ভারত ও রাশিয়ার বীর যোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে সংবর্ধনা প্রধানমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখায় ভারত ও রাশিয়ার বীর যোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে সংবর্ধনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৪৭তম বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে তারা বর্তমানে সপরিবারে বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন।
সোমবার বিকেলে গণভবনের লনে আয়োজিত এ সংবর্ধনায় ভারতের ২৭ জন বীর যোদ্ধা, তাদের পত্নী ও সন্তান এবং রাশিয়ার চারজন বীর যোদ্ধা ও তাদের পত্নীরা যোগ দেন। এ ছাড়া বর্তমানে কর্মরত ভারতের চার সামরিক অফিসার ও কর্মকর্তা এবং রাশিয়ার কর্মরত চার সামরিক অফিসার ও দুই দেশের হ্ইাকমিশন ও দূতাবাসের কর্মকর্তারাও সংবর্ধনায় যোগ দেন।
সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সবসময়ই আপনাদের অবদানের কথা স্মরণ করি। আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। আপনারা এতে সব রকম সহায়তা ও সমর্থন দিয়েছেন। আমাদের স্বাধীনতার জন্য আপনারা লড়াই করেছেন, আমরা কখনো এ কথা ভুলব না।’
আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বাংলাদেশে আসা বীর যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি আপনাদের দেশ এবং যেকোনো সময় এখানে আপনাদের স্বাগত জানাই।’
ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জয় ভগবান সিং যাদব বলেন, ‘বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারা আমাদের জন্য বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। বাংলাদেশে অবস্থানকালে আমরা শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় এ দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর ব্যাপক অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেছি। এই নিরাপত্তা শুধু আপনার দেশের নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার।’
জেনারেল ভগবান ১৯৭১ সালের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আপনারা বর্বরতা ও আতঙ্কের মধ্যে নয় মাস অতিবাহিত করেছেন। কিন্তু মুক্তি ভাইরা সাহসী প্লাটফর্মসহ এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, যাতে আমরা আপনাদের এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দীপনামূলক নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। এটি সম্ভব হয়েছে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শেখ হাসিনার সাহসী ভূমিকার কারণে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব আরো বিকশিত এবং সকল নেতিবাচক ও ধ্বংসাত্মক শক্তি পরাজিত হবে বলে আমরা আশা করছি।’

রুশ প্রতিনিধিদলের নেতা নৌবাহিনীর প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের কমোডর জি এস সালকার স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান বিজয় উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘১৯৭১ সালে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের লড়াইয়ে রাশিয়া আন্তরিকভাবে সমর্থন দিয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের ১২ নম্বর স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বাংলাদেশের সহায়তায় এগিয়ে আসে এবং চট্টগ্রাম বন্দর ও আশপাশের এলাকা মাইন মুক্ত করে।’
আমন্ত্রণ জানানোর জন্য রুশ প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে তিনি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কমোডর সালকার জানান, ভ্লাদিভস্তকে ফিরে গিয়ে তিনি একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনে বাংলাদেশের জনগণের মহান সাফল্য ও অর্জনের কথা তার দেশের জনগণ ও গণমাধ্যমকে অবিহিত করবেন।
জেনারেল ভগবান কিছু বই, ক্রেস্ট এবং বঙ্গবন্ধুর কিছু দুর্লভ ছবি প্রধানমন্ত্রীকে প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং বাংলাদেশে আসার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার ছোট বোনের ছেলে রাদোয়ান মুজিব সিদ্দিক, প্রাক্তন মন্ত্রী এ বি এম তাজুল ইসলাম, মাহজাবিন খালেদ এমপি এবং আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সোবহান গোলাপ।

তথ্যসূত্র : বাসস

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর