বেশ কিছুদিন ধরেই নেটদুনিয়ায় আলোচনা চলছে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের মনু মিয়াকে নিয়ে। গ্রামের মানুষদের কাছে তিনি ‘গোরখোদক’ হিসেবে বেশ পরিচিত। দীর্ঘ ৪৯ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে ৩ হাজারের বেশি কবর খনন করেছেন ৬৭ বছর বয়সী মনু মিয়া। গ্রামে কারো মৃত্যুর খবর পেলেই লাল রঙের ঘোড়ায় তিনি পৌঁছে যান।
দুর্ভাগ্যবশত, মনু মিয়ার বিশ্বস্ত সেই সঙ্গী আর নেই। আর বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন মনু মিয়াও। তার অনুপস্থিতিতে দুষ্কৃতকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘোড়াটিকে হত্যা করেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনু মিয়ার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা ভেবে শুরুতে স্ত্রী ও স্বজনেরা তার কাছে ঘোড়া হত্যার কথাটি গোপন রেখেছিলেন।
এদিকে, মনু মিয়ার ঘোড়া হত্যার বিষয়টি নজরে এসেছে জনপ্রিয় অভিনেতা খায়রুল বাসারের। আজ সোমবার সকালে তাকে নিয়ে করা একটি তথ্যচিত্র শেয়ার করে অভিনেতা লিখেছেন, ‘মনু মিয়াকে আমি ঘোড়া কিনে দিতে চাই। আমার কবর খোঁড়ার আগ পর্যন্ত আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখেন।’
সেই সঙ্গে তিনি আহ্বান জানান, যদি কেউ মনু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেন, তাহলে তিনি চিরকৃতজ্ঞ থাকবেন।
এমন পোস্টের পরই অভিনেতার সঙ্গে যোগাযোগ হয় মনু মিয়ার। খায়রুল বাসার বলেন, ‘উনার কণ্ঠ উনার বয়স অনুপাতে অনেক শক্ত। উনার পুরোনো শরীরের বিপরীতে উনার মন আর কণ্ঠ অনেক বেশি দৃঢ় মনে হলো। উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, কাকা কেমন আছেন? উত্তরে উনি বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ অনেক বালা রাখছে। তুমি কেডা? বাড়ি কই?” তখন তাকে বলেছি, কাকা আমার বাড়িও কিশোরগঞ্জ। কাকা বললেন “তাইলে তো তুমি আমার বাড়ির কাছই।” তারপর অনেক কথা শেষে বললাম, কাকা মন খারাপ কইরেন না, সব আল্লাহর ইচ্ছা, আল্লাহ আপনাকে দ্রুত সুস্থ করে দিবেন। আপনাকে সুন্দর একটা ঘোড়া দিব আমরা। এরপর তার সঙ্গে আরও অনেক কথা হয়। কাকা তার বাসায় আমাকে নিমন্ত্রণও জানিয়েছে।’