জবা একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় ফুল। গোলাপী, সাদা, লাল, হলুদ ইত্যাদি নানা বর্ণের জবা পাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লাল জবা আয়ুর্বেদ ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জবা বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে। তবে শুধু স্বাস্থ্য নয়, রূপচর্চায়ও কিন্তু সমান উপকারী এই জবা। গবেষকরা বলেছেন, সুস্থতায় ভেষজ হিসেবে হিবিসকাস বা জবা ফুল সব দিক থেকে নিরাপদ। যাদের যৌনশক্তি কমে এসেছে তাদের যৌনশক্তি বাড়াতে খুবই কার্যকরী এই জবা। আবার যে কোনও ব্লাড গ্রুপের সদস্যরাও এটি খেতে পারেন। সব থেকে বড় কথা হলো- শরীরে জবার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
এবার জেনে নিন জবার আরও নানা গুণের কথা-
ঠান্ডা উপশম
জবা ফুলের ভিটামিন সি রয়েছে, যা হালকা ঠান্ডা লাগা, গলা ব্যথা বা মাথা ব্যথা সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভেষজ ওষুধ হিসেবেই জবাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া গ্রীষ্মে নিজেকে শীতল রাখতে দিনে কয়েক কাপ জবার জলই যথেষ্ট। কারণ জবার মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে।
ব্লাড প্রেসার ও কোলেস্টেরল কমাতে
উচ্চ রক্তচাপের কারণে যাঁদের ওষুধ খেতে হয়, নিয়মিত তাঁরা কয়েক কাপ করে জবা ফুলের জল খান। প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আসবে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, ফল পেতে দিনে তিন কাপ করে জবা ফুলের জল অন্তত ছ-সপ্তাহ খেয়ে যেতে হবে। আবার ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল কমাতেও জবার জুরি মেলা ভার।
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের মহাষৌধ
কার্ডিওভাসকুলার এবং সংবহনতন্ত্রের সমস্যাতেও উপকারী এই জবা ফুল। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের জন্যও এটা মহাষৌধ। আবার গলা ধরলেও খেতে পারেন, কাজ দেবে।
ব্লাড ক্যান্সার দূরে রাখে
হিবিসকাস বা জবা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এই ফুলের নির্যাসে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন লিউকেমিয়া আক্রান্ত কোষকে মেরে ফেলে।
ফ্লু তাড়ায়
২০১৬-র জুনে প্রকাশিত এক গবেষণায় জবাফুলের মধ্যে থাকা খুব শক্তিশালী অ্যান্টি-ভাইরাল এফেক্টের উল্লেখ করা হয়েছে। অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে জবাফুলের নির্যাস কার্যকরী ওষুধ।
বিপাকক্রিয়ার হার বাড়ায়
উদর স্ফীত হতে থাকলে বা শরীরে মেদ জমলে জবা ফুলের জল নিয়মিত খেতে পারেন। কারণ জবা বিপাকের গতি বাড়িয়ে শরীরে জমে থাকা ফ্যাট নষ্ট করে। কাজেই যাঁদের ফ্যাটি লিভার, নিশ্চিন্তে জবার জল পান করুন। উপকৃত হবেন। বিপাকীয় সিনড্রোমেও ভালো দাওয়াই এই জবা।
জবার গুণ কিন্তু এখানেই শেষ নয়। যাদের মাথা থেকে থেকে চক্কর মারে, চলতে ফিরতে পায়ের পেশিতে টানা ধরে, জবার জল দিনে কয়েক বার করে খেয়ে ফেলুন। উপকার ধীরে ধীরে নিজেই বুঝবেন।
প্রস্তুতি
দু-ভাবে আপনি জবা ফুল খেতে পারেন। প্রথমে কয়েক’টা জবাফুল ভালো করে ধুয়ে, সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে সেই জলটা খেতে পারেন। অথবা সকালে গরম জলে পনেরো মিনিট জবা ফুল ভিজিয়ে রেখে সেই জলটিও খেতে পারেন। এভাবে নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন।