ঢাকা ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গবাদি পশুর খাদ্য নেপিয়ার ঘাস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৪:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ৪০৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নেপিয়ার নামে দেশে উন্নত জাতের ঘাস রয়েছে। প্রায় সব অঞ্চলে এ ঘাস চাষ করা সম্ভব। এ ঘাস থেকে গবাদি পশুর কাঁচা ঘাসের চাহিদা পূরণসহ অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হওয়া যায়।

দেখতে আখের মতো, লম্বা ৬-১২ ফুট বা তার চেয়েও বেশি হয়। এ ঘাস দ্রুত বাড়ে, সহজে জন্মে, পুষ্টিকর, সহজপাচ্য ও খরা সহিষ্ণু। একবার রোপণ করলে ৩-৪ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।

জমি:

বৃষ্টি বা বর্ষার পানি জমে থাকে না এমন জমিতে নেপিয়ার চাষ করতে হয়। সব ধরনের মাটিতে এ ঘাস রোপণ করা যায়, তবে বেলে-দোআঁশ মাটি বেশি উপযোগী।

সময়:

বর্ষা মৌসুমে রোপণ করা ভালো। বর্ষার শুরুতে এ ঘাসের কাটিং বা চারা রোপণ করা হয়। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে প্রথম বৃষ্টির পর জমিতে চারা বা কাটিং লাগালে প্রথম বছরেই ৩-৪ বার পর্যন্ত ঘাস কাটা যেতে পারে। চারা বা কাটিং লাগানোর পর যদি রোদ হয় বা মাটিতে রস কম থাকে তাহলে চারার গোড়ায় পানি দিতে হয়।

রোপণ:

এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব দুই-তিন ফুট। এক চারা থেকে অন্য চারার দূরত্ব দেড় ফুট হবে। মাটিতে রস না থাকলে চারা লাগানোর পর পানি সেচ দিতে হবে। সাধারণত প্রতি একর জমি রোপণের জন্য সাত-আট হাজার চারা বা কাটিংয়ের প্রয়োজন হয়।

সার ও পানি:

ভালো ফলন ও গাছের বৃদ্ধির জন্য সার এবং পানি প্রয়োজন। বর্ষা মৌসুমে পানির প্রয়োজন না হলেও অন্য সময়ে পানির প্রয়োজন হয়।

জমি তৈরি:

দেড় থেকে দুই টন গোবর প্রতি একরে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হয়। রাসায়নিক সারের মধ্যে ইউরিয়া ১৫০ কেজি, টিএসপি ৮০ কেজি ও এমওপি ৭০ কেজি প্রয়োগ করতে হয়।

ঘাস কাটা:

কাটিং বা মোথা লাগানোর ৬০-৭০ দিন পর প্রথমবার ঘাস সংগ্রহ করা যায়। এরপর প্রতি ৬-৮ সপ্তাহ পরপর ঘাস সংগ্রহ করা যায়। মাটির ৫-৬ ইঞ্চি উপর থেকে ঘাস কাটতে হয়। প্রথম কাটিংয়ে ফলন একটু কম হলেও দ্বিতীয় কাটিং থেকে পরবর্তী ২-৩ বছর পর্যন্ত বাড়তে থাকে।

সতর্কতা:

নেপিয়ারের জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগের পর অনেক দিন খরা হলে ইউরিয়া থেকে নাইট্রেট বা নাইট্রাইট ঘাসের মধ্যে উৎপন্ন হতে পারে। পরবর্তীতে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার পর দ্রুত বেড়ে ওঠা এ ঘাস কেটে খাওয়ানো ঝুঁকিপূর্ণ। এতে বিষক্রিয়া হতে পারে।

মনে রাখা ভালো

১. জমিতে সার ছিটানোর ২ সপ্তাহের মধ্যে ঘাস কাটা উচিত নয়।

২. দীর্ঘদিন খরার পর হঠাৎ বেশি বৃষ্টিপাতে দ্রুত বেড়ে ওঠা ঘাস খাওয়ানো ঠিক নয়।

৩. ঘাস কাটার একমাস আগে সার ছিটানো উচিত। 

সংরক্ষণ:

নেপিয়ার ঘাস শুকিয়ে সংরক্ষণ করা সুবিধাজনক নয়। তবে কাঁচা ঘাস সাইলেজ করে শুষ্ক মৌসুমে সংরক্ষণ করা যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গবাদি পশুর খাদ্য নেপিয়ার ঘাস

আপডেট টাইম : ০৫:০৪:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নেপিয়ার নামে দেশে উন্নত জাতের ঘাস রয়েছে। প্রায় সব অঞ্চলে এ ঘাস চাষ করা সম্ভব। এ ঘাস থেকে গবাদি পশুর কাঁচা ঘাসের চাহিদা পূরণসহ অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হওয়া যায়।

দেখতে আখের মতো, লম্বা ৬-১২ ফুট বা তার চেয়েও বেশি হয়। এ ঘাস দ্রুত বাড়ে, সহজে জন্মে, পুষ্টিকর, সহজপাচ্য ও খরা সহিষ্ণু। একবার রোপণ করলে ৩-৪ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।

জমি:

বৃষ্টি বা বর্ষার পানি জমে থাকে না এমন জমিতে নেপিয়ার চাষ করতে হয়। সব ধরনের মাটিতে এ ঘাস রোপণ করা যায়, তবে বেলে-দোআঁশ মাটি বেশি উপযোগী।

সময়:

বর্ষা মৌসুমে রোপণ করা ভালো। বর্ষার শুরুতে এ ঘাসের কাটিং বা চারা রোপণ করা হয়। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে প্রথম বৃষ্টির পর জমিতে চারা বা কাটিং লাগালে প্রথম বছরেই ৩-৪ বার পর্যন্ত ঘাস কাটা যেতে পারে। চারা বা কাটিং লাগানোর পর যদি রোদ হয় বা মাটিতে রস কম থাকে তাহলে চারার গোড়ায় পানি দিতে হয়।

রোপণ:

এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব দুই-তিন ফুট। এক চারা থেকে অন্য চারার দূরত্ব দেড় ফুট হবে। মাটিতে রস না থাকলে চারা লাগানোর পর পানি সেচ দিতে হবে। সাধারণত প্রতি একর জমি রোপণের জন্য সাত-আট হাজার চারা বা কাটিংয়ের প্রয়োজন হয়।

সার ও পানি:

ভালো ফলন ও গাছের বৃদ্ধির জন্য সার এবং পানি প্রয়োজন। বর্ষা মৌসুমে পানির প্রয়োজন না হলেও অন্য সময়ে পানির প্রয়োজন হয়।

জমি তৈরি:

দেড় থেকে দুই টন গোবর প্রতি একরে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হয়। রাসায়নিক সারের মধ্যে ইউরিয়া ১৫০ কেজি, টিএসপি ৮০ কেজি ও এমওপি ৭০ কেজি প্রয়োগ করতে হয়।

ঘাস কাটা:

কাটিং বা মোথা লাগানোর ৬০-৭০ দিন পর প্রথমবার ঘাস সংগ্রহ করা যায়। এরপর প্রতি ৬-৮ সপ্তাহ পরপর ঘাস সংগ্রহ করা যায়। মাটির ৫-৬ ইঞ্চি উপর থেকে ঘাস কাটতে হয়। প্রথম কাটিংয়ে ফলন একটু কম হলেও দ্বিতীয় কাটিং থেকে পরবর্তী ২-৩ বছর পর্যন্ত বাড়তে থাকে।

সতর্কতা:

নেপিয়ারের জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগের পর অনেক দিন খরা হলে ইউরিয়া থেকে নাইট্রেট বা নাইট্রাইট ঘাসের মধ্যে উৎপন্ন হতে পারে। পরবর্তীতে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার পর দ্রুত বেড়ে ওঠা এ ঘাস কেটে খাওয়ানো ঝুঁকিপূর্ণ। এতে বিষক্রিয়া হতে পারে।

মনে রাখা ভালো

১. জমিতে সার ছিটানোর ২ সপ্তাহের মধ্যে ঘাস কাটা উচিত নয়।

২. দীর্ঘদিন খরার পর হঠাৎ বেশি বৃষ্টিপাতে দ্রুত বেড়ে ওঠা ঘাস খাওয়ানো ঠিক নয়।

৩. ঘাস কাটার একমাস আগে সার ছিটানো উচিত। 

সংরক্ষণ:

নেপিয়ার ঘাস শুকিয়ে সংরক্ষণ করা সুবিধাজনক নয়। তবে কাঁচা ঘাস সাইলেজ করে শুষ্ক মৌসুমে সংরক্ষণ করা যায়।