টি-টোয়েন্টি মানেই চার-ছক্কার মহড়া। একদিকে ব্যাটসম্যানরা মুখিয়ে থাকেন বল বাইরে পাঠাতে, অপরদিকে বোলাররা খোঁজেন উইকেট ভাঙার পথ। এ যেন বিনোদনের বড় রসদ! বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) তার-ই বাস্তব উদাহরণ।
এই আসরে দেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে অংশ নেন বিদেশি তারকা ক্রিকেটাররাও। দুইয়ের মিশেলে জমে ওঠে বিপিএল। আজ থেকেই শুরু হচ্ছে ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট আয়োজন বিপিএলের চতুর্থ আসর। এখানে বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে যারা জ্বলে উঠবেন, তাদের কয়েকজনকে তুলে ধরা হলো জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য।
মারলন স্যামুয়েলস (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স) : বড় আসরের বড় পারফর্মার হিসেবেই খ্যাতি রয়েছে তার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে দু’বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে, আর সেই দু’বারই দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন তিনি। আর দুটি বিশ্বকাপের ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন এই ক্যারিবিয়ান। আইপিএল, বিগ ব্যাশসহ বিশ্বের নামিদামি ঘরোয়া টি-টোয়েন্টির জমজমাট আসরগুলোতে তার পদচারণা লক্ষণীয়। বিপিএলের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে লড়বেন তিনি। গত আসরেও এই দলের হয়ে খেলেছিলেন স্যামুয়েলস। তবে ওই আসরে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। এবার নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরবেন
এই ক্যারিবিয়ান। এমন প্রত্যাশা দলটির অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার, ভক্তদেরও।
ক্রিস গেইল (চিটাগাং ভাইকিংস) : বল বাইশ গজের বাইরে পাঠাতে তার জুড়ি নেই। কী টেস্ট, কী ওয়ানডে, কী টি-টোয়েন্টি। সব ফরম্যাটেই ক্রিস গেইলের ব্যাট চলে সপাটে। মারমার, কাটকাট ব্যাটিংটাই তার ভারি পছন্দ। অনেক ম্যাচেই দেখা যায়, বাউন্ডারির চেয়ে ওভার বাউন্ডারিই হাঁকান বেশি। কখনো বা বল চলে যায় স্টেডিয়ামের বাইরে। সেই গেইল এবার খেলবেন চিটাগাং ভাইকিংসের হয়ে। তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংসের উদ্বোধন করবেন গেইল। বেশ জমবে এই জুটি, এটা বলা বাহুল্য। আর গেইল-তামিম জুটি ভাঙাই থাকবে প্রতিপক্ষের প্রধান লক্ষ্য। এর আগে বরিশাল বুলসের হয়ে সেঞ্চুরিও করেছিলেন তিনি। গত আসরে খেলার সুযোগ তেমন পাননি। তবে একটি ম্যাচে ৪৭ বলে ৯২* রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। তার ইনিংসটি ছিল ৬টি চার ও ৯টি ছক্কায় সমৃদ্ধ। এবারও গেইল বিনোদন দেবেন। এমনটা আশা করাই যায়।
আন্দ্রে রাসেল (ঢাকা ডায়নামাইটস) : ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) তিনি খেলেন সাকিব আল হাসানের কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে। কেকেআরের অন্যতম ভরসার প্রতীক তিনি। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে নজরে থাকেন বিশ্বের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে। বিপিএলেও এবার দ্যুতি ছড়াবেন রাসেল। তার দিনে প্রতিপক্ষকে একাই ধসিয়ে দিতে পারেন। যে কারণে ঢাকা ডায়নামাইটস তাকে গুরুত্ব দেবে। মজার বিষয়, আইপিএলের মতো বিপিএলেও অলরাউন্ডার সাকিবের সঙ্গে খেলবেন তিনি। এই দুই অলরাউন্ডারে শিরোপা খুঁজবে ঢাকা।
কুমার সাঙ্গাকারা (ঢাকা ডায়নামাইটস) : ক্রিকেট বিশ্বের জীবন্ত কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা গত বছরও বিপিএলে খেলেছেন, ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে। এবারও এই দলের হয়েই খেলবেন তিনি। গেইল, রাসেল কিংবা আফ্রিদির মতো অতটা মারমার, কাটকাট ব্যাট করেন না সাঙ্গাকারা। কিন্তু দলের বিপর্যয়ে হাল ধরে খেলার পাশাপাশি মেরে খেলতেও পারেন। যা দলের জন্য কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আর নান্দনিক ব্যাটিং টি-টোয়েন্টিতে বেশ উপভোগ্য।
শহিদ খান আফ্রিদি (রংপুর রাইডার্স) : টি-টোয়েন্টির অন্যতম সেরা ক্রিকেটার তিনি। ক্রিকেট দুনিয়ায় তার পরিচিতি বুমবুম আফ্রিদি হিসেবেই। ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়েই তার স্বস্তি! বল হাতেও পারেন আগুন ঝরাতে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যা খুবই প্রয়োজন। সঙ্গে তার নেতৃত্বগুণ তো থাকছেই। সব মিলেয়ে আফ্রিদির কাছে সেই অলরাউন্ড পারফরম্যান্সই চাইবে রংপুর রাইডার্স। যা হতে পারে রংপুরের শিরোপা জয়ের অন্যতম পাথেয়।-জাগো নিউজ