সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিততে জিততে হেরে যায় বাংলাদেশ। এরপর প্রতিবাদের মুখে পরের ম্যাচে মূল একাদশে ঠাঁই পান অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। ব্যাটিং, বোলিং আর চৌকস ফিল্ডিংয়ে দ্বিতীয় ম্যাচের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মোহাম্মদ নাসিরের মতো ফিনিসারকে বসিয়ে রাখা হয়েছে অনেক বার।
বারবার উপেক্ষিত এই নাসির হোসেন আবারো বাদ পড়লেন টাইগার দল থেকে। নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য শুক্রবার ২২ জনের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। যেখানে ডাক পাননি অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। শুভাগত হোমের মতো সাধারণ মানের অলরাউন্ডার ডাক পেলেও নাসিরের উপেক্ষার বিষয়টি মিডিয়া কর্মী তথা ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের বিস্মিত করেছে।
তবে নাসিরকে না নেওয়ার ব্যাখ্যাটা এভাবে দিলেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, ‘দেখুন, এটা ভেবে চিন্তেই করা হয়েছে।এই পজিশনের জন্য বেশ কজন ক্রিকেটার রয়েছে আমাদের হাতে। ছয়-সাত নম্বরে ওয়ানডেতে মোসাদ্দেক চলে এসেছে। টেস্টে সাব্বির ভালো করেছে। শুভাগত হোমও আছে। আমি মনে করি নাসিরের চেয়ে ওর স্পিন বল ভালো। তাহলে দেখুন, নাসিরের চেয়ে ক’যেকজন ভালো অপশন আমাদের হাতে।’
অবশ্য প্রধান নির্বাচকের এই ব্যাখ্যা যুক্তিহীন মনে হবে পরিসংখ্যান সামনে আনলে। ৮ টেস্টে শুভাগত ৬৩.২৫ গড়ে উইকেট নেন মাত্র ৮টি। ব্যাট হাতে একটি অর্ধশতক, ২৪৪ রান করেছেন মাত্র ২২.১৮ গড়ে। অন্য দিকে টেস্টে প্রায় ৩৮ ব্যাটিং গড় নাসিরের। আছে একটি সেঞ্চুরি ও ৬টি হাফ সেঞ্চুরি। নান্নু যাই বলুন না কেন, বোলিংয়েও শুভাগতের চেয়ে এগিয়ে নাসির। টেস্টে তিনি ৮ উইকেট নিয়েছেন ৫১.৬২ গড়ে।
কিন্তু প্রধান নির্বাচক বললেন, ‘আসলে শুভাগতকে অফ স্পিনার হিসেবে বিবেচনা করছি আমরা। আমরা মনে করি বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচে নাসিরের চেয়ে শুভাগতর বোলিং বেশি কার্যকর। তাছাড়া একটা ব্যাপার হলো, এটা শুধু কন্ডিশনিং ক্যাম্পের দল। চূড়ান্ত দলে শুভাগত তো থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। আপাতত আমাদের কাছে মনে হয়েছে বোলিংয়ে নাসিরের চেয়ে শুভাগত এগিয়ে।’
এরপর কন্ডিশনকে যুক্তি হিসেবে আনলেন প্রধান নির্বাচক। বললেন,‘ কন্ডিশনও আমরা বিবেচনায় এনেছি। নিউজিল্যান্ডের মতো কন্ডিশনে নাসির ব্যাটিংয়ে কি করতে পারবে, আমাদের সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে। কারণ আমরা দেখেছি বাউন্সি উইকেটে পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে একটু দুর্বলতা আছে নাসিরের। সৌম্য আবার এমন কন্ডিশনে ভালো ব্যাট করে।’
নির্বাচনকরা যেভাবেই ব্যাখ্যা দিক না কেন, নাসিরের প্রতি অবহেলা অন্য কোনো কারণে হতে পারে বলেও মনে করেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া নাসিরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বারবার নাসিরকে বসিয়ে রাখা এবং দল থেকে বাদ পড়ার আসল কারণ জানতে চান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে।