘প্রকৌশলী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখাকে দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছেন। কোনো উন্নয়নমূলক কাজের তোয়াক্কা করছেন না। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলেই তিনি হয়রানি ও হামলার হুমকি দেন। এ নিয়ে মেয়র ও স্থানীয় পুলিশ সমঝোতার কোনো সহযোগিতা করেনি। প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ওই নারী কাউন্সিলরকে মারধরের ঘটনায় মামলা ও জিডি নেয়নি শাহপরান থানা।’

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী হাওর বার্তাকে বলেন, এর আগে প্যালেল মেয়র-১কে রেখে প্যানেল মেয়র-২কে দায়িত্ব দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এবার নারী কাউন্সিলর শামীমাকে বরখাস্ত করার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এসব কিছুর দায় সিটি কর্পোরেশন এড়াতে পারে না। ওই নারী কাউন্সিলরকে মারধরের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর