ডিসেম্বরে অবসরে যাচ্ছেন সাত সচিব

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশাসনের আট প্রভাবশালী সচিবের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ তালিকায় রয়েছেন জনপ্রশাসন, তথ্য, বিদ্যুৎ, পরিকল্পনা বিভাগ, খাদ্য, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব।

এ ছাড়া অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) বাতিল করে ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১ ডিসেম্বর।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কামাল আবদুল নাসেরের স্বাভাবিক চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও তাকে প্রধানমন্ত্রীর কার‌্যালয়ের মুখ্য সচিব হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বর্তমান মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে মুখ্য সচিব পদে নিয়োগ দিতে সারসংক্ষেপ তৈরি হয়েছে। রবিবার এ ব্যাপারে আদেশ হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর তার অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়ার কথা ছিল। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে তাকে মুখ্য সচিব করা হচ্ছে।

আর তার জায়গায় নিয়োগ পেতে পারেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান, কৃষিসচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ কিংবা স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক।

ডিসেম্বরের মধ্যে আরও সাতজন সচিব অবসরে যাবেন। তাদের মধ্যে কারো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার কথা এখনো শোনা যায়নি। তবে কেউ কেউ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার চেষ্টা-তদবির চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

আগামী মাসে যে সাত সচিবের অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাদের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম ১৪ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন। ৮২ ব্যাচের এই কর্মকর্তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন, খাদ্য, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন ‍গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

তথ্যসচিব মোর্তজা আহমেদ অবসরে যাচ্ছেন ২২ ডিসেম্বর। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন (বিশেষ ব্যাচ)। তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

২৬ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব তারিক-উল-ইসলাম। তিনি ১৯৮৩ সালে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। তিনি এর আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য খোরশেদ আলম চৌধুরী অবসরে যাবেন ৩০ ডিসেম্বর।

একই দিন অবসরে যাবেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এম বদরুদ্দোজা। তিনি ১৯৮২ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে ১৯৮৩ সালে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগ দেন।

তিনি যুগ্ম সচিব হিসেবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অতিরিক্ত সচিব হিসেবে সড়ক বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ডিসেম্বর মাসের শেষ দিনে অবসরে যাবেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল হান্নান। ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৩ সালে তিনি প্রশাসনে যোগদান করেন। শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ছিলেন। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন আবদুল হান্নান।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এম কাদের সরকার ৩১ ডিসেম্বর স্বাভাবিক অবসরে যাবেন। ১৯৮২ সালে বিসিএস (কর) ক্যাডারে যোগদান করেন তিনি। তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব ছিলেন। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের পরিচালক (অর্থ), বিভিন্ন কর অঞ্চলের কর কমিশনার এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

তবে এই সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কারা আসবেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এসব পদে দায়িত্ব পেতে ইতোমধ্যে অনেকে নিজেদের পক্ষে নানা জায়গায় জোর তদবির শুরু করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর