ঢাকা ০২:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাখাইনে ফিরেছে ৫ শতাধিক হিন্দু রোহিঙ্গা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩২:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৩২২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাখাইনের সহিংসতা থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়া হিন্দু বাসিন্দারা নিজেদের গৃহে ফিরতে শুরু করেছে। ৫ শতাধিক হিন্দু এ পর্যন্ত নিরাপদে নিজেদের এলাকায় ফিরেছে।

রাখাইনের হিন্দু সম্প্রদায়ের এসব বাসিন্দা রাজ্যটির রাজধানী সিত্তেতে আশ্রয় নিয়েছিল। তারা প্রায় সবাই মংডুতে ফিরে এসেছে। অবশ্য ২১ পরিবারের ৮০ বাসিন্দা এখনো সিত্তের একটি মন্দিরে আশ্রয় নিয়ে আছে। রাখাইন রাজ্য সরকারের অনুরোধে হিন্দুরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে এসেছে।

স্থানীয় হিন্দু নেতা নি ম বলেন, যাদের বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে, তাদের আপাতত মংডু জেলা পরিষদ ভবনে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকার তাদের চাল, তেল, নুডলস এবং লবণ সরবরাহ করছে।

তিনি আরো বলেন, ‘তবে ভয়ে এখনো মানুষ তাদের বসতভিটায় ফিরতে চাইছে না। তারা সরকারের কাছে নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেছে।’

ম্যাগ হ্লা নামের স্থানীয় এক হিন্দু নেতা বলেন, পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় হিন্দুদের ফিরে আসার জন্য রাখাইন সরকারই অনুরোধ জানিয়েছে। স্থানীয় সরকার হিন্দুদের জন্য খাদ্য, আশ্রয় এবং নিরাপত্তাদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

হ্লা বলেন, ‘তবে আপাতত ভয়ে তারা তাদের আসল বাড়িতে ফিরতে চাইছে না। এদের অনেকেই মুসলিমদের প্রতিবেশী। মূল সমস্যা নিরাপত্তা।’

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর নিরাপত্তা অভিযানের পর মংডুতে বসবাসরত হিন্দু রোহিঙ্গাদের অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য রাজধানী সিত্তে চলে যায়। সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে মুসলিম রোহিঙ্গারা।

চলতি বছরের আগস্ট থেকে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৬ লাখ ২৬ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। আগে থেকেই দেশে ছিল আরো ৩ লাখ। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্যরা ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর ব্যাপক সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসে তারা।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দাবি, রাখাইনে অন্যায় কিছু করেনি তারা। অবশ্য জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এছাড়া মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ‘মিয়ানমারে গণহত্যার বিষয় উড়িয়ে দেয়া যায় না’ বলে মন্তব্য করেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

রাখাইনে ফিরেছে ৫ শতাধিক হিন্দু রোহিঙ্গা

আপডেট টাইম : ০৪:৩২:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাখাইনের সহিংসতা থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়া হিন্দু বাসিন্দারা নিজেদের গৃহে ফিরতে শুরু করেছে। ৫ শতাধিক হিন্দু এ পর্যন্ত নিরাপদে নিজেদের এলাকায় ফিরেছে।

রাখাইনের হিন্দু সম্প্রদায়ের এসব বাসিন্দা রাজ্যটির রাজধানী সিত্তেতে আশ্রয় নিয়েছিল। তারা প্রায় সবাই মংডুতে ফিরে এসেছে। অবশ্য ২১ পরিবারের ৮০ বাসিন্দা এখনো সিত্তের একটি মন্দিরে আশ্রয় নিয়ে আছে। রাখাইন রাজ্য সরকারের অনুরোধে হিন্দুরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে এসেছে।

স্থানীয় হিন্দু নেতা নি ম বলেন, যাদের বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে, তাদের আপাতত মংডু জেলা পরিষদ ভবনে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকার তাদের চাল, তেল, নুডলস এবং লবণ সরবরাহ করছে।

তিনি আরো বলেন, ‘তবে ভয়ে এখনো মানুষ তাদের বসতভিটায় ফিরতে চাইছে না। তারা সরকারের কাছে নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেছে।’

ম্যাগ হ্লা নামের স্থানীয় এক হিন্দু নেতা বলেন, পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় হিন্দুদের ফিরে আসার জন্য রাখাইন সরকারই অনুরোধ জানিয়েছে। স্থানীয় সরকার হিন্দুদের জন্য খাদ্য, আশ্রয় এবং নিরাপত্তাদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

হ্লা বলেন, ‘তবে আপাতত ভয়ে তারা তাদের আসল বাড়িতে ফিরতে চাইছে না। এদের অনেকেই মুসলিমদের প্রতিবেশী। মূল সমস্যা নিরাপত্তা।’

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর নিরাপত্তা অভিযানের পর মংডুতে বসবাসরত হিন্দু রোহিঙ্গাদের অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য রাজধানী সিত্তে চলে যায়। সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে মুসলিম রোহিঙ্গারা।

চলতি বছরের আগস্ট থেকে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৬ লাখ ২৬ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। আগে থেকেই দেশে ছিল আরো ৩ লাখ। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্যরা ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর ব্যাপক সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসে তারা।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দাবি, রাখাইনে অন্যায় কিছু করেনি তারা। অবশ্য জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এছাড়া মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ‘মিয়ানমারে গণহত্যার বিষয় উড়িয়ে দেয়া যায় না’ বলে মন্তব্য করেছেন।