ঢাকা ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হীরকরাজা দাউদ ইব্রাহিম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:২২:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৫
  • ৩৪২ বার

পাকিস্তানের দাউদ ইব্রাহিম কাসকর এখন হীরকরাজ। দুবাইয়ে আল নুর ডায়মন্ডস নামে একটি কোম্পানি খুলে বসেছেন তিনি। আর সেখানেই বিক্রি হচ্ছে আফ্রিকার কুখ্যাত ব্লাড ডায়মন্ড। ভারতীয় গোয়েন্দা রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। মাস খানেক আগে গোয়েন্দারা ভারতকে জানায়, দাউদকে বাগে আনতে গেলে আগে দাউদের ব্যবসাগুলিকে শেষ করতে হবে। এর আগে পর্যন্ত সকলেই জানত, দাউদের প্রধান ব্যবসা বেটিং, হাওয়ালা এবং রিয়েল এস্টেটের। এ ছাড়াও আরও কিছু অবৈধ ব্যবসাও রয়েছে তার। পরে গোয়েন্দাদের রিপোর্টে ধরা পড়ে দাউদের একটি হিরে বিক্রির সংস্থাও রয়েছে। যদিও সেটা বেনামে। সেই সংস্থার ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়েই আফ্রিকার ব্লাড ডায়মন্ডের খবর জানা যায়।

যারা ‘ব্লাড ডায়মন্ড’ ছবিটি দেখেছেন, তাদের আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়বে না, যে এই ব্যবসা কি ভাবে হয়। আফ্রিকার কঙ্গো, সিয়েরা লিওনে, অ্যাঙ্গোলা প্রভৃতি দেশের বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বেশ কিছু অবৈধ হিরের খনি চালায়। সেখান থেকে তোলা হিরে না কেটে, না পালিশ করে পাচার করা হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সেখান থেকে যে টাকা আসে তা এই সংগঠনগুলি অস্ত্র কেনার কাজে ব্যবহার করে। প্রতি বছর এই হিরে বিক্রির টাকায় কেনা বুলেটে, বোমায় কয়েক লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান।

জিম্বাবোয়ে, কেনিয়া এবং আফ্রিকার আরও কয়েকটি দেশে দাউদের ভালো লিঙ্ক রয়েছে। তেমনই এক লিঙ্ক ম্যান হল রহমত। এই রহমত-ই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের হিরে পাচারের কাছে ব্যবহার করে। রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, হিরে একবার হাতে চলে এলে, স্থানীয়দের ব্যবহার করে তা পাচার করার জন্য। আফ্রিকা থেকে দুবাইয়ের প্রতি ট্রিপে এমনভাবেই ৫ থেকে ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার মূল্যের হিরে পাচার করা হয়। এর জন্য প্রত্যেক বাহককে ১০ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়া হয়।

এই হিরে দুবাইয়ে ফিরোজ ওয়াসিস-এর কাছে চলে যায়। এই ফিরোজ দাউদের আরও বেশ কিছু কোম্পানি চালানোর দায়িত্বে রয়েছে। সে একজন দক্ষিণ ভারতীয়। তামিল, আরবি, ইংরেজি এবং হিন্দিতে সে অনর্গল কথা বলতে পারে। সে-ই এই হিরেগুলিকে কাটানো এবং পালিশের জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। বিশ্বের প্রতি ১১টি হিরের মধ্যে ১০টি হিরেই ভারতে কাটা এবং পালিশ করা হয়। গোয়েন্দাদের ধারণা, দাউদের ‘ব্লাড ডায়মন্ড’ও ভারতেই প্রসেস করা হয়। তারা এখন সেই লিঙ্কম্যানকে খোঁজার চেষ্টা করছেন।

এই বিরাট মাপের ব্যবসায় যদি ঘা পড়ে, তবে আর্থিক দিক থেকে দাইদ একটা বড় ধাক্কা খাবে। এখনও পর্যন্ত দাউদের মাত্র অর্ধেক সম্পত্তিরই হদিশ মিলেছে। তারা এ ব্যাপারে আরও খোঁজ করছেন। দাউদের সমস্ত বড় ব্যবসাগুলিকে একবার বাগে আনতে পারলে দাউদও মুঠোয় চলে আসবে বলেই মনে করছেন তারা।-এই সময়

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হীরকরাজা দাউদ ইব্রাহিম

আপডেট টাইম : ০৯:২২:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৫

পাকিস্তানের দাউদ ইব্রাহিম কাসকর এখন হীরকরাজ। দুবাইয়ে আল নুর ডায়মন্ডস নামে একটি কোম্পানি খুলে বসেছেন তিনি। আর সেখানেই বিক্রি হচ্ছে আফ্রিকার কুখ্যাত ব্লাড ডায়মন্ড। ভারতীয় গোয়েন্দা রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। মাস খানেক আগে গোয়েন্দারা ভারতকে জানায়, দাউদকে বাগে আনতে গেলে আগে দাউদের ব্যবসাগুলিকে শেষ করতে হবে। এর আগে পর্যন্ত সকলেই জানত, দাউদের প্রধান ব্যবসা বেটিং, হাওয়ালা এবং রিয়েল এস্টেটের। এ ছাড়াও আরও কিছু অবৈধ ব্যবসাও রয়েছে তার। পরে গোয়েন্দাদের রিপোর্টে ধরা পড়ে দাউদের একটি হিরে বিক্রির সংস্থাও রয়েছে। যদিও সেটা বেনামে। সেই সংস্থার ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়েই আফ্রিকার ব্লাড ডায়মন্ডের খবর জানা যায়।

যারা ‘ব্লাড ডায়মন্ড’ ছবিটি দেখেছেন, তাদের আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়বে না, যে এই ব্যবসা কি ভাবে হয়। আফ্রিকার কঙ্গো, সিয়েরা লিওনে, অ্যাঙ্গোলা প্রভৃতি দেশের বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বেশ কিছু অবৈধ হিরের খনি চালায়। সেখান থেকে তোলা হিরে না কেটে, না পালিশ করে পাচার করা হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সেখান থেকে যে টাকা আসে তা এই সংগঠনগুলি অস্ত্র কেনার কাজে ব্যবহার করে। প্রতি বছর এই হিরে বিক্রির টাকায় কেনা বুলেটে, বোমায় কয়েক লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান।

জিম্বাবোয়ে, কেনিয়া এবং আফ্রিকার আরও কয়েকটি দেশে দাউদের ভালো লিঙ্ক রয়েছে। তেমনই এক লিঙ্ক ম্যান হল রহমত। এই রহমত-ই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের হিরে পাচারের কাছে ব্যবহার করে। রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, হিরে একবার হাতে চলে এলে, স্থানীয়দের ব্যবহার করে তা পাচার করার জন্য। আফ্রিকা থেকে দুবাইয়ের প্রতি ট্রিপে এমনভাবেই ৫ থেকে ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার মূল্যের হিরে পাচার করা হয়। এর জন্য প্রত্যেক বাহককে ১০ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়া হয়।

এই হিরে দুবাইয়ে ফিরোজ ওয়াসিস-এর কাছে চলে যায়। এই ফিরোজ দাউদের আরও বেশ কিছু কোম্পানি চালানোর দায়িত্বে রয়েছে। সে একজন দক্ষিণ ভারতীয়। তামিল, আরবি, ইংরেজি এবং হিন্দিতে সে অনর্গল কথা বলতে পারে। সে-ই এই হিরেগুলিকে কাটানো এবং পালিশের জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। বিশ্বের প্রতি ১১টি হিরের মধ্যে ১০টি হিরেই ভারতে কাটা এবং পালিশ করা হয়। গোয়েন্দাদের ধারণা, দাউদের ‘ব্লাড ডায়মন্ড’ও ভারতেই প্রসেস করা হয়। তারা এখন সেই লিঙ্কম্যানকে খোঁজার চেষ্টা করছেন।

এই বিরাট মাপের ব্যবসায় যদি ঘা পড়ে, তবে আর্থিক দিক থেকে দাইদ একটা বড় ধাক্কা খাবে। এখনও পর্যন্ত দাউদের মাত্র অর্ধেক সম্পত্তিরই হদিশ মিলেছে। তারা এ ব্যাপারে আরও খোঁজ করছেন। দাউদের সমস্ত বড় ব্যবসাগুলিকে একবার বাগে আনতে পারলে দাউদও মুঠোয় চলে আসবে বলেই মনে করছেন তারা।-এই সময়