আমরা অনেক আগে থেকেই চ্যারিটি নিয়ে কাজ করছি। ১০-১২ বছর তো হবেই। এ কাজটা যেন ধারাবাহিকভাবে, পুরো দেশে করা সম্ভব হয়, সে জন্যই ‘অ্যাশেজ ফ্যামিলি’ গঠন করছি। আমাদের লক্ষ্য, প্রতি জেলায় এক হাজার সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা।
একটা বিষয় স্পষ্ট করি, আমাদের এই পরিবারের কোনো সদস্য কারো কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেবে না। কেউ চাইলেও ‘অ্যাশেজ ফ্যামিলি’কে টাকা দিতে পারবেন না। যেহেতু পুরো দেশে কার্যক্রম চলবে, অনেক মানুষ জড়িত।
আমাদের প্রত্যেক কনসার্ট থেকে একটা অংশ এই চ্যারিটি প্রকল্পের জন্য থাকবে। এখান থেকে অসহায় মানুষের চোখের চিকিৎসা, ক্যান্সার কিংবা কিডনির মতো রোগের চিকিৎসায় অর্থ ব্যয় করা হবে। আবার কিছু কাজ স্বল্প টাকা কিংবা টাকা ছাড়াও হয়। যেমন বিভিন্ন বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা, রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ এসবও করা হবে।
আমি মনে করি, এটা আমার দায়বদ্ধতা। এই যে গান করে এত টাকা আয় করছি, এত মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি, এর বিপরীতে আমারও তো কিছু দায়বদ্ধতা আছে। সেই ভাবনা থেকেই চেষ্টা করছি। যদিও কখনো হিসাব রাখিনি, অনুমানিক ১০০ মানুষের চিকিৎসায় সহায়তা করেছি।
এসব চ্যারিটি কাজে কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়?
হ্যাঁ, কিছু সমস্যা তো আছেই। যেমন কেউ কেউ সন্দেহের চোখে দেখেন, জানতে চায় উদ্দেশ্য কী? মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ঘুরতে যাই কি না! তাদের এই জিজ্ঞাসা অযৌক্তিক না। কারণ প্রতারণার ঘটনাও তো অহরহ ঘটে। তাই বলে আমরা ভালো কাজ বন্ধ করে দেব? সব কিছু মানিয়ে নিয়েই কাজ করে যেতে হবে। স্বচ্ছতার জন্য অনুদান সংগ্রহে আমি কখনো নিজের কিংবা আমার পরিবার, বন্ধু-স্বজন কারো নাম্বার দিই না। সরাসরি রোগী অথবা তার পরিবারের নাম্বার দিয়ে দিই। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যার যার সহযোগিতা পাঠান।
মানুষের ভালোবাসা বড় অদ্ভুত। একটা ঘটনা বলি, কয়েক বছর আগে ইকরা নামের এক মেয়ের জন্য আমরা অনুদান সংগ্রহ করেছিলাম। অনেক দিন পর তার খালা আমার কাছে এলেন প্রায় দেড় লাখ টাকা নিয়ে। জানালেন, চিকিৎসা শেষে এই টাকা বেঁচে গেছে। তাই আমাকে ফেরত দিতে এসেছেন। আমি তাঁকে বলেছি, এই টাকা মানুষ ইকরার জন্য দিয়েছে। আমি এটা নিতে পারব না। আপনি আরেকটা ইকরাকে খুঁজে বের করে তাকে টাকাগুলো দিন, যাতে সেও সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। এই যে মানুষের সততা, এটা সচরাচর দেখা যায় না।
গানের প্রসঙ্গে আসি। নতুন অ্যালবাম কবে আসবে?
আমরা দুটি অ্যালবাম নিয়ে একসঙ্গে কাজ করছি। এর মধ্যে ‘নিরুদ্দেশ’ অ্যালবামটির দুটি গান এর আগে প্রকাশিত হয়েছে। দ্বিতীয় অ্যালবামটির নাম ‘ডানাহীন পাখি’। দুই অ্যালবামে মোট ১৪টি গান থাকবে। এ বছরের মধ্যেই অ্যালবাম দুটি প্রকাশ করব। এ জন্য গানগুলোর কাজও একসঙ্গে গুছিয়ে নিচ্ছি। কাজও প্রায় শেষের দিকে।
কনসার্টের ব্যস্ততা কেমন?
বেশ। ২০ মে আমাদের উত্তরবঙ্গ ট্যুর শুরু হবে। চলবে ৩০ মে পর্যন্ত। গাইবান্ধা, রংপুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে সাতটি কনসার্ট করব।