” সব কেড়ে নিল এই নদী, আমারে কেন বাকি রাখছিস আমারেও নিয়ে যা” এমনি একটি কথা বলে কেঁদে উঠলেন লক্ষীপুরের মেঘনা পাড়ের বাসিন্দা তারিকুল। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন তারিকুল সর্বনাশা মেঘনার দিকে। এ যেন আকূল আবেদন বিধাতার কাছে তিনি যেন ফিরিয়ে দেন হারানো সম্পদ। কিন্তু তা কি আর হবে যা নিয়ে গেল সর্বনাশা পদ্মা তা কি আর সে ফিরিয়ে দেবে।
সবকিছু হারিয়ে শোকবশত বলে, আজ আমি অন্যের জমিতে ঘর তুলে থাকতে হয়। যেকোন মুহুর্তে এ রাখোষী মেঘনা আবার আমার থাকা এ ঘরটুকু কেড়ে নিতে পারে। এসব কথা বলতে গিয়ে কান্না করতে ক্রতে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
তরিকুলের মত এমন হাজারো তরিকুল রয়েছে যাদের হারাতে হয়েছে শেষ সম্বলটুকু। এইযে এতসব ভাঙ্গা গড়া যায় তবুও স্থবীর হয়না জীবন, চলতেই থাকে চলতেই থাকে নদীর মতন। হ্যাঁ, এই নদীরই একটি রুপ ভাঙ্গন! প্রকৃতির এই ধ্বংসলীলার কবলে যে পড়েছে কেবল সেই বুঝতে পারবে কতটা ভয়াবহ হতে পারে এই নদী ভাঙ্গন। গ্রামের পর গ্রাম বিলীন হয়ে যাচ্ছে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। দরীদ্র গ্রামবাসী ধরে রাখতে পারছেনা নিজের বাপ দাদার ভিটা বাড়ি টুকু। নিজেরই চোখের সামনে রাক্ষুসী নদী কেড়ে নিচ্ছে তার এতদিনের প্রানপ্রিয় ভিটা। যেই উঠোনে সে জমির সোনালী ধান শুকোতো। যেই পুকুরে সাঁতার কেটে বালিকা বধূ পরিনত হয়েছে কুঁজো বুড়িতে! যেই পথে হেঁটে গুটি গুটি পায়ে বাবার সাথে মাছ ধরবার জন্য এগিয়ে চলত গ্রামের কিশোর ছেলে! একদিন যে মাঝি নদীর বুকে মনের সুখে গান গাইতো আজ সেই মাঝির চোখে ঝরে পড়ে নদীর জন্য ঘৃনা!