ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেভাবে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত দূর করতে পারে জাতিসংঘ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:১৫:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৬ বার

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এক বছরের বেশি সময় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্য ণ্ত প্রাণ হায়েছে ৪৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। যাদেরবেশিরভাগই বেসামরিক। এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও। প্রত্যক্ষভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়েছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং টেকসই উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক জেফরি ডি সাচ বলেন, জাতিসংঘ চাইলে এই সংঘাত বন্ধ করতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে অভিজ্ঞ এই গবেষক মনে করেন, ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দিলে এই সংঘাত থেমে যাবে। আজ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় লেখা এক কলামে এই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। এরপর বছরের পর বছর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চালানো নিপীড়ন আরও জোরালো করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেদিনের পর থেকে চালানো সামরিক অভিযানে প্রাণ হারিয়েছে ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহত ছাড়িয়েছে এক লাখ। হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। কারণ, যেসব মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে আছে, সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এবং গণনার মধ্যেও ধরা হয়নি।

২০২৫ সালের জুনে অনুষ্ঠিত হতে জাতিসংঘের আগামী কনভেনশন। জেফরি বলেন, সেই কনভেনশনে ফিলিস্তিনকে ১৯৪তম সদস্য হিসেবে যুক্ত করা হোক। এটা হতে পারে যুদ্ধে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত।

আল-জাজিরায় ওই কলামের যৌথ লেখক ছিলেন সিবিল ফারেস। কলামে বলা হয়, পুরো বিশ্ব এখন এই সংঘাতের সমাধান হিসেবে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কথা বলছে। একটা চুক্তির পর এটা অবশ্যই সম্ভব।

১৯৭৬ সাল থেকে ইসরায়েলের বসতিকে অবৈধ বলে আসছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের প্রস্তাবেও বেশিরভাগইর ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকার কথা। ১৯৪৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনের দায়িত্ব নিয়েছে জাতিসংঘ। সেসময়িই সাধারণে পরিষদে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে সেখানে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র থাকবে। একটি ইহুদিদের জন্য একটি আরবদের জন্য। সেসময়ের মানচিত্র মানতে রাজি হয়নি কোনো পক্ষ। সেখানে ফিলিস্তিনিদের ৪৪ শতাংশ জায়গায় দেওয়া হযেছিল যেখানে ৬৭ শতাংশ জনগণই ছিল আরব। কিন্তু বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে আগেই, জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাতে শুরু করে জায়নবাদীরা। এটি নাকবা বলে পরিচিত।

ইসরায়েল নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করে এবং আরব প্রতিবেশী দেশগুলোকে এক যুদ্ধে পরাচিজত করে। জাতিসংঘের সিনিয়র কর্মকর্তা কাউন্ট ফোক মধ্যস্থতার চেষ্টা করেন যেন দ্বিরাষ্ট্র সম্ভব হয়। কিন্তু তাকেও হত্যা করে জায়নবাদী সংগঠন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যেভাবে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত দূর করতে পারে জাতিসংঘ

আপডেট টাইম : ০৬:১৫:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এক বছরের বেশি সময় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্য ণ্ত প্রাণ হায়েছে ৪৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। যাদেরবেশিরভাগই বেসামরিক। এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও। প্রত্যক্ষভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়েছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং টেকসই উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক জেফরি ডি সাচ বলেন, জাতিসংঘ চাইলে এই সংঘাত বন্ধ করতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে অভিজ্ঞ এই গবেষক মনে করেন, ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দিলে এই সংঘাত থেমে যাবে। আজ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় লেখা এক কলামে এই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। এরপর বছরের পর বছর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চালানো নিপীড়ন আরও জোরালো করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেদিনের পর থেকে চালানো সামরিক অভিযানে প্রাণ হারিয়েছে ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহত ছাড়িয়েছে এক লাখ। হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। কারণ, যেসব মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে আছে, সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এবং গণনার মধ্যেও ধরা হয়নি।

২০২৫ সালের জুনে অনুষ্ঠিত হতে জাতিসংঘের আগামী কনভেনশন। জেফরি বলেন, সেই কনভেনশনে ফিলিস্তিনকে ১৯৪তম সদস্য হিসেবে যুক্ত করা হোক। এটা হতে পারে যুদ্ধে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত।

আল-জাজিরায় ওই কলামের যৌথ লেখক ছিলেন সিবিল ফারেস। কলামে বলা হয়, পুরো বিশ্ব এখন এই সংঘাতের সমাধান হিসেবে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কথা বলছে। একটা চুক্তির পর এটা অবশ্যই সম্ভব।

১৯৭৬ সাল থেকে ইসরায়েলের বসতিকে অবৈধ বলে আসছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের প্রস্তাবেও বেশিরভাগইর ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকার কথা। ১৯৪৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনের দায়িত্ব নিয়েছে জাতিসংঘ। সেসময়িই সাধারণে পরিষদে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে সেখানে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র থাকবে। একটি ইহুদিদের জন্য একটি আরবদের জন্য। সেসময়ের মানচিত্র মানতে রাজি হয়নি কোনো পক্ষ। সেখানে ফিলিস্তিনিদের ৪৪ শতাংশ জায়গায় দেওয়া হযেছিল যেখানে ৬৭ শতাংশ জনগণই ছিল আরব। কিন্তু বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে আগেই, জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাতে শুরু করে জায়নবাদীরা। এটি নাকবা বলে পরিচিত।

ইসরায়েল নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করে এবং আরব প্রতিবেশী দেশগুলোকে এক যুদ্ধে পরাচিজত করে। জাতিসংঘের সিনিয়র কর্মকর্তা কাউন্ট ফোক মধ্যস্থতার চেষ্টা করেন যেন দ্বিরাষ্ট্র সম্ভব হয়। কিন্তু তাকেও হত্যা করে জায়নবাদী সংগঠন।