ঢাকা ০৪:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাতক্ষীরায় বেড়েছে নদ-নদীর পানি, আতঙ্কে বাসিন্দারা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৪:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪
  • ১৬ বার

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে গতকাল শনিবার রাত থেকে সাতক্ষীরায় মৃদু ঝড়ো বাতাসসহ মাঝে মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়িবাঁধের ওপর বসবাসকারীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, তাদের দুটি বিভাগের আওতাধীন ৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। যা ষাটের দশকে নির্মিত। এর মধ্যে উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির ১০টি পয়েন্টে ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অতিঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল-এর প্রভাবে উপকূলের নদ-নদীগুলোর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তে শুরু করেছে। ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে উপকূলের জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধের ওপর আছড়ে পড়ছে পানির স্রোত।

শ্যামনগরের উপকূলবর্তী গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম জানান, তার ইউনিয়নে অন্তত ৮টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে হরিষখালী, পার্শেমারী, খলষিবুনিয়া, লেবুবুনিয়াসহ ৫টি স্থানে বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে আছে।

তিনি আরও জানান, প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দুর্বল বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলবাসীর ভরসারস্থল বেড়িবাঁধ। সেই বেড়িবাঁধ দুর্বল থাকায় স্থানীয়দের মনে শঙ্কা বাড়ছে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম বলেন, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী মজুত আছে। আমরা ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা দেখে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করব। সবার জন্য বলব, কেউ যেন ঝুঁকি নিয়ে অনিরাপদ আশ্রয়ে না থাকেন।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলী রিপন বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রেমালে রূপ নিয়েছে। ঝড়টি এখন উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ১০ নম্বার মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপাতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় ইতোমধ্যে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় সব সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ চিহ্নিত করে বালি ও জিও ব্যাগ দিয়ে সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। ঝুঁকিপুর্ণ এলাকার আশ্রায়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় ১৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ৮৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে। এছাড়া ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি কাজে অংশগ্রহণের জন্য। এছাড়া, জরুরি ত্রাণ কাজে ব্যবহারের জন্য ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা  রাখা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সাতক্ষীরায় বেড়েছে নদ-নদীর পানি, আতঙ্কে বাসিন্দারা

আপডেট টাইম : ১০:৪৪:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে গতকাল শনিবার রাত থেকে সাতক্ষীরায় মৃদু ঝড়ো বাতাসসহ মাঝে মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়িবাঁধের ওপর বসবাসকারীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, তাদের দুটি বিভাগের আওতাধীন ৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। যা ষাটের দশকে নির্মিত। এর মধ্যে উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির ১০টি পয়েন্টে ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অতিঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল-এর প্রভাবে উপকূলের নদ-নদীগুলোর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তে শুরু করেছে। ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে উপকূলের জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধের ওপর আছড়ে পড়ছে পানির স্রোত।

শ্যামনগরের উপকূলবর্তী গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম জানান, তার ইউনিয়নে অন্তত ৮টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে হরিষখালী, পার্শেমারী, খলষিবুনিয়া, লেবুবুনিয়াসহ ৫টি স্থানে বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে আছে।

তিনি আরও জানান, প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দুর্বল বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলবাসীর ভরসারস্থল বেড়িবাঁধ। সেই বেড়িবাঁধ দুর্বল থাকায় স্থানীয়দের মনে শঙ্কা বাড়ছে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম বলেন, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী মজুত আছে। আমরা ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা দেখে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করব। সবার জন্য বলব, কেউ যেন ঝুঁকি নিয়ে অনিরাপদ আশ্রয়ে না থাকেন।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলী রিপন বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রেমালে রূপ নিয়েছে। ঝড়টি এখন উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ১০ নম্বার মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপাতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় ইতোমধ্যে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় সব সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ চিহ্নিত করে বালি ও জিও ব্যাগ দিয়ে সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। ঝুঁকিপুর্ণ এলাকার আশ্রায়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় ১৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ৮৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে। এছাড়া ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি কাজে অংশগ্রহণের জন্য। এছাড়া, জরুরি ত্রাণ কাজে ব্যবহারের জন্য ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা  রাখা হয়েছে।