ঢাকা ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
উপজেলা পর্যায়ে সরকারি বিদ্যমান সেবা বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত মদনে প্রাণিসম্পদের উদ্যোগে মোরগ ও ছাগলের খাদ্য বিতরণ ইটনায় সরকারি বিদ্যমান সেবা বিষয়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত মদনে সংবাদ প্রকাশের পর স্কুল কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙ্গল বিদ্যালয় প্রাঙ্গন দখল করে ঘর নির্মাণ করছেন শিক্ষক রাজধানীতে পার্বত্য জেলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যসমৃদ্ধ বিপনী বিতান উদ্বোধন করেন: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে মদন উপজেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি সায়েম সাধারণ সম্পাদক আরিফ মদনে ফের বয়রাহালা ব্রীজের এপ্রোচ দখল করে ঘর নির্মাণ মদনে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কৃষককে হত্যার চেষ্টা

জাতীয় পার্টি আ’লীগের ৮ প্রার্থী মাঠে স্বস্তিতে আসনে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৩:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৬৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জেলার সদর উপজেলা নিয়ে গাইবান্ধা-২ আসন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। জেলা সদর হওয়ায় আসনটি গুরুত্বপূর্ণ। সংসদীয় এলাকার মোড়ে মোড়ে প্রার্থীদের সচিত্র পোস্টার-ব্যানার শোভা পাচ্ছে। নানা সামাজিক অনুষ্ঠানেও তাদের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে বেড়েছে। ফেসবুকেও সরব রয়েছেন অনেকে। আসনটিতে জাতীয় পার্টির শক্ত অবস্থান থাকলেও গত তিন দফায় এ আসনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। গত দুই দফায় জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা গিনি এমপি হন। আগামী নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী।

এর আগে একানব্বই এবং ছিয়ানব্বইয়ের নির্বাচনে এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং জেলা সভাপতি আবদুর রশিদ এমপি নির্বাচিত হন। এলাকার প্রভাবশালী এ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পেলেও মহাজোটের কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে সরে দাঁড়ান।

পরের দফায় ২০১৪ সালের নির্বাচনে আবদুর রশিদ মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরও দলীয় চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।

আগামী নির্বাচনে তিনি দলে একমাত্র প্রার্থী। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এ আসনে ভোটারদের চিন্তাভাবনাও কিছুটা আলাদা। নব্বই-পূর্ববর্তী দলের যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় ভোটাররা দুইবার স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বিজয়ী করেছেন।

এ আসনে বিএনপি প্রার্থী কোনো সময়ই বিজয়ী হননি। তার ওপর মামলা-হামলায় কাহিল এ রাজনৈতিক দলের একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে এ আসনে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মো. লুৎফর রহমান বিজয়ী হন। ১৯৭৯ সালেও তিনি দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন।

১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফ মিয়া, ১৯৮৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) আজগার আলী খান এমপি হন। নব্বইয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জাতীয় পার্টির দখলে চলে যায় আসনটি।

১৯৯১ ও ’৯৬ সালে পরপর দু’বার এ আসনে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির নেতা আবদুর রশিদ সরকার। পরে ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের মো. লুৎফর রহমান। ২০০৮ ও ২০১৪ মহাজোটের অধীনে নির্বাচন হলে এ আসনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের মাহাবুব আরা গিনি। পরে তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনেও আসনটি ধরে রাখতে চায়। শাসক দলের প্রার্থী হিসেবে মাহাবুব আরা বেগম গিনি এগিয়ে রয়েছেন।

বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব গিনি বর্তমানে জাতীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি।

পরপর দু’বার তিনি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। গাইবান্ধার টিটিসি, নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার, টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট স্থাপনে তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সড়ক উন্নয়ন ও সেতু-কালভার্ট নির্মাণের মাধ্যমে তিনি জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন।

তিনি গাইবান্ধা স্টেডিয়ামের অবকাঠামোগত পরিবর্তন এনে সেটিকে আধুনিকায়ন করেছেন।

আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে মাহাবুব আরা গিনি হাওর বার্তাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দিলে আসনটি তাকে উপহার দিতে পারব, সে বিশ্বাস আমার রয়েছে। গাইবান্ধার ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী, যিনি সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

এ আসনে আওয়ামী লীগের অন্য মনোনয়ন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামসুল আলম হিরু, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সহসভাপতি ফরহাদ আবদুল্লাহ হারুন বাবলু, যুগ্ম সম্পাদক মোজাম্মেল হক মণ্ডল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঘাগোয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর জামান রিংকু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জেলা কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশের প্রথম স্পিকার শাহ আবদুল হামিদের নাতি শাহ সারোয়ার কবীর ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মানিক ঘোষ।

জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামসুল আলম হিরু ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

তিনি মহকুমা ছাত্রলীগেরও সভাপতি ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়া সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবেও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি অতিপরিচিত। আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গেও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

জানতে চাইলে আবু বকর সিদ্দিক বলেন, দীর্ঘদিনের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হলে এলাকার উন্নয়নে আরও বেশি অবদান রাখতে পারব। একই সঙ্গে দলের অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও এলাকার উন্নয়নের অঙ্গীকার করছেন নির্বাচনী মাঠে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ আসনে তাদের একমাত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক এমপি আবদুর রশিদ। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, প্রার্থী হিসেবে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল রশিদের বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে মোকাবেলা করার জন্য তিনিই জাতীয় পার্টির একমাত্র যোগ্য প্রার্থী।

দলে তার বিকল্প নেই। জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনে আসনটি অন্য কাউকে আর ছাড় দেয়া হবে না। কথা হয় আবদুর রশিদের সঙ্গে। তিনি হাওর বার্তাকে বলেন, আর ছাড় নয়। আসনটি এবার পুনরুদ্ধার করতে চাই। এরশাদভক্ত এ আসনের জনগণও আসনটি জাতীয় পার্টিকে উপহার দেবে বলে আমি মনে করি।

এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করছেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে। জেল-জুলুম আর হামলা-মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা আশায় বুক বেঁধেছেন। আগামী নির্বাচনে দলের অংশগ্রহণের প্রত্যাশায় নেতাকর্মীরা আন্দোলনের পাশাপাশি ঘর গোছানের কাজেও ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় গ্রাম সরকারবিষয়ক সম্পাদক আনিস্জ্জুামান খান বাবু, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল সভাপতি মাহামুদুন্নবী টিটুল ও জিয়া পরিষদের জেলা সদস্য সচিব খন্দকার আহাদ আহমেদ।

এর মধ্যে আনিসুজ্জামান খান বাবু একটানা ৯ বছর জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা হয় আনিসুজ্জামান খান বাবুর সঙ্গে। তিনি হাওর বার্তাকে বলেন, দীর্ঘ সময় নেতৃত্বে থেকে দল এবং জনগণের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছি। বিএনপির আদর্শ ও লক্ষ্যকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে পেরেছি। ভোটারদের ভালোবাসা রয়েছে আমার সঙ্গে। আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে এ আসনটি দলের চেয়ারপারসনকে উপহার দিতে পারব বলে আশাবাদী।

খন্দকার আহাদ আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে সামরিক সরকারবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি জানান, দল নির্বাচনে অংশ নিলে তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী টিটুল বলেন, দল নির্বাচনে অংশ নিলে দলীয় চেয়ারপারসন যাকে মনোনয়ন দেবেন, তার সঙ্গেই নেতাকর্মীরা কাজ করবেন। তিনিও মনোনয়নপ্রত্যাশী।

এদিকে জাসদের মনোনয়নপ্রাত্যাশীদের তালিকায় জেলা সভাপতি শাহ শরিফুল ইসলাম বাবলু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মারুফ মনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু এবং সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা সভাপতি মিহির ঘোষ এবং বাসদের (মার্কসবাদী) মঞ্জুরুল আলম মিঠুর নাম শোনা যাচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

উপজেলা পর্যায়ে সরকারি বিদ্যমান সেবা বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত

জাতীয় পার্টি আ’লীগের ৮ প্রার্থী মাঠে স্বস্তিতে আসনে

আপডেট টাইম : ১১:২৩:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জেলার সদর উপজেলা নিয়ে গাইবান্ধা-২ আসন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। জেলা সদর হওয়ায় আসনটি গুরুত্বপূর্ণ। সংসদীয় এলাকার মোড়ে মোড়ে প্রার্থীদের সচিত্র পোস্টার-ব্যানার শোভা পাচ্ছে। নানা সামাজিক অনুষ্ঠানেও তাদের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে বেড়েছে। ফেসবুকেও সরব রয়েছেন অনেকে। আসনটিতে জাতীয় পার্টির শক্ত অবস্থান থাকলেও গত তিন দফায় এ আসনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। গত দুই দফায় জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা গিনি এমপি হন। আগামী নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী।

এর আগে একানব্বই এবং ছিয়ানব্বইয়ের নির্বাচনে এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং জেলা সভাপতি আবদুর রশিদ এমপি নির্বাচিত হন। এলাকার প্রভাবশালী এ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পেলেও মহাজোটের কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে সরে দাঁড়ান।

পরের দফায় ২০১৪ সালের নির্বাচনে আবদুর রশিদ মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরও দলীয় চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।

আগামী নির্বাচনে তিনি দলে একমাত্র প্রার্থী। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এ আসনে ভোটারদের চিন্তাভাবনাও কিছুটা আলাদা। নব্বই-পূর্ববর্তী দলের যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় ভোটাররা দুইবার স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বিজয়ী করেছেন।

এ আসনে বিএনপি প্রার্থী কোনো সময়ই বিজয়ী হননি। তার ওপর মামলা-হামলায় কাহিল এ রাজনৈতিক দলের একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে এ আসনে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মো. লুৎফর রহমান বিজয়ী হন। ১৯৭৯ সালেও তিনি দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন।

১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফ মিয়া, ১৯৮৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) আজগার আলী খান এমপি হন। নব্বইয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জাতীয় পার্টির দখলে চলে যায় আসনটি।

১৯৯১ ও ’৯৬ সালে পরপর দু’বার এ আসনে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির নেতা আবদুর রশিদ সরকার। পরে ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের মো. লুৎফর রহমান। ২০০৮ ও ২০১৪ মহাজোটের অধীনে নির্বাচন হলে এ আসনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের মাহাবুব আরা গিনি। পরে তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনেও আসনটি ধরে রাখতে চায়। শাসক দলের প্রার্থী হিসেবে মাহাবুব আরা বেগম গিনি এগিয়ে রয়েছেন।

বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব গিনি বর্তমানে জাতীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি।

পরপর দু’বার তিনি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। গাইবান্ধার টিটিসি, নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার, টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট স্থাপনে তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সড়ক উন্নয়ন ও সেতু-কালভার্ট নির্মাণের মাধ্যমে তিনি জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন।

তিনি গাইবান্ধা স্টেডিয়ামের অবকাঠামোগত পরিবর্তন এনে সেটিকে আধুনিকায়ন করেছেন।

আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে মাহাবুব আরা গিনি হাওর বার্তাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দিলে আসনটি তাকে উপহার দিতে পারব, সে বিশ্বাস আমার রয়েছে। গাইবান্ধার ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী, যিনি সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

এ আসনে আওয়ামী লীগের অন্য মনোনয়ন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামসুল আলম হিরু, সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, সহসভাপতি ফরহাদ আবদুল্লাহ হারুন বাবলু, যুগ্ম সম্পাদক মোজাম্মেল হক মণ্ডল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঘাগোয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর জামান রিংকু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জেলা কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশের প্রথম স্পিকার শাহ আবদুল হামিদের নাতি শাহ সারোয়ার কবীর ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মানিক ঘোষ।

জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামসুল আলম হিরু ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

তিনি মহকুমা ছাত্রলীগেরও সভাপতি ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়া সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবেও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি অতিপরিচিত। আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গেও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

জানতে চাইলে আবু বকর সিদ্দিক বলেন, দীর্ঘদিনের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হলে এলাকার উন্নয়নে আরও বেশি অবদান রাখতে পারব। একই সঙ্গে দলের অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও এলাকার উন্নয়নের অঙ্গীকার করছেন নির্বাচনী মাঠে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ আসনে তাদের একমাত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক এমপি আবদুর রশিদ। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, প্রার্থী হিসেবে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল রশিদের বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে মোকাবেলা করার জন্য তিনিই জাতীয় পার্টির একমাত্র যোগ্য প্রার্থী।

দলে তার বিকল্প নেই। জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনে আসনটি অন্য কাউকে আর ছাড় দেয়া হবে না। কথা হয় আবদুর রশিদের সঙ্গে। তিনি হাওর বার্তাকে বলেন, আর ছাড় নয়। আসনটি এবার পুনরুদ্ধার করতে চাই। এরশাদভক্ত এ আসনের জনগণও আসনটি জাতীয় পার্টিকে উপহার দেবে বলে আমি মনে করি।

এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করছেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে। জেল-জুলুম আর হামলা-মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা আশায় বুক বেঁধেছেন। আগামী নির্বাচনে দলের অংশগ্রহণের প্রত্যাশায় নেতাকর্মীরা আন্দোলনের পাশাপাশি ঘর গোছানের কাজেও ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় গ্রাম সরকারবিষয়ক সম্পাদক আনিস্জ্জুামান খান বাবু, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল সভাপতি মাহামুদুন্নবী টিটুল ও জিয়া পরিষদের জেলা সদস্য সচিব খন্দকার আহাদ আহমেদ।

এর মধ্যে আনিসুজ্জামান খান বাবু একটানা ৯ বছর জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা হয় আনিসুজ্জামান খান বাবুর সঙ্গে। তিনি হাওর বার্তাকে বলেন, দীর্ঘ সময় নেতৃত্বে থেকে দল এবং জনগণের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছি। বিএনপির আদর্শ ও লক্ষ্যকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে পেরেছি। ভোটারদের ভালোবাসা রয়েছে আমার সঙ্গে। আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে এ আসনটি দলের চেয়ারপারসনকে উপহার দিতে পারব বলে আশাবাদী।

খন্দকার আহাদ আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে সামরিক সরকারবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি জানান, দল নির্বাচনে অংশ নিলে তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী টিটুল বলেন, দল নির্বাচনে অংশ নিলে দলীয় চেয়ারপারসন যাকে মনোনয়ন দেবেন, তার সঙ্গেই নেতাকর্মীরা কাজ করবেন। তিনিও মনোনয়নপ্রত্যাশী।

এদিকে জাসদের মনোনয়নপ্রাত্যাশীদের তালিকায় জেলা সভাপতি শাহ শরিফুল ইসলাম বাবলু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মারুফ মনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু এবং সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা সভাপতি মিহির ঘোষ এবং বাসদের (মার্কসবাদী) মঞ্জুরুল আলম মিঠুর নাম শোনা যাচ্ছে।