ঢাকা ০২:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গড়ে ৪ জন প্রার্থী বিএনপির, একক প্রার্থী জামায়াতের

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১০:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
  • ২১ বার

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যশোরসহ সারাদেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নতুন উদ্যমে মাঠে নেমেছেন। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জনসংযোগ বাড়াচ্ছেন। তবে জাতীয় নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। সম্প্রতি লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠকের পর সেই অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। এরই মধ্যে যশোরে নির্বাচনী মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে, বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কমিটি না থাকায় কোনো কার্যক্রম চালাতে পারছে না এবং অন্য কোনো দলের কর্মকাণ্ডও দৃশ্যমান নয়।

যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনে বিএনপির ২৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থী আলোচনায় রয়েছেন। এর মধ্যে যশোর-৩ (সদর) বাদে প্রতিটি আসনে বিএনপির ৪-৫ জন নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন, যা দলের অভ্যন্তরীণ বিভক্তি এবং আসনভিত্তিক দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। একটি বড় দলে একাধিক প্রার্থী থাকা স্বাভাবিক। তবে দল যাকেই মনোনয়ন দিক, আমরা সবাই তার পক্ষে কাজ করব। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী যশোরের ৫টি আসনে একক প্রার্থী মাঠে রেখেছে। যশোর জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, আমরা একটি নীতি ও আদর্শভিত্তিক দল। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে জয়ী করবেÑ ইনশাআল্লাহ।

যশোর-১ : ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা শার্শা উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপির চারজন সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, উপজেলা সভাপতি চেয়ারম্যান আবুল হাসান জহির, সাধারণ সম্পাদক তরুণ নেতা নূরুজ্জামান লিটন ও সাবেক সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু। উপজেলা সভাপতি আবুল হাসান জহির বলেন, আওয়ামী আমলে ২৩টি মামলা নিয়ে জেল-জুলুমের শিকার হয়েও দুঃসময়ে আমি নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম এবং থাকব। এ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী সাবেক জেলা আমির, বর্তমান কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আজীজুর রহমান বলেছেন, ভোট সুষ্ঠু হলে আমরা বিজয়ী হবÑ ইনশাআল্লাহ।

যশোর-২ : ঝিকরগাছা ও ভারত সীমান্তবর্তী আরেক উপজেলা চৌগাছা নিয়ে এই আসন গঠিত। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে পাঁচজন আলোচনায় আছেন। এর মধ্যে একজন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি (ঢাকায় গুম ও হত্যার শিকার ব্যবসায়ী) নাজমুল ইসলামের স্ত্রী সাবিরা নাজমুল মুন্নি। তিনি উপজেলা বিএনপি সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। অপর চারজন হলেনÑ যশোর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও যশোর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইসহক, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি যশোরের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান সামাদ নিপুন এবং চৌগাছা উপজেলার সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম। সাবিরা নাজমুল মুন্নি জানান, যশোর সিটি কলেজ থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময়েও তিনি নেতাকর্মীদের পাশে এবং রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ছিলেন। এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী সরকারি এমএম কলেজের সাবেক প্রিন্সিপ্যাল অধ্যাপক শরীফ হোসেনের ছেলে ডা. মুসলেহ উদ্দিন ফরিদ। তিনি বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী এবং জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।

যশোর-৩ : ভিআইপি আসনখ্যাত এ এলাকায় বিএনপি থেকে সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের পরিবারের একজনকে প্রার্থী করার আলোচনা চলছে। সে ক্ষেত্রে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নামই আলোচানায় আছে। এ ব্যাপরে তিনি বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা তার পক্ষেই কাজ করব। জামায়াত এ আসনে প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত না করলেও দ্রুত চূড়ান্ত করবে বলে জানিয়েছেন জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল। প্রথম দিকে সরকারি এমএম কলেজের সাবেক ভিপি ব্যবসায়ী আব্দুল কাদেরের নাম শোনা গেলেও এখন তার তেমন প্রচার নেই।

যশোর-৪ : বাঘারপাড়া, অভয়নগর ও সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে এ আসনে বিএনপির চার সম্ভাব্য প্রার্থী আলোচনায় আছেনÑ কেন্দ্রীয় কৃষক দল নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইউব, পৌর বিএনপি সভাপতি সাবেক মেয়র আব্দুল হাই মনা, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী এবং অভয়নগর বিএনপি সভাপতি ফারাজি মতিয়ার রহমান। ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইউব এবং মতিয়ার রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। আব্দুল হাই মনা বলেন, দল যাকেই মনোনয়ন দিক, তার পক্ষেই থাকব। জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক গোলাম রসুল। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ইসলামী ছাত্রশিবির যশোর শহর শাখার সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং বর্তমান জামায়াতের জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল।

যশোর-৫ : জেলার সর্ববৃহৎ উপজেলা মণিরামপুর নিয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে পাঁচ নেতার নাম আলোচনায় আছে। তারা হলেনÑ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ মো. ইকবাল হোসেন, সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মুছা, জেলা বিএনপি নেতা জেলা আইনজীবী সমিতির বারবার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এমএ গফুর, বর্তমান উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু এবং কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার সেলিম অগ্নি।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ মো. ইকবাল হোসেন বলেন, শিল্পপতি শেখ আকিজ উদ্দিনের সন্তানদের মধ্যে একমাত্র বিএনপি ঘরানার শেখ নাসির উদ্দিন যশোর-৪ অথবা যশোর-৫ আসনের যে কোনো একটিতে প্রার্থী হতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে আভাস পাওয়া গেছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক। এ আসনে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন উপজেলা সভাপতি ইবাদুল ইসলাম মনি খালাসি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মুফতি আব্দুর রশিদ বিন ওয়াক্কাস প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

যশোর-৬ : জেলার সর্ব দক্ষিণে খুলনা ও সাতক্ষীরা লাগোয়া কেশবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত আসন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপজেলা সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং মেজর (অব.) সাইদুর রহমান। এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যাপক মোক্তার আলী। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক হাজি আব্দুল মান্নানের নামও উঠে এসেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গড়ে ৪ জন প্রার্থী বিএনপির, একক প্রার্থী জামায়াতের

আপডেট টাইম : ১০:১০:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যশোরসহ সারাদেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নতুন উদ্যমে মাঠে নেমেছেন। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জনসংযোগ বাড়াচ্ছেন। তবে জাতীয় নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। সম্প্রতি লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠকের পর সেই অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। এরই মধ্যে যশোরে নির্বাচনী মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে, বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কমিটি না থাকায় কোনো কার্যক্রম চালাতে পারছে না এবং অন্য কোনো দলের কর্মকাণ্ডও দৃশ্যমান নয়।

যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনে বিএনপির ২৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থী আলোচনায় রয়েছেন। এর মধ্যে যশোর-৩ (সদর) বাদে প্রতিটি আসনে বিএনপির ৪-৫ জন নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন, যা দলের অভ্যন্তরীণ বিভক্তি এবং আসনভিত্তিক দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। একটি বড় দলে একাধিক প্রার্থী থাকা স্বাভাবিক। তবে দল যাকেই মনোনয়ন দিক, আমরা সবাই তার পক্ষে কাজ করব। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী যশোরের ৫টি আসনে একক প্রার্থী মাঠে রেখেছে। যশোর জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, আমরা একটি নীতি ও আদর্শভিত্তিক দল। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে জয়ী করবেÑ ইনশাআল্লাহ।

যশোর-১ : ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা শার্শা উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপির চারজন সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, উপজেলা সভাপতি চেয়ারম্যান আবুল হাসান জহির, সাধারণ সম্পাদক তরুণ নেতা নূরুজ্জামান লিটন ও সাবেক সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু। উপজেলা সভাপতি আবুল হাসান জহির বলেন, আওয়ামী আমলে ২৩টি মামলা নিয়ে জেল-জুলুমের শিকার হয়েও দুঃসময়ে আমি নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম এবং থাকব। এ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী সাবেক জেলা আমির, বর্তমান কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও যশোর কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আজীজুর রহমান বলেছেন, ভোট সুষ্ঠু হলে আমরা বিজয়ী হবÑ ইনশাআল্লাহ।

যশোর-২ : ঝিকরগাছা ও ভারত সীমান্তবর্তী আরেক উপজেলা চৌগাছা নিয়ে এই আসন গঠিত। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে পাঁচজন আলোচনায় আছেন। এর মধ্যে একজন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি (ঢাকায় গুম ও হত্যার শিকার ব্যবসায়ী) নাজমুল ইসলামের স্ত্রী সাবিরা নাজমুল মুন্নি। তিনি উপজেলা বিএনপি সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। অপর চারজন হলেনÑ যশোর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও যশোর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইসহক, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি যশোরের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান সামাদ নিপুন এবং চৌগাছা উপজেলার সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম। সাবিরা নাজমুল মুন্নি জানান, যশোর সিটি কলেজ থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময়েও তিনি নেতাকর্মীদের পাশে এবং রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ছিলেন। এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী সরকারি এমএম কলেজের সাবেক প্রিন্সিপ্যাল অধ্যাপক শরীফ হোসেনের ছেলে ডা. মুসলেহ উদ্দিন ফরিদ। তিনি বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী এবং জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।

যশোর-৩ : ভিআইপি আসনখ্যাত এ এলাকায় বিএনপি থেকে সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের পরিবারের একজনকে প্রার্থী করার আলোচনা চলছে। সে ক্ষেত্রে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নামই আলোচানায় আছে। এ ব্যাপরে তিনি বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা তার পক্ষেই কাজ করব। জামায়াত এ আসনে প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত না করলেও দ্রুত চূড়ান্ত করবে বলে জানিয়েছেন জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল। প্রথম দিকে সরকারি এমএম কলেজের সাবেক ভিপি ব্যবসায়ী আব্দুল কাদেরের নাম শোনা গেলেও এখন তার তেমন প্রচার নেই।

যশোর-৪ : বাঘারপাড়া, অভয়নগর ও সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে এ আসনে বিএনপির চার সম্ভাব্য প্রার্থী আলোচনায় আছেনÑ কেন্দ্রীয় কৃষক দল নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইউব, পৌর বিএনপি সভাপতি সাবেক মেয়র আব্দুল হাই মনা, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী এবং অভয়নগর বিএনপি সভাপতি ফারাজি মতিয়ার রহমান। ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইউব এবং মতিয়ার রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। আব্দুল হাই মনা বলেন, দল যাকেই মনোনয়ন দিক, তার পক্ষেই থাকব। জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক গোলাম রসুল। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ইসলামী ছাত্রশিবির যশোর শহর শাখার সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং বর্তমান জামায়াতের জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল।

যশোর-৫ : জেলার সর্ববৃহৎ উপজেলা মণিরামপুর নিয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে পাঁচ নেতার নাম আলোচনায় আছে। তারা হলেনÑ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ মো. ইকবাল হোসেন, সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মুছা, জেলা বিএনপি নেতা জেলা আইনজীবী সমিতির বারবার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এমএ গফুর, বর্তমান উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু এবং কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার সেলিম অগ্নি।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ মো. ইকবাল হোসেন বলেন, শিল্পপতি শেখ আকিজ উদ্দিনের সন্তানদের মধ্যে একমাত্র বিএনপি ঘরানার শেখ নাসির উদ্দিন যশোর-৪ অথবা যশোর-৫ আসনের যে কোনো একটিতে প্রার্থী হতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে আভাস পাওয়া গেছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক। এ আসনে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন উপজেলা সভাপতি ইবাদুল ইসলাম মনি খালাসি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মুফতি আব্দুর রশিদ বিন ওয়াক্কাস প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

যশোর-৬ : জেলার সর্ব দক্ষিণে খুলনা ও সাতক্ষীরা লাগোয়া কেশবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত আসন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপজেলা সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং মেজর (অব.) সাইদুর রহমান। এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যাপক মোক্তার আলী। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক হাজি আব্দুল মান্নানের নামও উঠে এসেছে।