হাওর বার্তা ডেস্কঃ তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী বাকির বোজদাগের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দিকী। গত শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। বাকির বোজদাগ তুরস্ক সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী এবং বর্তমানে সরকারের মুখপাত্র হিসেবে সংবাদমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্বে আছেন। এ ছাড়া, তিনি বাংলাদেশ-তুরস্ক যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) তুরস্কের প্রধান।
ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় দুই দেশের মধ্যেকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়সহ রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বাকির বোজদাগ ও এম আল্লামা সিদ্দিকী বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা করেন। আঙ্কারায় যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) পরবর্তী সভা এবং ঢাকায় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) আলোচনার দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠানের বিষয়ও আলোচিত হয়। জেইসির তুরস্কের প্রধান হিসেবে বাকির বোজদাগ আঙ্কারাতে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের পরবর্তী সভা আয়োজনের বিষয়ে তাঁর আন্তরিক আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাকির বোজদাগ দ্রুততম সময়ের মধ্যে জেইসি ও এফটিএর সভা আয়োজনে তাঁর সর্বাত্মক সহযোগিতার বিষয়ে এম আল্লামা সিদ্দিকীকে প্রতিশ্রুতি প্রদান এবং দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক যোগসূত্রের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা দুই দেশের সম্পর্ককে তুরস্ক যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করে। তিনি জোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ভবিষ্যতে দুই দেশের ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
বৈঠকে বাকির বোজদাগ রোহিঙ্গা সংকটের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে এম আল্লামা সিদ্দিকীর কাছে জানতে চান। রোহিঙ্গা সংকটের ঐতিহাসিক পটভূমির প্রতি আলোকপাত করে এম আল্লামা সিদ্দিকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভিটেমাটি হারা দুর্দশাগ্রস্ত ও পীড়িত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও আশ্রয়দানের জন্য সম্ভাব্য সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই পদক্ষেপ অত্যন্ত সাহসী উদ্যোগ হিসেবে আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক প্রশংসিত হচ্ছে।
এম আল্লামা সিদ্দিকী আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টির মূলে রয়েছে মিয়ানমার। এ সংকটের সমাধানও নিহিত রয়েছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের হাতে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ এ সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান প্রত্যাশা করছে। তিনি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের কল্যাণার্থে তুরস্ক সরকার কর্তৃক গৃহীত সময়োচিত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
বাকির বোজদাগ বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি তুরস্কের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন। বিজ্ঞপ্তি