ঢাকা ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে একযোগে কাজ করুন: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৬:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০১৭
  • ২৯১ বার

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ এবং সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।

১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ ১৬ মার্চ তিনি এক বাণীতে এ আহবান জানান।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৭ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এ মহান নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। দিবসটি উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শিশু-কিশোরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

আবদুল হামিদ বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের রূপকার বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ শৈশব থেকেই ছিলেন অত্যন্ত হৃদয়বান ও মানবদরদি। কিন্তু অধিকার আদায়ে ছিলেন আপোসহীন। স্কুল জীবন থেকেই তার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি পরিলক্ষিত হয়। চল্লিশের দশকে এই তরুণ ছাত্রনেতা হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সংস্পর্শে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬ এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে; সহ্য করতে হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো আপোস করেননি। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করে বহু কাক্সিক্ষত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। তার অসামান্য অবদানের জন্য আজ দেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। তিনি নিজগুণে ও কর্মে সমাজ, দেশ ও সমকালীন বিশ্বে চির ভাস্বর হয়ে আছেন। তিনি কেবল বাঙালির নন, বিশ্বে নিপীড়িত-শোষিত মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক, মুক্তির দূত।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের নতুন প্রজন্মকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শৈশব থেকেই তাদের মধ্যে চারিত্রিক গুণাবলীর উন্মেষ ঘটাতে হবে। জ্ঞান-গরিমা, শিক্ষা-দীক্ষা, সততা, দেশপ্রেম ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তারা যাতে নিজেদের গড়ার পাশাপাশি দেশ ও মানুষকে ভালোবাসতে শেখে এবং দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে সেভাবেই তাদেরকে গড়ে তুলতে হবে।

আবদুল হামিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালনের উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। কারণ এ দিবসটি উদ্যাপনের মধ্যদিয়ে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামীতে জাতিগঠনে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালির চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তার কর্ম ও আদর্শ জাতির মাঝে বেঁচে থাকবে চিরকাল। তিনি জাতির পিতার ৯৮তম জন্মদিবসে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে একযোগে কাজ করুন: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

আপডেট টাইম : ১২:১৬:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০১৭

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ এবং সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।

১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ ১৬ মার্চ তিনি এক বাণীতে এ আহবান জানান।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৭ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এ মহান নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। দিবসটি উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শিশু-কিশোরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

আবদুল হামিদ বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের রূপকার বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ শৈশব থেকেই ছিলেন অত্যন্ত হৃদয়বান ও মানবদরদি। কিন্তু অধিকার আদায়ে ছিলেন আপোসহীন। স্কুল জীবন থেকেই তার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি পরিলক্ষিত হয়। চল্লিশের দশকে এই তরুণ ছাত্রনেতা হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সংস্পর্শে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬ এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে; সহ্য করতে হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো আপোস করেননি। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করে বহু কাক্সিক্ষত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। তার অসামান্য অবদানের জন্য আজ দেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। তিনি নিজগুণে ও কর্মে সমাজ, দেশ ও সমকালীন বিশ্বে চির ভাস্বর হয়ে আছেন। তিনি কেবল বাঙালির নন, বিশ্বে নিপীড়িত-শোষিত মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক, মুক্তির দূত।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের নতুন প্রজন্মকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শৈশব থেকেই তাদের মধ্যে চারিত্রিক গুণাবলীর উন্মেষ ঘটাতে হবে। জ্ঞান-গরিমা, শিক্ষা-দীক্ষা, সততা, দেশপ্রেম ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তারা যাতে নিজেদের গড়ার পাশাপাশি দেশ ও মানুষকে ভালোবাসতে শেখে এবং দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে সেভাবেই তাদেরকে গড়ে তুলতে হবে।

আবদুল হামিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালনের উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। কারণ এ দিবসটি উদ্যাপনের মধ্যদিয়ে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামীতে জাতিগঠনে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালির চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তার কর্ম ও আদর্শ জাতির মাঝে বেঁচে থাকবে চিরকাল। তিনি জাতির পিতার ৯৮তম জন্মদিবসে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।