ঢাকা ১১:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বগুড়ায় আউশ চাল উৎপাদন সম্ভাবনা ৬০ হাজার মেট্রিক টন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:১১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০১৭
  • ৩৪৪ বার

ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বোরোর ফলন ঘরে তুলেছে চাষিরা। বাজারে বোরো ধানের দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা বেশ খুশি। খুশির এই হাওয়ায় এবার বাড়তি আয়ের স্বপ্ন নিয়ে নতুন করে আউশ ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছেন বগুড়ার চাষিরা।

বোরো কাটার পর এবং আমন ধান চাষের আগে বাড়তি ফসল হিসেবে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম ও শিবগঞ্জ উপজেলায় চাষ হয়ে থাকে আউশ ধান। খরচ কম ফলন বেশি বলে আমন চাষের আগের ফাঁকা সময়ে জেলার চাষিরা আউশ চাষ করে ঘরে তোলে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলোর মধ্যে সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম ও শিবগঞ্জ উপজেলায় চাষ হয়ে থাকে আউশ ধান চাষ হয়ে থাকে বেশি। এর সাথে গাবতলী, কাহালু উপজেলাতেও কিছু কিছু করে আউশ চাষ হচ্ছে।

বোরো কাটার পর আমন চাষের আগের সময়ে প্রায় সাড়ে তিনমাস জমি পড়ে থাকে। অনেক কৃষক এই সময় জমিতে সবজির চাষ করে। আর বেশির ভাগ জমিই পড়ে থাকে। এই জমি ফেলে না রেখে চাষিরা ৩ মাস শ্রম দিয়ে বাড়তি ফসল হিসেবে আউশ চাষ করে ঘরে ফলন তোলেন।

এ ধান চাষে কৃষকের খরচ কম হয়ে থাকে। আউশ সবচেয়ে বেশি চাষ হয়ে থাকে জেলার সারিকান্দি, ধুনট, নন্দীগ্রাম ও শেরপুর উপজেলায়। সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট এলাকায় এই ধানকে বর্ষালিও বলে থাকে। বর্ষার পানি জমে গেলে সহনশীল হয়ে থাকে বলে বর্ষালি ধান বলে থাকে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, আউশের জাতটাকেয় স্থানীয় চাষিরা বর্ষালি ধান বলে থাকে। গত বছর জেলায় আউশ চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর। খোলা বাজারে চাল বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি। চলতি বছর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে ২.৮ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে জেলায় আউশ চাল উৎপাদন সম্ভাবনা রয়েছে ৬০ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন।

মাঠ পর্যায়ে গত ১৫ মে মাসের আগে থেকে চাষিরা জমি তৈরি করে আউশ চাষ শুরু করেছে। কোথাও চারা লাগানো শেষ হয়েছে আবার কোথাও চারা লাগানোর কাজ করছে শ্রমিকরা। চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ থেকে সাধারণ আউশ ও নেরিকা জাতের আউশ চাষি ৭ হাজার ৭০০ জনকে প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।

সরকারিভাবে আউশ চাষিদের মধ্যে বিঘা প্রতি বীজ ৫ কেজি, সার ৪০ কেজি, সেচের জন্য ৪০০ এবং নেরিকা জাতের আউশ চাষিদের জন্য বাড়তি আগাছা পরিস্কারের জন্য ৪০০ টাকা করে প্রণোদোনা প্রদান করা হয়েছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর, মহেশপাড়া, ভিকনেরপাড়া, খাবুলিয়া, সরলিয়া, মহব্বতের পাড়া, মিলনেরপাড়া, পাকুল্লা, চারালকান্দি, শ্যামপুর, সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন, শিহিপুর, জাহানেরপাড়া, বাঁশহাটা, দিঘলকান্দী, লোহাগাড়া, মূলবাড়ী, ভেলুরপাড়া, কর্পূর, বালুয়াহাট, আগুনিয়াতাইড়, মধুপুর, চরমধুপুর, হরিখালী, হাঁসরাজ, কুশাহাটা, কোড়াডাঙ্গা, চরপাড়া, সোনাকানিয়া, গোসাইবাড়ী, ঠাকুরপাড়া ও হাটকরমজা এলাকায় কৃষকদের ধান রোপনে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করতে দেখা গেছে।

এছাড়া বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিকাশি, কান্তনগর, সরুগ্রাম, জোড়শিমুল, গজারিয়া, শিমুলবাড়ি, বৈশাখী, রাধানগরসহ বিভিন্ন গ্রামে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে রোপা আউশ ধান চাষ হয়েছে। বোরো ধান ঘরে তোলার পরই রোপা-আউশ মৌসুমের ধান চাষে মাঠে নেমেছেন কৃষকেরা। সারিয়কান্দিতেও কৃষকরা জমি তৈরি করে চাষ শুরু করেছে।

প্রতিবিঘা জমি চুক্তিতে ধান রোপন করছে কৃষক। প্রতি বিঘা জমি ১৮শ’ থেকে দুই হাজার টাকা বিঘা চুক্তিতে ধান রোপণ করছে। আবার কিছু কিছু এলাকায় সাড়ে তিনশ’ থেকে চারশ’ টাকায় দিন মজুরীতে শ্রমিক সংগ্রহ করে ধান রোপণ করছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার কৃষক শামছুল আলম, নজরুল ইসলাম, তোজাম্মেল হক, আলী হাসান জানান, এবার ইরি-বোরো ধানের দাম পেয়ে বেশ খুশি তারা। তাই উঁচু নিচু জমিতে তারা আউশ ধান রোপণের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। এই ধান উৎপাদনে তেমন ব্যয় নেই। এ ফসল লাভবান। পানি খরচও খুব কম। জমি ফেলে না রেখে চাষ করলেই ফলন পাওয়া যায়। আউশ আবাদ শেষে আবার সময় মত আমন ধান চাষ করা যায়। ১০০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে আউশ ধান কাটা যায়। গত বছর খোলা বাজারে প্রতি কেজি চাল ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এবার চালের দাম এমনিতেই বেশি। সে হিসেবে আউশ ধানের দামও বেশি হবে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাহ উদ্দিন সরদার জানান, চলতি বছর বগুড়ার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে এবার ধান রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার কৃষক হাইব্রিড গোল্ড, ফলন, টিয়া, সাথী, ব্রী ধান-২৭, ব্রী ধান-২৮, ব্রী ধান ৪৮ ও ব্রী ধান-২৬ বেশি রোপণ করে থাকে। এছাড়াও আউশ এর নিরীকা জাতের ধানও রোপন করে কৃষক।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহাদুজ্জামান জানান, বোরো ও রোপা আমন মৌসুমের মাঝের ফাঁকা তিন মাসে এখানকার কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে বাড়তি ফসল হিসেবে এই ধান চাষ করে আসছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলায় এবার ২ হাজার হেক্টর জমিতে প্রাথমিক ভাবে আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষের জমি বাড়তে পারে উপজেলায়। চলতি জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আউশ আবাদ হবে। এরপর সার সেচ দিয়ে কৃষক ফলন পাওয়ার আশা করবে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, আউশ চাষে উৎসাহিত করতে সাধ্যমত কৃষককে প্রণোদোনা প্রদান করা হয়েছে। প্রণোদোনা হিসেবে বীজ, সার, সেচ, আগাছার জন্য আর্থিক সুবিধা দেয়া হয়েছে কৃষকদের। চলতি বছর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। গত বছর অর্জিত হয়েছিল ১৯৫০০ হেক্টর। এবার হেক্টর প্রতি চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে ২.৮ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে জেলায় আউশ চাল উৎপাদন সম্ভাবনা রয়েছে ৬০ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন। আবহাওয়া পক্ষে থাকলে আউশের ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বগুড়ায় আউশ চাল উৎপাদন সম্ভাবনা ৬০ হাজার মেট্রিক টন

আপডেট টাইম : ০৯:১১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০১৭

ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বোরোর ফলন ঘরে তুলেছে চাষিরা। বাজারে বোরো ধানের দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা বেশ খুশি। খুশির এই হাওয়ায় এবার বাড়তি আয়ের স্বপ্ন নিয়ে নতুন করে আউশ ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছেন বগুড়ার চাষিরা।

বোরো কাটার পর এবং আমন ধান চাষের আগে বাড়তি ফসল হিসেবে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম ও শিবগঞ্জ উপজেলায় চাষ হয়ে থাকে আউশ ধান। খরচ কম ফলন বেশি বলে আমন চাষের আগের ফাঁকা সময়ে জেলার চাষিরা আউশ চাষ করে ঘরে তোলে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলোর মধ্যে সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম ও শিবগঞ্জ উপজেলায় চাষ হয়ে থাকে আউশ ধান চাষ হয়ে থাকে বেশি। এর সাথে গাবতলী, কাহালু উপজেলাতেও কিছু কিছু করে আউশ চাষ হচ্ছে।

বোরো কাটার পর আমন চাষের আগের সময়ে প্রায় সাড়ে তিনমাস জমি পড়ে থাকে। অনেক কৃষক এই সময় জমিতে সবজির চাষ করে। আর বেশির ভাগ জমিই পড়ে থাকে। এই জমি ফেলে না রেখে চাষিরা ৩ মাস শ্রম দিয়ে বাড়তি ফসল হিসেবে আউশ চাষ করে ঘরে ফলন তোলেন।

এ ধান চাষে কৃষকের খরচ কম হয়ে থাকে। আউশ সবচেয়ে বেশি চাষ হয়ে থাকে জেলার সারিকান্দি, ধুনট, নন্দীগ্রাম ও শেরপুর উপজেলায়। সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট এলাকায় এই ধানকে বর্ষালিও বলে থাকে। বর্ষার পানি জমে গেলে সহনশীল হয়ে থাকে বলে বর্ষালি ধান বলে থাকে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, আউশের জাতটাকেয় স্থানীয় চাষিরা বর্ষালি ধান বলে থাকে। গত বছর জেলায় আউশ চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর। খোলা বাজারে চাল বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি। চলতি বছর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে ২.৮ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে জেলায় আউশ চাল উৎপাদন সম্ভাবনা রয়েছে ৬০ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন।

মাঠ পর্যায়ে গত ১৫ মে মাসের আগে থেকে চাষিরা জমি তৈরি করে আউশ চাষ শুরু করেছে। কোথাও চারা লাগানো শেষ হয়েছে আবার কোথাও চারা লাগানোর কাজ করছে শ্রমিকরা। চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ থেকে সাধারণ আউশ ও নেরিকা জাতের আউশ চাষি ৭ হাজার ৭০০ জনকে প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।

সরকারিভাবে আউশ চাষিদের মধ্যে বিঘা প্রতি বীজ ৫ কেজি, সার ৪০ কেজি, সেচের জন্য ৪০০ এবং নেরিকা জাতের আউশ চাষিদের জন্য বাড়তি আগাছা পরিস্কারের জন্য ৪০০ টাকা করে প্রণোদোনা প্রদান করা হয়েছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর, মহেশপাড়া, ভিকনেরপাড়া, খাবুলিয়া, সরলিয়া, মহব্বতের পাড়া, মিলনেরপাড়া, পাকুল্লা, চারালকান্দি, শ্যামপুর, সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন, শিহিপুর, জাহানেরপাড়া, বাঁশহাটা, দিঘলকান্দী, লোহাগাড়া, মূলবাড়ী, ভেলুরপাড়া, কর্পূর, বালুয়াহাট, আগুনিয়াতাইড়, মধুপুর, চরমধুপুর, হরিখালী, হাঁসরাজ, কুশাহাটা, কোড়াডাঙ্গা, চরপাড়া, সোনাকানিয়া, গোসাইবাড়ী, ঠাকুরপাড়া ও হাটকরমজা এলাকায় কৃষকদের ধান রোপনে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করতে দেখা গেছে।

এছাড়া বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিকাশি, কান্তনগর, সরুগ্রাম, জোড়শিমুল, গজারিয়া, শিমুলবাড়ি, বৈশাখী, রাধানগরসহ বিভিন্ন গ্রামে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে রোপা আউশ ধান চাষ হয়েছে। বোরো ধান ঘরে তোলার পরই রোপা-আউশ মৌসুমের ধান চাষে মাঠে নেমেছেন কৃষকেরা। সারিয়কান্দিতেও কৃষকরা জমি তৈরি করে চাষ শুরু করেছে।

প্রতিবিঘা জমি চুক্তিতে ধান রোপন করছে কৃষক। প্রতি বিঘা জমি ১৮শ’ থেকে দুই হাজার টাকা বিঘা চুক্তিতে ধান রোপণ করছে। আবার কিছু কিছু এলাকায় সাড়ে তিনশ’ থেকে চারশ’ টাকায় দিন মজুরীতে শ্রমিক সংগ্রহ করে ধান রোপণ করছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার কৃষক শামছুল আলম, নজরুল ইসলাম, তোজাম্মেল হক, আলী হাসান জানান, এবার ইরি-বোরো ধানের দাম পেয়ে বেশ খুশি তারা। তাই উঁচু নিচু জমিতে তারা আউশ ধান রোপণের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। এই ধান উৎপাদনে তেমন ব্যয় নেই। এ ফসল লাভবান। পানি খরচও খুব কম। জমি ফেলে না রেখে চাষ করলেই ফলন পাওয়া যায়। আউশ আবাদ শেষে আবার সময় মত আমন ধান চাষ করা যায়। ১০০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে আউশ ধান কাটা যায়। গত বছর খোলা বাজারে প্রতি কেজি চাল ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এবার চালের দাম এমনিতেই বেশি। সে হিসেবে আউশ ধানের দামও বেশি হবে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাহ উদ্দিন সরদার জানান, চলতি বছর বগুড়ার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে এবার ধান রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার কৃষক হাইব্রিড গোল্ড, ফলন, টিয়া, সাথী, ব্রী ধান-২৭, ব্রী ধান-২৮, ব্রী ধান ৪৮ ও ব্রী ধান-২৬ বেশি রোপণ করে থাকে। এছাড়াও আউশ এর নিরীকা জাতের ধানও রোপন করে কৃষক।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহাদুজ্জামান জানান, বোরো ও রোপা আমন মৌসুমের মাঝের ফাঁকা তিন মাসে এখানকার কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে বাড়তি ফসল হিসেবে এই ধান চাষ করে আসছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলায় এবার ২ হাজার হেক্টর জমিতে প্রাথমিক ভাবে আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষের জমি বাড়তে পারে উপজেলায়। চলতি জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আউশ আবাদ হবে। এরপর সার সেচ দিয়ে কৃষক ফলন পাওয়ার আশা করবে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, আউশ চাষে উৎসাহিত করতে সাধ্যমত কৃষককে প্রণোদোনা প্রদান করা হয়েছে। প্রণোদোনা হিসেবে বীজ, সার, সেচ, আগাছার জন্য আর্থিক সুবিধা দেয়া হয়েছে কৃষকদের। চলতি বছর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। গত বছর অর্জিত হয়েছিল ১৯৫০০ হেক্টর। এবার হেক্টর প্রতি চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে ২.৮ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে জেলায় আউশ চাল উৎপাদন সম্ভাবনা রয়েছে ৬০ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন। আবহাওয়া পক্ষে থাকলে আউশের ভালো ফলন পাওয়া যাবে।