ঢাকা ০৫:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাল শাপলার মাঝে অতিথি পাখির উঁকি দেখতে কত না মধুর দেখতে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩৭:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৭
  • ৫৭৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিবছর শীতকাল এলেই জলাশয়, বিল, হাওর, পুকুর ভরে যায় নানা রংবেরঙের নাম না জানা পাখিতে আসে। আদর করে আমরা সেগুলোকে বলি অতিথি পাখি বলে থাকি। নাম অতিথি হলেও এই পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে হাজির হয় নিজেদের জীবন বাঁচাতে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো অতিথি পাখি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শীত আর অতিথি পাখি যেন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।

প্রতি বছরের মতো এবারের শীতেও অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে আছে গোটা ক্যাম্পাস। দিনজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে অতিথি পাখির বিচরণ এক অপরূপ সৌন্দর্যের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। উপযুক্ত পরিবেশ আর নিরাপদ আশ্রয়ে এসব অতিথি পাখি এখানে নির্ভাবনায় মেতে উঠেছে কলকাকলি ও জলকেলিতে। কেউ কোনো কোনো পাখি আবার ডুব সাঁতারে ব্যস্ত। তাদের এ কার্যকলাপ দেখতে এবং ক্যামেরাবন্দি করতে ক্যাম্পাসের অধিবাসীরা ছাড়াও প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা। এই অতিথি পাখি দেখতেই দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। আসছেন বিদেশি দর্শনার্থীরাও। অতিথি পাখি দেখতে আসা এসব মানুষের আপ্যায়নের জন্য ক্যাম্পাসের মোড়ে মোড়ে এবং ট্রান্সপোর্ট এলাকায় ‘খালা-মামা’রা নানারকম পিঠার দোকান খুলে বসেছে। আর দুপুরে খাবার জন্য নানারকমের ভর্তায় ভরপুর বটতলাতো রয়েছেই।

Image result for অথিতি পাখির ছবি

এসব অতিথি পাখির কলকাকলি আর কিচিরমিচির শব্দে ক্যাম্পাসে মধুময় সুরের আবহ বিরাজ করছে। এখন ক্যাম্পাসবাসীর ঘুম ভাঙে অতিথি পাখির কলকাকলিতে। আবার সারাদিন কর্মব্যস্ততা শেষে অতিথি পাখির মধুময় সুরে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। তবে অতিথি পাখি আসলেও ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে লাল শাপলার অস্তিত্ব প্রায় বিলীন হয়ে পড়েছে। লাল শাপলার মাঝে অতিথি পাখির উঁকি দেখতে কত না মধুর ছিল। কিন্তু প্রশাসনের অবহেলায় বিলীন হতে যাচ্ছে লাল শাপলা। প্রতি বছর উত্তরের শীতপ্রধান দেশ সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, সিনচিয়াং ও ভারত থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখি দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশে আসা পাখিদের ৮-৯ শতাংশ এই ক্যাম্পাসে আসে। মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই এরা এ দেশে আসতে শুরু করে। মার্চের শেষ দিকে তারা আপন ঠিকানায় ফিরে যায়। বাংলাদেশের মানুষ শখ করে যাযাবর এসব পাখিকে ডাকে গেস্ট বার্ড/মাইগ্রেটরি বার্ড বা অতিথি পাখি বলে। অসম্ভব বন্ধুসুলভ এ পাখিগুলোর অনেকটাই আমাদের দেশি হাঁস প্রজাতির। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে প্রায় ৫০ প্রজাতির অসংখ্য পাখির আগমন ঘটেছে। এদের বেশিরভাগই হাঁস জাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনী, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক ও পাতারি অন্যতম। এছাড়া মানিক জোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি প্রভৃতি পাখি এদেশে অতিথি হয়ে আসে প্রতি বছর। অবিরাম তুষারপাতে এবং তীব্র শীতের কারণে ওইসব অঞ্চলে বসবাসরত পাখিরা হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে। এখানে ছোট-বড় প্রায় ২২টি লেক থাকলেও পাখিরা ক্যাম্পাসের হাতেগোনা মাত্র দুতিনটি লেকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তাদের আবাসস্থান হিসেবে গড়ে তোলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, প্রীতিলতা হল ও জাহানারা ইমাম হল সংলগ্ন লেকগুলোয় আবাস গড়ে শীতের অতিথিরা। এবারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশের লেকটিতে অতিথি পাখির সংখ্যা বেশি। ক্যাম্পাসজুড়ে পাখিদের সারাদিন অবিরাম উড়ে বেড়ানো, লেকের পানিতে খুনসুটি এবং অবিরত ডুব-সাঁতার পাখিপ্রেমীদের আরো পুলকিত করে। অতিথি পাখি দেখতে দেখতে কখন যে দিন পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে পাখিপ্রেমিকরা বুঝতেই পারেন না। এছাড়া পাখিদের এক সঙ্গে ওড়া দেখতে অনেক সময় আগতদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

Image result for অথিতি পাখির ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের গবেষণা তথ্যমতে, জাবির লেকগুলোতে ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম অতিথি পাখি আসে। তখন ক্যাম্পাসে ৯৮ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে। সাধারণ দুই ধরনের পাখির আগমন ঘটে এ ক্যাম্পাসে। এক ধরনের পাখি ডাঙ্গায় বা শুকনো স্থানে বা ডালে বসে বিশ্রাম নেয়। আরেক ধরনের পাখি পানিতে থাকে ও বিশ্রাম নেয়। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয়। বর্তমানে জাবির এই আঙিনায় সরাল, পিচার্ড, গার্গেনি, মুরগ্যাধি, মানিকজোড়, কলাই, নাকতা, জলপিপি, ফ্লাইপেচার, কোম্বডাক, পাতারি, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটিসহ সর্বমোট ১৯৫ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এর মধ্যে ১২৬টি দেশীয় প্রজাতির এবং ৬৯টি বিদেশি। প্রতি বারের মত এবারও পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জানুয়ারী মাসের প্রথম অথবা ২য় সপ্তাহে পাখি মেলার আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে পাখির বসবাসের উপযোগীর জন্য ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। অতিথি পাখি আসা শুরু করলেও এদের নিরাপত্তার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, যে লেকগুলো কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল সেসবের বেশিরভাগই ছিড়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত মেরামত হয়নি। এ কারণে অনেক দর্শনার্থী লেকের কাছে গিয়ে পাখিকে বিরক্ত করেন, ভয় দেখান। পাখি যেনো বিরক্ত না হয় বা উড়ে চলে না যায় সে জন্য লেকগুলোর পাশে হর্ন বাজানো, কোনো ধরনের বাঁশি বাজানো, উচ্চ শব্দ করা, মিছিল করাসহ ইত্যাদি বিষয়ে সতর্কীকরণ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দিতে দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসকে পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। পাখিদের নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। অতিথি পাখির আগমন বৃদ্ধির জন্য লেকগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের চারপাশে কাটা তাঁরের বেড়া এবং দর্শনার্থীদের বসার জন্য সুব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও অতিথি পাখিদের আগমন উপলক্ষে প্রতিবছর আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী ‘পাখি মেলা’।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

লাল শাপলার মাঝে অতিথি পাখির উঁকি দেখতে কত না মধুর দেখতে

আপডেট টাইম : ০৪:৩৭:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতিবছর শীতকাল এলেই জলাশয়, বিল, হাওর, পুকুর ভরে যায় নানা রংবেরঙের নাম না জানা পাখিতে আসে। আদর করে আমরা সেগুলোকে বলি অতিথি পাখি বলে থাকি। নাম অতিথি হলেও এই পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে হাজির হয় নিজেদের জীবন বাঁচাতে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো অতিথি পাখি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শীত আর অতিথি পাখি যেন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।

প্রতি বছরের মতো এবারের শীতেও অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে আছে গোটা ক্যাম্পাস। দিনজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে অতিথি পাখির বিচরণ এক অপরূপ সৌন্দর্যের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। উপযুক্ত পরিবেশ আর নিরাপদ আশ্রয়ে এসব অতিথি পাখি এখানে নির্ভাবনায় মেতে উঠেছে কলকাকলি ও জলকেলিতে। কেউ কোনো কোনো পাখি আবার ডুব সাঁতারে ব্যস্ত। তাদের এ কার্যকলাপ দেখতে এবং ক্যামেরাবন্দি করতে ক্যাম্পাসের অধিবাসীরা ছাড়াও প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা। এই অতিথি পাখি দেখতেই দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। আসছেন বিদেশি দর্শনার্থীরাও। অতিথি পাখি দেখতে আসা এসব মানুষের আপ্যায়নের জন্য ক্যাম্পাসের মোড়ে মোড়ে এবং ট্রান্সপোর্ট এলাকায় ‘খালা-মামা’রা নানারকম পিঠার দোকান খুলে বসেছে। আর দুপুরে খাবার জন্য নানারকমের ভর্তায় ভরপুর বটতলাতো রয়েছেই।

Image result for অথিতি পাখির ছবি

এসব অতিথি পাখির কলকাকলি আর কিচিরমিচির শব্দে ক্যাম্পাসে মধুময় সুরের আবহ বিরাজ করছে। এখন ক্যাম্পাসবাসীর ঘুম ভাঙে অতিথি পাখির কলকাকলিতে। আবার সারাদিন কর্মব্যস্ততা শেষে অতিথি পাখির মধুময় সুরে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। তবে অতিথি পাখি আসলেও ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে লাল শাপলার অস্তিত্ব প্রায় বিলীন হয়ে পড়েছে। লাল শাপলার মাঝে অতিথি পাখির উঁকি দেখতে কত না মধুর ছিল। কিন্তু প্রশাসনের অবহেলায় বিলীন হতে যাচ্ছে লাল শাপলা। প্রতি বছর উত্তরের শীতপ্রধান দেশ সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, সিনচিয়াং ও ভারত থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখি দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশে আসা পাখিদের ৮-৯ শতাংশ এই ক্যাম্পাসে আসে। মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই এরা এ দেশে আসতে শুরু করে। মার্চের শেষ দিকে তারা আপন ঠিকানায় ফিরে যায়। বাংলাদেশের মানুষ শখ করে যাযাবর এসব পাখিকে ডাকে গেস্ট বার্ড/মাইগ্রেটরি বার্ড বা অতিথি পাখি বলে। অসম্ভব বন্ধুসুলভ এ পাখিগুলোর অনেকটাই আমাদের দেশি হাঁস প্রজাতির। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে প্রায় ৫০ প্রজাতির অসংখ্য পাখির আগমন ঘটেছে। এদের বেশিরভাগই হাঁস জাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনী, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক ও পাতারি অন্যতম। এছাড়া মানিক জোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি প্রভৃতি পাখি এদেশে অতিথি হয়ে আসে প্রতি বছর। অবিরাম তুষারপাতে এবং তীব্র শীতের কারণে ওইসব অঞ্চলে বসবাসরত পাখিরা হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে। এখানে ছোট-বড় প্রায় ২২টি লেক থাকলেও পাখিরা ক্যাম্পাসের হাতেগোনা মাত্র দুতিনটি লেকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তাদের আবাসস্থান হিসেবে গড়ে তোলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, প্রীতিলতা হল ও জাহানারা ইমাম হল সংলগ্ন লেকগুলোয় আবাস গড়ে শীতের অতিথিরা। এবারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশের লেকটিতে অতিথি পাখির সংখ্যা বেশি। ক্যাম্পাসজুড়ে পাখিদের সারাদিন অবিরাম উড়ে বেড়ানো, লেকের পানিতে খুনসুটি এবং অবিরত ডুব-সাঁতার পাখিপ্রেমীদের আরো পুলকিত করে। অতিথি পাখি দেখতে দেখতে কখন যে দিন পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে পাখিপ্রেমিকরা বুঝতেই পারেন না। এছাড়া পাখিদের এক সঙ্গে ওড়া দেখতে অনেক সময় আগতদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

Image result for অথিতি পাখির ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের গবেষণা তথ্যমতে, জাবির লেকগুলোতে ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম অতিথি পাখি আসে। তখন ক্যাম্পাসে ৯৮ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে। সাধারণ দুই ধরনের পাখির আগমন ঘটে এ ক্যাম্পাসে। এক ধরনের পাখি ডাঙ্গায় বা শুকনো স্থানে বা ডালে বসে বিশ্রাম নেয়। আরেক ধরনের পাখি পানিতে থাকে ও বিশ্রাম নেয়। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয়। বর্তমানে জাবির এই আঙিনায় সরাল, পিচার্ড, গার্গেনি, মুরগ্যাধি, মানিকজোড়, কলাই, নাকতা, জলপিপি, ফ্লাইপেচার, কোম্বডাক, পাতারি, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটিসহ সর্বমোট ১৯৫ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এর মধ্যে ১২৬টি দেশীয় প্রজাতির এবং ৬৯টি বিদেশি। প্রতি বারের মত এবারও পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জানুয়ারী মাসের প্রথম অথবা ২য় সপ্তাহে পাখি মেলার আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে পাখির বসবাসের উপযোগীর জন্য ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। অতিথি পাখি আসা শুরু করলেও এদের নিরাপত্তার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, যে লেকগুলো কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল সেসবের বেশিরভাগই ছিড়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত মেরামত হয়নি। এ কারণে অনেক দর্শনার্থী লেকের কাছে গিয়ে পাখিকে বিরক্ত করেন, ভয় দেখান। পাখি যেনো বিরক্ত না হয় বা উড়ে চলে না যায় সে জন্য লেকগুলোর পাশে হর্ন বাজানো, কোনো ধরনের বাঁশি বাজানো, উচ্চ শব্দ করা, মিছিল করাসহ ইত্যাদি বিষয়ে সতর্কীকরণ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দিতে দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসকে পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। পাখিদের নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। অতিথি পাখির আগমন বৃদ্ধির জন্য লেকগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের চারপাশে কাটা তাঁরের বেড়া এবং দর্শনার্থীদের বসার জন্য সুব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও অতিথি পাখিদের আগমন উপলক্ষে প্রতিবছর আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী ‘পাখি মেলা’।