ঢাকা ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর অপপ্রচার চলছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৩৪:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭
  • ৩৪৭ বার

মহান স্বাধীনতার মাসের প্রথম দিনে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজে ‘আ.লীগের নেতৃত্বে রাজাকারের সন্তানরা!’ শিরোনামে একটি একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই সেই চিহ্নিত রাজাকারকে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ বানানোর অপপ্রচার শুরু হয়েছে।

ইতিমধ্যে সন্তানরাই নেত্রকোনা (মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুড়ি)’র স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও মোহনগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ নিজ ফেসবুকে ধরাবাহিকভাবে ‘আমার দেখা ১৯৭১’ শিরোনামে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখছেন। সেখানে তার পিতা মিরাজ আলীকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৪র্থ শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় তার নিজের অভিজ্ঞতা ও পিতার ভূমিকাও তুলে ধরছেন।

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার এই লেখাগুলো নিয়ে মোহনগঞ্জের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নেত্রকোণার মুজিব বাহিনীর কমান্ডার গোলাম এরশাদুর রহমান পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ১৯৭১ সালে স্থানীয় শীর্ষ রাজাকার মাহতাব উদ্দীনের সহযোগী হিসাবে মিরাজ আলী ওরফে মিরাজ উদ্দিন কাজ করেছেন। পাকিস্তানী সেনাদের বিভিন্ন সময় খাবারও সরবরাহ করতেন তিনি।

লোক গবেষক গোলাম এরশাদুর আরো বলেন, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কেনু মিয়া সরাসরি তাকে রাজাকার হিসাবে আটক করেছিল। হাতে পায়ে ধরে পরিবারের দোহায় দিয়ে জীবন ভিক্ষা চাওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয় ওই সময়।

এছাড়া, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বিচারের দাবিতে স্বসস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেয়া স্বপন চন্দ বলেন, মোহনগঞ্জের প্রতিটি মানুষই জানে মিরাজ আলী রাজাকার ছিলেন। এটা নিয়ে তার সন্তানরা যে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে তাতে কোন লাভ হবে না। জাতি সঠিক ইতিহাস জানে। তাদের উচিত এসব মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য প্রচার না করে জাতির কাছে পিতার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া।

15749566_1565341560147948_1777256911_nউল্লেখ্য, মোহনগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র লতিফুর রহমান রতন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধী মিরাজ আলী ওরফে মিরাজ উদ্দিনের দুই সন্তান।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের শুরুতে (২৪/ ০১/ ২০১৬ স্মারক নং-১৪৮) তারিখে ট্রাইব্যুনাল থেকে মিরাজ উদ্দিন সহ ৭ জনের তালিকা মোহনগঞ্জ থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বরাবর পাঠায়। এই তালিকার মধ্যে কেউ জীবিত আছে কিনা তা ট্রাইব্যুনালককে অবহিত করতে বলা হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানিয়েছে, এই মিরাজ উদ্দিনই একাত্তরের রাজাকার মিরাজ উদ্দিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর অপপ্রচার চলছে

আপডেট টাইম : ০১:৩৪:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭

মহান স্বাধীনতার মাসের প্রথম দিনে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজে ‘আ.লীগের নেতৃত্বে রাজাকারের সন্তানরা!’ শিরোনামে একটি একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই সেই চিহ্নিত রাজাকারকে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ বানানোর অপপ্রচার শুরু হয়েছে।

ইতিমধ্যে সন্তানরাই নেত্রকোনা (মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুড়ি)’র স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও মোহনগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ নিজ ফেসবুকে ধরাবাহিকভাবে ‘আমার দেখা ১৯৭১’ শিরোনামে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখছেন। সেখানে তার পিতা মিরাজ আলীকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৪র্থ শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় তার নিজের অভিজ্ঞতা ও পিতার ভূমিকাও তুলে ধরছেন।

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার এই লেখাগুলো নিয়ে মোহনগঞ্জের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে নেত্রকোণার মুজিব বাহিনীর কমান্ডার গোলাম এরশাদুর রহমান পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ১৯৭১ সালে স্থানীয় শীর্ষ রাজাকার মাহতাব উদ্দীনের সহযোগী হিসাবে মিরাজ আলী ওরফে মিরাজ উদ্দিন কাজ করেছেন। পাকিস্তানী সেনাদের বিভিন্ন সময় খাবারও সরবরাহ করতেন তিনি।

লোক গবেষক গোলাম এরশাদুর আরো বলেন, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কেনু মিয়া সরাসরি তাকে রাজাকার হিসাবে আটক করেছিল। হাতে পায়ে ধরে পরিবারের দোহায় দিয়ে জীবন ভিক্ষা চাওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয় ওই সময়।

এছাড়া, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বিচারের দাবিতে স্বসস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেয়া স্বপন চন্দ বলেন, মোহনগঞ্জের প্রতিটি মানুষই জানে মিরাজ আলী রাজাকার ছিলেন। এটা নিয়ে তার সন্তানরা যে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে তাতে কোন লাভ হবে না। জাতি সঠিক ইতিহাস জানে। তাদের উচিত এসব মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য প্রচার না করে জাতির কাছে পিতার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া।

15749566_1565341560147948_1777256911_nউল্লেখ্য, মোহনগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র লতিফুর রহমান রতন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধী মিরাজ আলী ওরফে মিরাজ উদ্দিনের দুই সন্তান।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের শুরুতে (২৪/ ০১/ ২০১৬ স্মারক নং-১৪৮) তারিখে ট্রাইব্যুনাল থেকে মিরাজ উদ্দিন সহ ৭ জনের তালিকা মোহনগঞ্জ থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বরাবর পাঠায়। এই তালিকার মধ্যে কেউ জীবিত আছে কিনা তা ট্রাইব্যুনালককে অবহিত করতে বলা হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানিয়েছে, এই মিরাজ উদ্দিনই একাত্তরের রাজাকার মিরাজ উদ্দিন।