মাকামে ইবরাহিমের পরিচয়
মাকামে ইবরাহিম মূলত সেই সম্মানিত পাথর, যার ওপর দাঁড়িয়ে তিনি কাবাঘর নির্মাণ করেন; বিশেষত যখন কাবাঘরের দেয়ালের ওপরের অংশ গাঁথতে হয়েছিল।
মাকামে ইবরাহিমের পরিচয়
মাকামে ইবরাহিম মূলত সেই সম্মানিত পাথর, যার ওপর দাঁড়িয়ে তিনি কাবাঘর নির্মাণ করেন; বিশেষত যখন কাবাঘরের দেয়ালের ওপরের অংশ গাঁথতে হয়েছিল।
মাকামে ইবরাহিমের ওপর দুটি পায়ের ছাপ রয়েছে। ইমাম তাবারি (রহ.) বলেন, আল্লাহ মক্কা নগরীতে ইবরাহিম (আ.)-এর একাধিক স্মৃতি সংরক্ষণ করেছেন। তার একটি হলো সেই পাথর, যার ওপর ইবরাহিম (আ.) দাঁড়িয়ে ছিলেন। (তাফসিরে তাবারি : ৪/১১)
আল্লামা ইবনুল জাওজি (রহ.) লেখেন, ‘ইবরাহিম (আ.)-এর পায়ের চিহ্ন এখনো মাকামে সংরক্ষিত আছে। হেরেমের অধিবাসীরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত।
আল্লাহ মাকামে ইবরাহিমকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। যার কয়েকটি হলো—
১. আল্লাহর নিদর্শন : পবিত্র কোরআনে মাকামে ইবরাহিম আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তাতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে, যেমন মাকামে ইবরাহিম। আর যে ব্যক্তি সেখানে প্রবেশ করে সে নিরাপদ।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৭)
২. নামাজের স্থান : পবিত্র কোরআনে মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থান বানানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থান হিসেবে গ্রহণ করো।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১২৫)
এ বিষয়ে ওমর (রা.) বলেন, তিনটি বিষয়ে আমার মতামত আল্লাহর ওহির অনুরূপ হয়েছে। তা হলো আমি বলেছিলাম হে আল্লাহর রাসুল! যদি আপনি মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থান হিসেবে গ্রহণ করতেন। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করলেন, তোমরা ইবরাহিমের দাঁড়ানোর জায়গাকে নামাজের জায়গারূপে গ্রহণ করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৪৮৩)
৩. তাওয়াফের পর নামাজ : তাওয়াফের পর মাকামে ইবরাহিমকে সামনে রেখে নামাজ আদায় করা সুন্নত। ইবনে ওমর (রহ.) বলেন, ‘যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কায় আগমন করেন, তখন তিনি সাতবার তাওয়াফ করেন এবং মাকামে ইবরাহিমের পেছনে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৯৩০)
৪. হজের ঘোষণার স্থান : পবিত্র কাবাঘরের নির্মাণ কাজ শেষ হলে আল্লাহ ইবরাহিম (আ.)-কে মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা দেওয়ার নির্দেশ দেন। যার বর্ণনা সুরা হজের ২৭ নং আয়াতে রয়েছে। নির্দেশ অনুসারে ইবরাহিম (আ.) হজের ঘোষণা দেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ইবরাহিম (আ.) পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিলেন, হে মানবজাতি! তোমাদের ওপর হজ ফরজ করা হয়েছে। এই আহবান পুরুষের মেরুদণ্ড এবং নারীর জরায়ুতে বিদ্যমান সব ব্যক্তি শুনতে পায়। যারা মুমিন এবং যারা হজ করবে বলে আল্লাহর জ্ঞানে ছিল তারা ‘লাব্বাইক’ বলে সাড়া দেয়। (ফাতহুল বারি : ৬/৪০৬)
আল্লাহ সবাইকে কবুল হজের তাওফিক দিন। আমিন।