ঢাকা ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতের মরিচঝাঁপি গণহত‍্যা নিয়ে বাংলাদেশের সিরিজ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৪ বার

১৯৭৯ সালে সুন্দরবনে ঘটে যাওয়া মরিচঝাঁপি গণহত্যা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘ফেউ’। সত্য ঘটনা অবলম্বনে এই সিরিজ নির্মাণ করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান।দেশভাগ ও মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে পাড়ি দিয়েছিল। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে নিম্নবর্ণের (নমঃশূদ্র) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটা অংশ এসে আশ্রয় নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগণা জেলার দ্বীপ মরিচঝাঁপিতে। সরকারি আশ্বাসেই সেখানে আবাস গোড়ে তোলেন তারা। কিন্তু ভোটের আগের রাজনীতির রূপ পাল্টায় ভোটের পরে। শুরু হয় উদ্বাস্তু উচ্ছেদ।

শরণার্থী উচ্ছেদ করতে মরিচঝাঁপিতে খাবার ও পানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, ঘরে আগুন দেওয়া, নৌকা ডুবানোসহ নির্বিচারে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটে। এতে করে তৎকালীন ভারতের রাজ্য সরকার নিন্দিত হলেও কিছু আসে-যায়নি তাদের। ১৯৭৯ সালের ১৬ মে তারা মরিচঝাঁপিকে উদ্বাস্তু শূন্য করতে সক্ষম হন। সরকারি হিসেবে, সেখানে মোট নিহতের সংখ্যা মাত্র দুই জন হলেও বিভিন্ন হিসেবে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়।

সুন্দরবনের এই অন্ধকার অধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় নির্মিত হয়েছে ওয়েব সিরিজটি। নির্মাতা সুকর্ন সাহেদ বলেন, ‘সুন্দরবনে তো অনেক গল্প; বনবিবির গল্প, ডাকাতের গল্প, স্থানীয় মিথ। কিন্তু আমি খুঁজেছি ওই অঞ্চলের রাজনীতি। সেখান থেকেই গল্পটি নিয়ে কাজ করা।’

সুকর্ন জানান, ২০১৬-২০২১ সালের মধ্যে তিনি এসব তথ্য সংগ্রহ করেছেন, এগিয়েছে গল্প বুননের কাজ।

এই নির্মাতার কথায়, ‘২০২১-এ আমার মনে হয় এটি দিয়ে আমি কিছু নির্মাণ করতে চাই। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে গল্পটা লক করি। চিত্রনাট্যের ১৭টা ড্রাফট করার পর আমরা কাজ শুরু করতে পেরেছি। আমরা একটা সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বন করেছি, অনুপ্রেরণা নিয়েছি। সেটা এই সিরিজের মূল কেন্দ্র। তবে সেই কেন্দ্রকে আবর্তিত করে যত কিছু, তার সবটাই আমার দেখা-জানা মোংলার মানুষ, তাদের জীবন ও রাজনীতি থেকে নেওয়া অভিজ্ঞতা।’

‘ফেউ’র প্রেক্ষাপট ইতিহাস নির্ভর হলেও সিরিজটি ফিকশনাল। এর গল্প লিখেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান ও রোমেল রহমান। চিত্রনাট্য করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান ও সিদ্দিক আহমেদ। ইতিহাসের সঙ্গে নিজের দেখা চরিত্র, নিজের জানা ঘটনা, নিজের অঞ্চলের গল্প সিরিজে তুলে ধরেছেন বলে জানান নির্মাতা।

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে শিগগিরই আসছে ‘ফেউ’। ১১ জানুয়ারি রাতে প্রকাশ পেয়েছে সিরিজটির অ্যানাউন্সমেন্ট টিজার। যার ক্যাপশনে লেখা, ‘কী ঘটেছিল ১৯৭৯ সালে? কী লুকানো হয়েছে আমাদের কাছ থেকে?’ পাশাপাশি মুক্তির তারিখ দ্রুতই জানানো হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

তবে অ্যানাউন্সমেন্ট টিজারে কোনো চরিত্র প্রকাশ করা হয়নি। টিজারে উঠে আসা একটি সংলাপ এমন- ‘রিফিউজিগো দ্যাশ-জাত বইলে কিছু আছে নাকি! আমরা তো মন্দিরের ঘণ্টার মতো। যে বাজায় খালি বাইজে যাই।’

পুরো টিজারে ছোট ছোট দৃশ্যে বোঝানো হয়েছে গল্পটির অঞ্চলগত বৈশিষ্ট। ছোট-বড় নৌকা, ঘন জঙ্গল, কিছু মানুষের ধস্তাধস্তি, উদযাপনের মতো দৃশ্যও আছে টিজারে। তবে এসবের ব্যাখ্যা এখনই দিতে নারাজ পরিচালক। জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে পুরোটাই উন্মোচিত হবে দর্শকদের সামনে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারতের মরিচঝাঁপি গণহত‍্যা নিয়ে বাংলাদেশের সিরিজ

আপডেট টাইম : ০৬:৩২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

১৯৭৯ সালে সুন্দরবনে ঘটে যাওয়া মরিচঝাঁপি গণহত্যা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘ফেউ’। সত্য ঘটনা অবলম্বনে এই সিরিজ নির্মাণ করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান।দেশভাগ ও মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে পাড়ি দিয়েছিল। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে নিম্নবর্ণের (নমঃশূদ্র) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটা অংশ এসে আশ্রয় নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগণা জেলার দ্বীপ মরিচঝাঁপিতে। সরকারি আশ্বাসেই সেখানে আবাস গোড়ে তোলেন তারা। কিন্তু ভোটের আগের রাজনীতির রূপ পাল্টায় ভোটের পরে। শুরু হয় উদ্বাস্তু উচ্ছেদ।

শরণার্থী উচ্ছেদ করতে মরিচঝাঁপিতে খাবার ও পানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, ঘরে আগুন দেওয়া, নৌকা ডুবানোসহ নির্বিচারে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটে। এতে করে তৎকালীন ভারতের রাজ্য সরকার নিন্দিত হলেও কিছু আসে-যায়নি তাদের। ১৯৭৯ সালের ১৬ মে তারা মরিচঝাঁপিকে উদ্বাস্তু শূন্য করতে সক্ষম হন। সরকারি হিসেবে, সেখানে মোট নিহতের সংখ্যা মাত্র দুই জন হলেও বিভিন্ন হিসেবে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়।

সুন্দরবনের এই অন্ধকার অধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় নির্মিত হয়েছে ওয়েব সিরিজটি। নির্মাতা সুকর্ন সাহেদ বলেন, ‘সুন্দরবনে তো অনেক গল্প; বনবিবির গল্প, ডাকাতের গল্প, স্থানীয় মিথ। কিন্তু আমি খুঁজেছি ওই অঞ্চলের রাজনীতি। সেখান থেকেই গল্পটি নিয়ে কাজ করা।’

সুকর্ন জানান, ২০১৬-২০২১ সালের মধ্যে তিনি এসব তথ্য সংগ্রহ করেছেন, এগিয়েছে গল্প বুননের কাজ।

এই নির্মাতার কথায়, ‘২০২১-এ আমার মনে হয় এটি দিয়ে আমি কিছু নির্মাণ করতে চাই। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে গল্পটা লক করি। চিত্রনাট্যের ১৭টা ড্রাফট করার পর আমরা কাজ শুরু করতে পেরেছি। আমরা একটা সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বন করেছি, অনুপ্রেরণা নিয়েছি। সেটা এই সিরিজের মূল কেন্দ্র। তবে সেই কেন্দ্রকে আবর্তিত করে যত কিছু, তার সবটাই আমার দেখা-জানা মোংলার মানুষ, তাদের জীবন ও রাজনীতি থেকে নেওয়া অভিজ্ঞতা।’

‘ফেউ’র প্রেক্ষাপট ইতিহাস নির্ভর হলেও সিরিজটি ফিকশনাল। এর গল্প লিখেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান ও রোমেল রহমান। চিত্রনাট্য করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান ও সিদ্দিক আহমেদ। ইতিহাসের সঙ্গে নিজের দেখা চরিত্র, নিজের জানা ঘটনা, নিজের অঞ্চলের গল্প সিরিজে তুলে ধরেছেন বলে জানান নির্মাতা।

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে শিগগিরই আসছে ‘ফেউ’। ১১ জানুয়ারি রাতে প্রকাশ পেয়েছে সিরিজটির অ্যানাউন্সমেন্ট টিজার। যার ক্যাপশনে লেখা, ‘কী ঘটেছিল ১৯৭৯ সালে? কী লুকানো হয়েছে আমাদের কাছ থেকে?’ পাশাপাশি মুক্তির তারিখ দ্রুতই জানানো হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

তবে অ্যানাউন্সমেন্ট টিজারে কোনো চরিত্র প্রকাশ করা হয়নি। টিজারে উঠে আসা একটি সংলাপ এমন- ‘রিফিউজিগো দ্যাশ-জাত বইলে কিছু আছে নাকি! আমরা তো মন্দিরের ঘণ্টার মতো। যে বাজায় খালি বাইজে যাই।’

পুরো টিজারে ছোট ছোট দৃশ্যে বোঝানো হয়েছে গল্পটির অঞ্চলগত বৈশিষ্ট। ছোট-বড় নৌকা, ঘন জঙ্গল, কিছু মানুষের ধস্তাধস্তি, উদযাপনের মতো দৃশ্যও আছে টিজারে। তবে এসবের ব্যাখ্যা এখনই দিতে নারাজ পরিচালক। জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে পুরোটাই উন্মোচিত হবে দর্শকদের সামনে।