ঢাকা ০৮:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাউফলে জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ আহত ৬

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৯:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৬ বার

পটুয়াখালীর বাউফলে সরকারি খাস জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুইপক্ষের দুই দফা সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) উপজেলা চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ফেডারেশন চর এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে দুই দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চর ফেডারেশন এলাকায় সরকারি খাস জমির বরাদ্দ পান স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের থেকে এক একর জমির লিজ নেন ছাত্রদলের শাহরাজ হোসেন জয়। ওই খাস জমির পাশাপাশি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিনের ব্যক্তি মালিকানা কিছু জমি ছিল। আজ শনিবার সকালে লিজ নেওয়া ওই জমির দখল নিতে যায় শাহরাজ হোসেন জয় ও তার সহযোগীরা। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিনের লোকজন বাধা দিলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে শাহরাজ হোসেন জয় ও সরোয়ার হোসেন রিয়াজসহ তাদের ৩ সহযোগী আহত হন। পরে কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন হাসপাতালের সামনে গেলে জয় ও রিয়াজের অনুসারীরা তার ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়। তাকে উদ্ধারে সহযোগিতা করতে গেলে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করেন উপজেলা বিএনপির একাংশের কয়েকজন নেতা। এ সময় পুলিশ জসিমকে উদ্ধার করে একটি দোকানের মধ্যে আটকে রাখেন এবং পরবর্তী সময়ে তাকে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার সময় একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটকের সামনে তুহিনের ওপর হামলা চালায় ছাত্রদল নেতা মুজাহিদুলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তখন তুহিন আত্মরক্ষার্তে দৌড়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকের মধ্যে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে টেনে-হিচড়ে এনে মারধর করা হয় তুহিনকে।

এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, তুহিনের নেতৃত্বে চরফেডারেশন এলাকায় তার কয়েকজন কর্মীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। ওই ঘটনার জেরে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন তুহিন। তিনি তাকে (তুহিন) রক্ষা করেছেন এবং ধরে থানায় নিয়ে যেতে চেয়েছেন। মারধরের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার হোসেন রিয়াজ, কালাইয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রস্তাবিত সভাপতি শাহরাজ হোসেন জয়, ছাত্রদল নেতা রেদওয়ান, ইয়াসিন ও রায়হান এবং কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন। এরমধ্যে নিরাপত্তাজনিত কারণে জসিম উদ্দিন তুহিনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং রিয়াজ, জয় ও রেদোয়ানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার হোসেন রিয়াজ বলেন, আমরা নিজেদের জমি চাষাবাদ করতে গেলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদেরকে আহত করেছেন।

কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন বলেন, আমি কালাইয়া হাট-বাজারের ইজারা নেওয়ার পর থেকেই একটি পক্ষ আমাকে বিভিন্নভাবে হামলা করার চেষ্টা করে। আজ আমি ওষুধ কিনতে হাসপাতাল এলাকায় এলে তারাই অতর্কিত হামলা চালায়। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারামারির বিষয়ে তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।

বাউফল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ বলেন, জসীম আহমেদ তুহিন একজন নম্র-ভদ্র মানুষ। তাকে অপমান অপদস্ত মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি।

এ বিষয় বাউফল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একপক্ষের আহত তিনজনকে উদ্ধার করে পুলিশ হাসপাতালে নিয়েছে এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে অপরপক্ষের একজনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাউফলে জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ আহত ৬

আপডেট টাইম : ১০:৫৯:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

পটুয়াখালীর বাউফলে সরকারি খাস জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুইপক্ষের দুই দফা সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) উপজেলা চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ফেডারেশন চর এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে দুই দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চর ফেডারেশন এলাকায় সরকারি খাস জমির বরাদ্দ পান স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের থেকে এক একর জমির লিজ নেন ছাত্রদলের শাহরাজ হোসেন জয়। ওই খাস জমির পাশাপাশি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিনের ব্যক্তি মালিকানা কিছু জমি ছিল। আজ শনিবার সকালে লিজ নেওয়া ওই জমির দখল নিতে যায় শাহরাজ হোসেন জয় ও তার সহযোগীরা। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিনের লোকজন বাধা দিলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে শাহরাজ হোসেন জয় ও সরোয়ার হোসেন রিয়াজসহ তাদের ৩ সহযোগী আহত হন। পরে কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন হাসপাতালের সামনে গেলে জয় ও রিয়াজের অনুসারীরা তার ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়। তাকে উদ্ধারে সহযোগিতা করতে গেলে সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করেন উপজেলা বিএনপির একাংশের কয়েকজন নেতা। এ সময় পুলিশ জসিমকে উদ্ধার করে একটি দোকানের মধ্যে আটকে রাখেন এবং পরবর্তী সময়ে তাকে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার সময় একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটকের সামনে তুহিনের ওপর হামলা চালায় ছাত্রদল নেতা মুজাহিদুলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তখন তুহিন আত্মরক্ষার্তে দৌড়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকের মধ্যে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে টেনে-হিচড়ে এনে মারধর করা হয় তুহিনকে।

এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, তুহিনের নেতৃত্বে চরফেডারেশন এলাকায় তার কয়েকজন কর্মীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। ওই ঘটনার জেরে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন তুহিন। তিনি তাকে (তুহিন) রক্ষা করেছেন এবং ধরে থানায় নিয়ে যেতে চেয়েছেন। মারধরের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার হোসেন রিয়াজ, কালাইয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রস্তাবিত সভাপতি শাহরাজ হোসেন জয়, ছাত্রদল নেতা রেদওয়ান, ইয়াসিন ও রায়হান এবং কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন। এরমধ্যে নিরাপত্তাজনিত কারণে জসিম উদ্দিন তুহিনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং রিয়াজ, জয় ও রেদোয়ানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার হোসেন রিয়াজ বলেন, আমরা নিজেদের জমি চাষাবাদ করতে গেলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদেরকে আহত করেছেন।

কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন তুহিন বলেন, আমি কালাইয়া হাট-বাজারের ইজারা নেওয়ার পর থেকেই একটি পক্ষ আমাকে বিভিন্নভাবে হামলা করার চেষ্টা করে। আজ আমি ওষুধ কিনতে হাসপাতাল এলাকায় এলে তারাই অতর্কিত হামলা চালায়। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারামারির বিষয়ে তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।

বাউফল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ বলেন, জসীম আহমেদ তুহিন একজন নম্র-ভদ্র মানুষ। তাকে অপমান অপদস্ত মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি।

এ বিষয় বাউফল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একপক্ষের আহত তিনজনকে উদ্ধার করে পুলিশ হাসপাতালে নিয়েছে এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে অপরপক্ষের একজনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।