জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ছাতিনালী গ্রামের আব্দুর রউফ আকন্দ (ময়েজ) মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেও পাননি সরকারি স্বীকৃতি।
এ বিষয়ে ময়েজ আকন্দ আক্ষেপের সাথে বলেন, “দেশ স্বাধীন করার জন্য ভারতে গিয়ে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতাসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করলেও সব কিছু থেকে আমি বঞ্চিত হচ্ছি”।
বর্তমানে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ৪ মেয়ে, ২ ছেলেসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সরকার চাকরির সুযোগ পেলেও তার সন্তানরা রয়ে গেছেন বঞ্চিত। বড় ছেলে সাইকেলে চেপে পশু চিকিৎসা করে, ছোট ছেলে দিন মজুরের কাজ করে। বড় তিন মেয়েকে অনেক কষ্টে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ছোট মেয়ে বিএ পাশ করে রয়ে গেছেন বেকার, টাকার অভাবে চাকরি কিংবা বিয়ে কোনটাই দিতে সমর্থ নন তার অসহায় পিতা মুক্তিযোদ্ধা ময়েজ আকন্দ।
এ ব্যাপারে ছাতিনালী শিব মন্দিরের পুরোহিত অরবিন্দ বলেন, “৭১ সালে পাকিস্তানিদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে সব ফেলে ভারতে আশ্রয় নিতে গেলে ময়েজ কাকা আমাদেরকে শরণার্থী শিবিরে নিয়ে যান। দেশ স্বাধীন হলে আবার তিনিই আমাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন এবং নিজের খরচে আমাদের আগুনে পুড়ে দেওয়া বাড়িঘর পুনরায় তৈরি করে দেন”।
এছাড়া, এলাকায় সমাজসেবী হিসেবেও ময়েজ আকন্দের সুখ্যাতি রয়েছে। বিভিন্ন সময় এলাকার মানুষের বিপদ-আপদে তাদের পাশে থেকেছেন তিনি। এলাকাবাসী জানান, ৯৫ এর বন্যায় এলাকার বন্যার্ত মানুষদের সর্বাত্মক সহায়তা করেছেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
এক সময় সামর্থ্যবান হিসেবে পরিচিত এই মুক্তিযোদ্ধা কালের নির্মম পরিহাসে আজ হতদরিদ্র। সমাজসেবী এই মানুষটি নিজেই আজ ভাগ্যবিড়ম্বিত ও অবহেলিত।
মহান মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সেনা অচিরেই রাষ্ট্রের কাছ থেকে তার প্রাপ্য সম্মান ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাবেন বলে আশা করেন এলাকাবাসী।