ঢাকা ১২:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপি ১৮ জেলার নতুন কমিটি চূড়ান্ত করেছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৯:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৩২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফের সাংগঠনিক পুনর্গঠনে মনোযোগ দিচ্ছে বিএনপি। ১৮ জেলা শাখার নতুন কমিটি চূড়ান্ত করেছে দলটি। মতামত ও পরামর্শের জন্য কমিটিগুলো চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার টেবিলে উত্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। চেয়ারপারসনের মতামত ও অনুমোদন পেলে শিগগিরই পর্যায়ক্রমে কমিটিগুলো প্রকাশ করা হবে। আগামী সংসদ নির্বাচন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে সম্ভাব্য আন্দোলনকে বিবেচনায় রেখে চলমান পুনর্গঠন প্রক্রিয়াটি দ্রুত সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিএনপির কমিটি পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মোহাম্মদ শাহজাহানসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, চেয়ারপারসনের মতামত ও পরামর্শের জন্য প্রস্তুতকৃত কমিটিগুলো হচ্ছে- ময়মনসিংহ মহানগর, ময়মনসিংহ উত্তর ও দক্ষিণ, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর জেলা, কুমিল্লা মহানগর, কুমিল্লা দক্ষিণ, খুলনা মহানগর, হবিগঞ্জ, ফেনী, কক্সবাজার, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, নরসিংদী, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল ও কুষ্টিয়া। এছাড়াও বেশ কয়েকটি জেলা কমিটি পুনর্গঠনের কাজও চলছে সমানে। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের দুইটি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতেও সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে মহানগর উত্তরের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কাজ অনেক দূর এগিয়েছে।

সূত্র জানায়, জেলা কমিটি গঠনে দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে আলোচিত ও গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত ‘এক নেতা এক পদ’ নীতিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যেসব জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তাদের যেকোনো একটি পদ ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তবে মনোনয়ন হারানোর আশঙ্কায় অনেক কেন্দ্রীয় নেতা জেলা কমিটির পদ ছাড়তে বিলম্ব করছেন। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে তাদেরকে এ আশঙ্কা থেকে বেরিয়ে এসে দলীয় স্বার্থে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার তাগিদও দেয়া  হয়েছে কয়েক দফায়। অবশ্যই কাউন্সিলের পর ‘এক নেতা এক পদ’ নীতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হলে অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই তাদের জেলা কমিটির পদ ছেড়ে দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে চিঠি দিয়েছেন। কেউ কেউ কেন্দ্রীয় কমিটির পদ ছেড়ে দিয়ে বেছে নিয়েছেন জেলা কমিটির পদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কমিটি পুনর্গঠনে আগামী নির্বাচনে আসনভিত্তিক সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী ও তৃণমূল নেতাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। কয়েকটি জেলার সভাপতিকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিয়ে আসার বিষয়টিও পুনর্গঠনের সময় বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। নেতারা জানান, দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত, তৃণমূলের ঐক্য অটুট, গতিশীল নেতৃত্ব বাছাই ও কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা রাখতে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে নেয়া হয়েছিল পুনর্গঠনের উদ্যোগ। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে পুনর্গঠন প্রক্রিয়াটি সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সে বছরের ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার নির্দেশনাও ছিল। কিন্তু উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সম্মেলন আয়োজনে প্রশাসনের বাধা, ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকদের হামলা, নেতাদের মামলা জটিলতা, দলের জাতীয় কাউন্সিল, উপজেলা-পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে বারবার পিছিয়েছে সে সময়সীমা। সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণে উখিয়া সফরে যাওয়া-আসার পথে ফেনীতে দুই দফা হামলার শিকার হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহর।

এ ঘটনার পর দলের পুনর্গঠন প্রক্রিয়াটিতে জোর দেয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের তাগিদ দেন খালেদা জিয়া। দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সাংগঠনিক পুনর্গঠন একটা নিয়মিত কার্যক্রম। সংগঠন ঠিক থাকলে আন্দোলন কিংবা নির্বাচন যেকোনো পদক্ষেপই সফল হয়। তাই তৃৃণমূলের সমস্যা, দুর্বলতা ও অনেক জেলায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সবক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামতের সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। শীর্ষ নেতৃত্বের মতামত ও পরামর্শসহ সার্বিক দিক বিবেচনা করে পুনর্গঠনের চলমান প্রক্রিয়াটি যথাসম্ভব দ্রুতসময়ে সম্পন্ন করার সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিএনপি ১৮ জেলার নতুন কমিটি চূড়ান্ত করেছে

আপডেট টাইম : ০৫:০৯:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফের সাংগঠনিক পুনর্গঠনে মনোযোগ দিচ্ছে বিএনপি। ১৮ জেলা শাখার নতুন কমিটি চূড়ান্ত করেছে দলটি। মতামত ও পরামর্শের জন্য কমিটিগুলো চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার টেবিলে উত্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। চেয়ারপারসনের মতামত ও অনুমোদন পেলে শিগগিরই পর্যায়ক্রমে কমিটিগুলো প্রকাশ করা হবে। আগামী সংসদ নির্বাচন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে সম্ভাব্য আন্দোলনকে বিবেচনায় রেখে চলমান পুনর্গঠন প্রক্রিয়াটি দ্রুত সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিএনপির কমিটি পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মোহাম্মদ শাহজাহানসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, চেয়ারপারসনের মতামত ও পরামর্শের জন্য প্রস্তুতকৃত কমিটিগুলো হচ্ছে- ময়মনসিংহ মহানগর, ময়মনসিংহ উত্তর ও দক্ষিণ, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর জেলা, কুমিল্লা মহানগর, কুমিল্লা দক্ষিণ, খুলনা মহানগর, হবিগঞ্জ, ফেনী, কক্সবাজার, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, নরসিংদী, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল ও কুষ্টিয়া। এছাড়াও বেশ কয়েকটি জেলা কমিটি পুনর্গঠনের কাজও চলছে সমানে। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের দুইটি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতেও সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে মহানগর উত্তরের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কাজ অনেক দূর এগিয়েছে।

সূত্র জানায়, জেলা কমিটি গঠনে দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে আলোচিত ও গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত ‘এক নেতা এক পদ’ নীতিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যেসব জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তাদের যেকোনো একটি পদ ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তবে মনোনয়ন হারানোর আশঙ্কায় অনেক কেন্দ্রীয় নেতা জেলা কমিটির পদ ছাড়তে বিলম্ব করছেন। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে তাদেরকে এ আশঙ্কা থেকে বেরিয়ে এসে দলীয় স্বার্থে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার তাগিদও দেয়া  হয়েছে কয়েক দফায়। অবশ্যই কাউন্সিলের পর ‘এক নেতা এক পদ’ নীতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হলে অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই তাদের জেলা কমিটির পদ ছেড়ে দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে চিঠি দিয়েছেন। কেউ কেউ কেন্দ্রীয় কমিটির পদ ছেড়ে দিয়ে বেছে নিয়েছেন জেলা কমিটির পদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কমিটি পুনর্গঠনে আগামী নির্বাচনে আসনভিত্তিক সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী ও তৃণমূল নেতাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। কয়েকটি জেলার সভাপতিকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিয়ে আসার বিষয়টিও পুনর্গঠনের সময় বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। নেতারা জানান, দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত, তৃণমূলের ঐক্য অটুট, গতিশীল নেতৃত্ব বাছাই ও কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা রাখতে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে নেয়া হয়েছিল পুনর্গঠনের উদ্যোগ। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে পুনর্গঠন প্রক্রিয়াটি সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সে বছরের ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার নির্দেশনাও ছিল। কিন্তু উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সম্মেলন আয়োজনে প্রশাসনের বাধা, ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকদের হামলা, নেতাদের মামলা জটিলতা, দলের জাতীয় কাউন্সিল, উপজেলা-পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে বারবার পিছিয়েছে সে সময়সীমা। সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণে উখিয়া সফরে যাওয়া-আসার পথে ফেনীতে দুই দফা হামলার শিকার হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহর।

এ ঘটনার পর দলের পুনর্গঠন প্রক্রিয়াটিতে জোর দেয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের তাগিদ দেন খালেদা জিয়া। দলের সাংগঠনিক পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সাংগঠনিক পুনর্গঠন একটা নিয়মিত কার্যক্রম। সংগঠন ঠিক থাকলে আন্দোলন কিংবা নির্বাচন যেকোনো পদক্ষেপই সফল হয়। তাই তৃৃণমূলের সমস্যা, দুর্বলতা ও অনেক জেলায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সবক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামতের সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। শীর্ষ নেতৃত্বের মতামত ও পরামর্শসহ সার্বিক দিক বিবেচনা করে পুনর্গঠনের চলমান প্রক্রিয়াটি যথাসম্ভব দ্রুতসময়ে সম্পন্ন করার সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।