ঢাকা ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীর ৪৮ মিনিটের বক্তব্যে শিক্ষকদের দাবি নিয়ে কোনো কথা বললেন না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:০০:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
  • ৩৩৫ বার

বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী। তার বক্তব্যের আগে নানা দাবি তুললেন শিক্ষক নেতারা। এরপর মন্ত্রীর তার বক্তব্যে তার মন্ত্রণালয়ের বাইরে গিয়ে স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ উন্নয়ন, ভিশন টোয়েন্টি টোয়েন্টি ওয়ানসহ কথা বললেন নানা বিষয় নিয়ে। সব মিলিয়ে ৪৮ মিনিট। কিন্তু বলতে গেলে তেমন কিছুই বললেন না তার নিজের মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে।

শনিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির (বাকশিস) জাতীয় সম্মেলনে যোগ দেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানে শিক্ষকদের দাবি নিয়ে কোনো কথা না বলায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতিরও তৈরি হয়। হৈ চৈও হয় সম্মেলনে।

এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বর্তমান সময়ের একটি আলোচিত বিষয়। মোবাইল ফোন অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপে বিনামূল্যে ছড়ানো হচ্ছে প্রশ্ন। একবার মন্ত্রী বলেছিলেন, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণ হলে বাতিল হবে গণিত পরীক্ষা। তার এই বক্তব্যের পর পরই হোয়াটস অ্যাপে ছড়ানো শারীরিক শিক্ষা বিভাগের প্রশ্ন আর পরীক্ষায় দেয়া প্রশ্নেও মিল পাওয়া গেছে হুবহু।

এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্যই পাওয়া যায়নি শিক্ষামন্ত্রীর। শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে তিনি এ নিয়ে বলবেন, ধারণা ছিল গণমাধ্যমকর্মীদের। কিন্তু বিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে গেলেন তিনি। সম্মেলন শেষেও কখনও কখনও মন্ত্রীরা কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তবে এই অনুষ্ঠানে পাওয়া যায়নি সে সুযোগও।

শিক্ষক নেতাদের দাবি ছিল মেলা। তবে তাদের বিষয়েও কিছুই বলেননি মন্ত্রী। এ সময় হৈ চৈ করে উঠেন শিক্ষকরা। এসময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছ থেকে শিখতে আসছি। বক্তব্য দেয়ার সময় যে চিল্লাচিল্লি করতে হয় তা শিখে গেলাম। দেশের উন্নয়নের কথা শুনতে আপনাদের ভাল লাগে না।’

এর আগে সম্মেলনের মঞ্চেও কলেজ শিক্ষক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা কাজী ফারুক আহমদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরেন শিক্ষামন্ত্রী।

আর সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছি, আপনারা অধৈর্য্য হয়ে গেছেন আমার কথা শুনে। আমি খুবই দুঃখিত যে, আপনাদের কষ্ট দিলাম। আমি এটা বুঝতে পারিনি। আমি অন্য জায়গায় চলে গেছি। আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আপনারা ভাল থাকেন।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যা বলেছেন আমি সবটা লিখে নিয়ে গেছে। আপনারা সম্মেলন করে পর্যালোচনা করে লিখিতভাবে আমাকে দেবেন। সেটা নিয়ে আপনাদের সঙ্গে বসবো, আলাপ-আলোচনা করবো, কি করা যায়।’

শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য শেষে কাজী ফারুক আহমদ শিক্ষকদের বলেন, ‘আপনারা শান্ত হন। আমি শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য বুঝতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য পজেটিভ।’

সম্মেলনে শিক্ষক নেতাদের পক্ষ থেকে প্রধান দাবি ছিল সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে কলেজ শিক্ষা জাতীয়করণ করতে হবে। সরকারি কলেজের মতই বেসরকারি কলেজগুলোতেও অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক পদে পদন্নোতির ব্যবস্থা করতে হবে। অধ্যক্ষের নেতৃত্বে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ গঠন। সেই সঙ্গে বছরে মূল বেতনের পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দাবি আছে তাদের। আরও আছে উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, বাড়িভাড়া পূর্ণাঙ্গ প্রদান।

সংগঠনের সভাপতি আসাদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুন নবী চৌধুরী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি আজিজুল ইসলাম, কারিগরি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীর ৪৮ মিনিটের বক্তব্যে শিক্ষকদের দাবি নিয়ে কোনো কথা বললেন না

আপডেট টাইম : ০৯:০০:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৭

বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী। তার বক্তব্যের আগে নানা দাবি তুললেন শিক্ষক নেতারা। এরপর মন্ত্রীর তার বক্তব্যে তার মন্ত্রণালয়ের বাইরে গিয়ে স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ উন্নয়ন, ভিশন টোয়েন্টি টোয়েন্টি ওয়ানসহ কথা বললেন নানা বিষয় নিয়ে। সব মিলিয়ে ৪৮ মিনিট। কিন্তু বলতে গেলে তেমন কিছুই বললেন না তার নিজের মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে।

শনিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির (বাকশিস) জাতীয় সম্মেলনে যোগ দেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানে শিক্ষকদের দাবি নিয়ে কোনো কথা না বলায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতিরও তৈরি হয়। হৈ চৈও হয় সম্মেলনে।

এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বর্তমান সময়ের একটি আলোচিত বিষয়। মোবাইল ফোন অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপে বিনামূল্যে ছড়ানো হচ্ছে প্রশ্ন। একবার মন্ত্রী বলেছিলেন, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণ হলে বাতিল হবে গণিত পরীক্ষা। তার এই বক্তব্যের পর পরই হোয়াটস অ্যাপে ছড়ানো শারীরিক শিক্ষা বিভাগের প্রশ্ন আর পরীক্ষায় দেয়া প্রশ্নেও মিল পাওয়া গেছে হুবহু।

এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্যই পাওয়া যায়নি শিক্ষামন্ত্রীর। শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে তিনি এ নিয়ে বলবেন, ধারণা ছিল গণমাধ্যমকর্মীদের। কিন্তু বিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে গেলেন তিনি। সম্মেলন শেষেও কখনও কখনও মন্ত্রীরা কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তবে এই অনুষ্ঠানে পাওয়া যায়নি সে সুযোগও।

শিক্ষক নেতাদের দাবি ছিল মেলা। তবে তাদের বিষয়েও কিছুই বলেননি মন্ত্রী। এ সময় হৈ চৈ করে উঠেন শিক্ষকরা। এসময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছ থেকে শিখতে আসছি। বক্তব্য দেয়ার সময় যে চিল্লাচিল্লি করতে হয় তা শিখে গেলাম। দেশের উন্নয়নের কথা শুনতে আপনাদের ভাল লাগে না।’

এর আগে সম্মেলনের মঞ্চেও কলেজ শিক্ষক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা কাজী ফারুক আহমদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরেন শিক্ষামন্ত্রী।

আর সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বুঝতে পেরেছি, আপনারা অধৈর্য্য হয়ে গেছেন আমার কথা শুনে। আমি খুবই দুঃখিত যে, আপনাদের কষ্ট দিলাম। আমি এটা বুঝতে পারিনি। আমি অন্য জায়গায় চলে গেছি। আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আপনারা ভাল থাকেন।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যা বলেছেন আমি সবটা লিখে নিয়ে গেছে। আপনারা সম্মেলন করে পর্যালোচনা করে লিখিতভাবে আমাকে দেবেন। সেটা নিয়ে আপনাদের সঙ্গে বসবো, আলাপ-আলোচনা করবো, কি করা যায়।’

শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য শেষে কাজী ফারুক আহমদ শিক্ষকদের বলেন, ‘আপনারা শান্ত হন। আমি শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য বুঝতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য পজেটিভ।’

সম্মেলনে শিক্ষক নেতাদের পক্ষ থেকে প্রধান দাবি ছিল সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে কলেজ শিক্ষা জাতীয়করণ করতে হবে। সরকারি কলেজের মতই বেসরকারি কলেজগুলোতেও অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক পদে পদন্নোতির ব্যবস্থা করতে হবে। অধ্যক্ষের নেতৃত্বে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ গঠন। সেই সঙ্গে বছরে মূল বেতনের পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দাবি আছে তাদের। আরও আছে উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, বাড়িভাড়া পূর্ণাঙ্গ প্রদান।

সংগঠনের সভাপতি আসাদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুন নবী চৌধুরী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি আজিজুল ইসলাম, কারিগরি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী প্রমুখ।