রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরণে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে পারে সে ব্যাপারে মনোযোগী হতে সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
সোমবার গাজীপুরে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) পঞ্চম সমাবর্তন ভাষণে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ জ্ঞানদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিকশিত করে তোলাই শিক্ষার প্রকৃত কাজ। শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপশি সম্মিলিতভাবে মান নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি গুণগত শিক্ষার ওপর সমধিক গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার হার ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এটা অত্যন্ত আশাপ্রদ বিষয়। তবে মনে রাখতে হবে, পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক কথা নয়।’ সমাবর্তনে উপস্থিত নানা বয়সী ডিগ্রিধারীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শিক্ষা আর অভিজ্ঞতার সমন্বয়েই জীবনে পরিপূর্ণতা আসে। উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য কেবল ডিগ্রি অর্জন নয়, চাকরি বা কর্মজীবনে ভালো উপার্জন নয়- প্রকৃত অর্থে একজন পরিপূর্ণ আদর্শ মানুষ হওয়া, যেখানে জ্ঞানের প্রবহমান ধারার সাথে নৈতিকতা, আদর্শ ও দেশপ্রেমের মতো গুণাবলীর প্রতিফলন ঘটবে।’
শিক্ষার্থীদের দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান দিতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য মো. আবদুল হামিদ।
সমাবর্তনে মোট পাঁচ হাজার ১০ জন ছাত্র-ছাত্রী ডিগ্রি গ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যে সীমিত না থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রকৃত জ্ঞানচর্চার শ্রেষ্ঠ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সবাইকে দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধ থেকে নিজ নিজ অঙ্গনকে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার পরিপূর্ণ ক্ষেত্রে পরিণত করার আহ্বান জানান তিনি।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পদ্ধতির প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নানা কারণে শিক্ষার সুযোগ-বঞ্চিত ও প্রচলিত পদ্ধতিতে লেখাপড়ার সুযোগ হারানো অনেক মানুষের শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।’
সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম এ মান্নানও বক্তৃতা করেন। এতে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন কমনওয়েল্থ অব লার্নিংয়ের প্রেসিডেন্ট ও সিইও অধ্যাপক আশা কানওয়ার।