ঢাকা ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শোষক আর শোষিতের সম্পর্কটা নিপীড়নের, ভালোবাসার নয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৫৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০১৭
  • ৩৬৬ বার

রাখী নাহিদ

– আপু খুবই খারাপ আছি
– কেন??
– দাম্পত্য
– বর কি বোরিং ??
– সে বরই না সে ডিক্টেটর!!
– আন্দোলন করেন
– ক্ষমতায় সমতা না থাকলে আন্দোলনে লাভ হয়না!! আমার অবস্থা বিরোধী দলীয় নেতার মতো!! মুখই খুলতে পারি না!!

‘পাওয়ার,পজিশন,ডিক্টেটরশিপ ’ শব্দগুলো খুবই রাজনৈতিক কিন্তু মাঝে মাঝে দাম্পত্য জীবনের এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়! যদিও দাম্পত্য ও রাজনীতির মধ্যে দূর দূর কা কোই রিস্তা নেহি!! একেবারে অপোজিট বলা যায়।

জিনিসটাকে এইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়- রাজনীতিতে ভালোবাসার কোনো স্থান নাই, আর ভালোবাসায় রাজনীতির কোনো স্থান নাই!! এই জিনিস একটু এদিক ওদিক হলেও ভরাডুবির বিরাট সম্ভাবনা!!

তাই পাওয়ার পজিশন এর অপব্যবহার করার ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী দুইজনেরই একটু সতর্ক থাকা উচিত!!

যে দাম্পত্যে এর ডিস্ট্রিবিউশন আমাদের দেশের সরকার এবং বিরোধী দলের মত, বুঝতে হবে সেই দাম্পত্য লুজ লুজ সিচুয়েশনে আছে!! কারোই জেতার কোনো সম্ভাবনা নাই!!

দাম্পত্য অনেকটা ডাবলস খেলাগুলোর মতো!! দুইজন সেইম লেভেলের প্লেয়ার খেলে!! দুজন মিলেই গেইমটাকে জিতিয়ে দিতে হয়!!

আমাদের দেশে অধিকাংশ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এই পাওয়ার এবং পজিশন নিয়ে একটা কনফ্লিক্ট আছে!! প্রায়শই দেখা যায় স্বামী অথবা স্ত্রীর মধ্যে একজন ডিক্টেটরশিপ এ চলে যায়!! এবং যেহেতু আমাদের সমাজে টাকা যার কাছে থাকে পাওয়ারও তার কাছে থাকে সেই নীতিতে ছেলেরাই সেই প্রিভিলেজড জায়গাটাতে থাকে!!

বিয়ের পর কিছুদিন সমতা থাকে অনেক ব্যাপারেই!! কারণ তখন স্বামী স্ত্রী একটা ঘোরের মধ্যে থাকে!! নতুন মানুষ ,নতুন পরিচয়,দুইজন দুইজনের কলিজার টুকরা,নয়নের মনি অবস্থায় থাকে!! মনে হয় এই লোক/মহিলা বললে বিনা বাক্য ব্যয়ে বিষও খেয়ে ফেলা যায়!!কয়েক বছর পর যখন একজন আরেকজনের সামনে স্বরূপে আবির্ভূত হয়,তখন মনে হয় ইস এরে যদি বিষ খাওয়াইয়া মাইরা ফেলতে পারতাম!! তাও আবার যেন যেন বিষ না,ইঁদুর মারা বিষ!!

কারণ, হামনিমুন পিরিয়ড শেষ হবার পরেই তাদের মধ্যে সেন্স অফ ইন্ডিভিজ্যুয়ালিটি জেগে উঠতে থাকে!! তাদের ভেতর আমার জীবন,আমার পছন্দ,আমার স্পেস,আমার ফ্রিডম,শব্দগুলো ঘুরপাক খেতে থেকে!! যদি দুইজনের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং, ব্যালান্স, সেন্স অফ ইক্যুয়ালিটি থাকে তাহলে তো কোনো ঝামেলায় নেই তবে না থাকলে ক্রাইসিস,এংজাইটি, ডিপ্রেশন এবং এরপর হয়তো আরো বড় কিছু!!

দাম্পত্যে কম্প্যাটিবিলিটি থাকাটা খুবই জরুরি!!একজন সুপেরিওরিটি কমপ্লেক্স এ ভোগ একজন ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগা মানুষ কখনোই কম্প্যাটিবল হতে পারে না!! স্বভাবতই তাদের মধ্যে একজন সংসারের সব বিষয়ে নিজের সমস্ত মতামত এস্টাব্লিশ করে অপরজন কথা বলার স্বাধীনতাটুকুও হারায়!!

আমরা ব্যালেন্স বুঝি না, আমরা বুঝিনা কোথায় থামতে হয়!! আমরা বুঝিনা আমরা পৃথিবীর যাবতীয় ব্যাপার কন্ট্রোল করতে পারলেও মানুষের মন কে কন্ট্রোল করার কোনো বিজ্ঞান এখনো আবিষ্কার হয়নি!! আমরা বুঝিনা মন না থাকলে সহবাস মাঝে মাঝে হলেও সংযোগটা কখনো হয়না!!

আমরা বুঝিনা, শোষক আর শোষিতের মধ্যে সম্পর্টা হয় নিপীড়ণের,ভালোবাসার নয়……………..

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শোষক আর শোষিতের সম্পর্কটা নিপীড়নের, ভালোবাসার নয়

আপডেট টাইম : ১২:৫৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০১৭

রাখী নাহিদ

– আপু খুবই খারাপ আছি
– কেন??
– দাম্পত্য
– বর কি বোরিং ??
– সে বরই না সে ডিক্টেটর!!
– আন্দোলন করেন
– ক্ষমতায় সমতা না থাকলে আন্দোলনে লাভ হয়না!! আমার অবস্থা বিরোধী দলীয় নেতার মতো!! মুখই খুলতে পারি না!!

‘পাওয়ার,পজিশন,ডিক্টেটরশিপ ’ শব্দগুলো খুবই রাজনৈতিক কিন্তু মাঝে মাঝে দাম্পত্য জীবনের এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়! যদিও দাম্পত্য ও রাজনীতির মধ্যে দূর দূর কা কোই রিস্তা নেহি!! একেবারে অপোজিট বলা যায়।

জিনিসটাকে এইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়- রাজনীতিতে ভালোবাসার কোনো স্থান নাই, আর ভালোবাসায় রাজনীতির কোনো স্থান নাই!! এই জিনিস একটু এদিক ওদিক হলেও ভরাডুবির বিরাট সম্ভাবনা!!

তাই পাওয়ার পজিশন এর অপব্যবহার করার ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী দুইজনেরই একটু সতর্ক থাকা উচিত!!

যে দাম্পত্যে এর ডিস্ট্রিবিউশন আমাদের দেশের সরকার এবং বিরোধী দলের মত, বুঝতে হবে সেই দাম্পত্য লুজ লুজ সিচুয়েশনে আছে!! কারোই জেতার কোনো সম্ভাবনা নাই!!

দাম্পত্য অনেকটা ডাবলস খেলাগুলোর মতো!! দুইজন সেইম লেভেলের প্লেয়ার খেলে!! দুজন মিলেই গেইমটাকে জিতিয়ে দিতে হয়!!

আমাদের দেশে অধিকাংশ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এই পাওয়ার এবং পজিশন নিয়ে একটা কনফ্লিক্ট আছে!! প্রায়শই দেখা যায় স্বামী অথবা স্ত্রীর মধ্যে একজন ডিক্টেটরশিপ এ চলে যায়!! এবং যেহেতু আমাদের সমাজে টাকা যার কাছে থাকে পাওয়ারও তার কাছে থাকে সেই নীতিতে ছেলেরাই সেই প্রিভিলেজড জায়গাটাতে থাকে!!

বিয়ের পর কিছুদিন সমতা থাকে অনেক ব্যাপারেই!! কারণ তখন স্বামী স্ত্রী একটা ঘোরের মধ্যে থাকে!! নতুন মানুষ ,নতুন পরিচয়,দুইজন দুইজনের কলিজার টুকরা,নয়নের মনি অবস্থায় থাকে!! মনে হয় এই লোক/মহিলা বললে বিনা বাক্য ব্যয়ে বিষও খেয়ে ফেলা যায়!!কয়েক বছর পর যখন একজন আরেকজনের সামনে স্বরূপে আবির্ভূত হয়,তখন মনে হয় ইস এরে যদি বিষ খাওয়াইয়া মাইরা ফেলতে পারতাম!! তাও আবার যেন যেন বিষ না,ইঁদুর মারা বিষ!!

কারণ, হামনিমুন পিরিয়ড শেষ হবার পরেই তাদের মধ্যে সেন্স অফ ইন্ডিভিজ্যুয়ালিটি জেগে উঠতে থাকে!! তাদের ভেতর আমার জীবন,আমার পছন্দ,আমার স্পেস,আমার ফ্রিডম,শব্দগুলো ঘুরপাক খেতে থেকে!! যদি দুইজনের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং, ব্যালান্স, সেন্স অফ ইক্যুয়ালিটি থাকে তাহলে তো কোনো ঝামেলায় নেই তবে না থাকলে ক্রাইসিস,এংজাইটি, ডিপ্রেশন এবং এরপর হয়তো আরো বড় কিছু!!

দাম্পত্যে কম্প্যাটিবিলিটি থাকাটা খুবই জরুরি!!একজন সুপেরিওরিটি কমপ্লেক্স এ ভোগ একজন ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগা মানুষ কখনোই কম্প্যাটিবল হতে পারে না!! স্বভাবতই তাদের মধ্যে একজন সংসারের সব বিষয়ে নিজের সমস্ত মতামত এস্টাব্লিশ করে অপরজন কথা বলার স্বাধীনতাটুকুও হারায়!!

আমরা ব্যালেন্স বুঝি না, আমরা বুঝিনা কোথায় থামতে হয়!! আমরা বুঝিনা আমরা পৃথিবীর যাবতীয় ব্যাপার কন্ট্রোল করতে পারলেও মানুষের মন কে কন্ট্রোল করার কোনো বিজ্ঞান এখনো আবিষ্কার হয়নি!! আমরা বুঝিনা মন না থাকলে সহবাস মাঝে মাঝে হলেও সংযোগটা কখনো হয়না!!

আমরা বুঝিনা, শোষক আর শোষিতের মধ্যে সম্পর্টা হয় নিপীড়ণের,ভালোবাসার নয়……………..