জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী সুমাইয়া শিমু বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন শুক্রবার (২৮ আগস্ট)। শনিবার অনুষ্ঠিত হবে বৌভাত অনুষ্ঠান। এরই মধ্যে দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে শিমুর বিয়ের খবর ও ছবি। এ খবরে ভক্তরা যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনি হতাশও! একটা শ্রেণী শুরু করেছে বর্ণবাদী আলোচনা। এতেই শিমুভক্তরা কেউ কেউ চটছেন, কেউ কেউ হতাশাও প্রকাশ করেছেন।
সুমাইয়া শিমুর বরের গায়ের রং নিয়েই এ আলোচনা। এমন আলোচনায় চটেছেন অনেকেই। বায়েজিদ বিন ওয়াহিদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সুমাইয়া শিমুর জামাই কালা না সাদা এটা নিয়ে আমাদের পাবলিকের এত মাথাব্যথা কেন? ফাইজলামির একটা লিমিট থাকা দরকার। কালো স্ক্রিনে প্রব্লেম কী ভাই?’
এমন বর্ণবাদী আলোচনার মনস্তত্ত্ব নিয়ে রাহাত মুস্তাফিজ লিখেছেন, “বিলিভ মি। একটুও অবাক হইনি। সুন্দরী, সেলিব্রেটি কন্যার বিয়ে ক্যান কালো এবং বয়স্ক লোকের সাথে হবে? সাইকোলজিটা খুব ক্লিয়ার। ছবির পুরুষটির অন্যসব যোগ্যতা ছাপিয়ে মুখ্য হয়ে উঠেছে কথিত জন্মগত অযোগ্যতা। গায়ের রং! যা কি-না মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরের বিষয়। যারা হায় হায় করে বুক চাপড়ে মরছেন শিমু এইটা কী করল ওরা প্রত্যেকেই নিজেকে যোগ্যতার মানদণ্ডে ছবির ভদ্রলোককে ছাপিয়ে গেছেন বলে চেতনে ও অবচেতনে বিশ্বাস করেন। আর মেয়েরা যারা নাক সিটকাচ্ছেন, পিতৃতন্ত্রের কারখানা থেকে পরিশোধিত হয়ে আসা সে সব বঙ্গ ললনার কাছেও সুন্দরের সংজ্ঞা ওই ফর্সা রং। আমাদের পরিবারিক ও সামাজিক মানসিকতা এটাই। সুতরাং, ‘গেল গেল বর্ণবাদের রসাতলে ডুবে গেল যা কিছু’— রব তুলে অস্থির হবার কোনো কারণ নেই। এ বড় কঠিন সাধনা! ধর্ম বিশ্বাস যেমন আমাদের মনের গহীনে অবস্থান করে তেমনি বর্ণবাদী চেতনা মগজের ভেতরে বাসা বেঁধে থাকে। একে উপড়ে ফেলা চাট্টিখানি কথা নয় ব্রাদার। সো, ডোন্ট বি আশেইমড!”
সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় আসাদ লিখেছেন, ‘বিয়েতে মানুষটা কেমন সেটাই মুখ্য। দুই পরিবার পছন্দ করে বিয়ের আয়োজন করেছেন। যারা বিয়ে করছেন তাদেরও সম্মতি রয়েছে। এখানে কালো-সাদা প্রশ্নগুলো আসাই আমাদের নিচু মানসিকতার চর্চা।’
শিমুর বর নজরুল ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত। তিনি নিউজিল্যান্ডের মেসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছেন।
অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স করেছেন সুমাইয়া শিমু। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে ‘শৈল্পিক ও আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের টেলিভিশন অভিনয়ে নারীর ভূমিকা’ বিষয়ে পিএইচডি করছেন তিনি।