হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাতে সময় মাত্র দুই বছর। এ সময়ের মধ্যেই, অর্থাৎ আগামী ২০১৯ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনেই ‘বড়দা’ নরেন্দ্র মোদির সরকারকে উৎখাত করতে চান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নরেন্দ্র মোদির সরকারের সময়ে দেশজুড়ে গেরুয়া শিবিরের সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে ইঙ্গিত করে শুক্রবার ধর্মতলায় বার্ষিক স্মৃতি তর্পণ মঞ্চের জনসভা থেকে এ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি।
মোদি সরকারের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘গুন্ডারা দেশ চালাচ্ছে।’
ভারতের স্বাধীনতা লাভের জন্য ব্রিটিশবিরোধী কংগ্রেসের আন্দোলনের অনুকরণে নিজের দলের জন্য মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ‘বিজেপি ভারত ছাড়’ স্লোগানের কথা চানান তৃণমূল নেত্রী।
আগামী ৯ আগস্ট ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের বর্ষপূর্তির দিন থেকেই এই লক্ষ্যে দলের সর্বস্তরে কর্মসূচি নেওয়ার নির্দেশ দেন মমতা। আগামী ৩০ আগস্ট শহীদ মিনার ময়দানে এ কর্মসূচির ইতি টানবেন তিনি।
পরবর্তীতে এ কর্মসূচির পথ ধরেই লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত রাখতে চাইছেন মমতা। তার মতে, বিজেপি আগামী বছরই লোকসভা নির্বাচন দিয়ে দিতে পারে।
রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ১৭-১৮টি বিরোধী দলের ঐক্যের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়়াইয়ে সোনিয়া গান্ধী, লালুপ্রসাদ বা মুলায়ম সিংহ যাদবদের পাশে তিনি থাকবেন। বিরোধীদের প্রতিবাদ যত তীব্র হবে, সেই সব দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে মেদি সরকার তত বেশি ব্যবহার করবে।
মমতা বলেন, রাজ্যে রাজ্যে এ়ডিএমকে, জেডিইউ, আরজেডি, কংগ্রেস, তৃণমূল নিজেদের মতো করে লড়বে। ফলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি স্বস্তি পাবে না।
পরের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটি আসনও না পায়, এজন্য দলের কর্মী-সমর্থকদের অঙ্গীকার করতে আহ্বান জানিয়ে মমতা বলেন, ‘সিপিএমের হাত থেকে যদি বাংলাকে মুক্ত করতে পারেন, বিজেপির থেকে দেশকে মুক্ত করতে পারবেন না? করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে, এটাই হোক শপথ।
গো-রক্ষার নামে দেশজুড়ে বিজেপির তাণ্ডবের নিন্দা জানিয়ে গো-রক্ষকদের ‘গো-রাক্ষস’ এবং ‘গো-তক্ষক’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
তবে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মমতার কড়া মন্তব্যের পাল্টা জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করেন, বিজেপিকে ভারত ছাড়া করতে গিয়ে উনি নিজেই না বাংলা ছাড়া হয়ে যান।
মমতার বক্তব্য প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, বিজেপির গত ৩ বছরের শাসনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী করছেন, গত ৬ বছর ধরে আমরা তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করে আসছি।