পরিবেশ বান্ধব ও রোগ প্রতিরোধী বিদেশি সবজি টমাটিলোর সফল অভিযোজন সম্পন্ন করেছেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালযের গবেষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপিকা ড. নাহিদ জেবার নেতৃত্বে গবেষক দল এ সাফল্য অর্জন করেন।
অধ্যাপিকা ড. নাহিদ জেবা বলেন, ২০১২ সালে মেক্সিকো থেকে টমাটিলো আনা হয় এবং ২০১৩ সালে অভিযোজনের জন্য গবেষণা শুরু হয়। এটি সোলানেসি গোত্রের একটি সবজি যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘ফাইসালিস ইক্সোকারপা’। এটি ইক্সোকারপাল্যাকটিন সমৃদ্ধ। যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। উচ্চমাত্রার পেকটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি ডায়রিয়া প্রতিরোধী ভূমিকা রাখে। এছাড়াও টমাটিলো ডায়াবেটিস প্রতিরোধক হিসেবেও কাজ করে।
তিনি আরো বলেন, আমরা দুই প্রজাতির টমাটিলোর অভিযোজন সম্পন্ন করেছি। সাউ টমাটিলো-১ যা দেখতে সবুজ এবং সাউ টমাটিলো-২ যা দেখতে বেগুনি রঙ্গের। রঙ্গিন হওয়ায় এসব সবজি এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও উচ্চমাত্রার পেকটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি গ্লুকোজ শোষন করে। এমনকি নিম্ন-কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফ্লাভিনয়েড থাকায় ফুসফুস ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
ড. নাহিদ জেবা বলেন, সাধারন টমেটোর চেয়ে টমাটিলোতে প্রায় এক মাস আগে ফুল আসে এবং অল্প সময়ে উচ্চ মাত্রার ফলন পাওয়া যায়। তাই এটি মধ্যবর্তী ফসল হিসেবেও চাষ করা যায়। তিনি আরো বলেন, এই সবজির বাইরে আবরণ থাকায় পাখি, পোকামাকড় আক্রমণ করতে পারে না। এমনকি কোনো ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক আক্রমণ করে না। ফলে কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। একই পরিমাণ খরচ করে টমেটোর চেয়ে বেশি ফলন পাওয়া যায়।
গবেষনায় দেখা যায় হেক্টর প্রতি প্রায় ৭০ টন টমাটিলো উৎপাদন হয়। যা মেক্সিকোতে ফলনের(২৫ টন) প্রায় তিন গুন। কৃষক পর্যায়ে চাষের জন্য বিএডিসি, ডিএই, এগ্রো ফার্ম এসব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে।
অধ্যাপিকা ড. নাহিদ জেবা বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে টমেটো ও টমাটিলোর সংকরায়নের মাধ্যমে উন্নত জাতের সবজি উদ্ভাবনে গবেষণা শুরু হবে।