সিরিয়ার পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর দেশটির আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাই বন্ধ রেখেছে জার্মানি৷ তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভ্যালের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
গত রবিবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন ঘটেছে। বিদ্রোহীরা দেশটির রাজধানী দামেস্কে পৌঁছে গেলে তিনি পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন।আসাদের পতনের পর জার্মানিতে অবস্থানরত সিরীয় শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর আলোচনা শুরু হয়েছে৷ জার্মানিতে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ সিরীয় বসবাস করছেন বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ তাদের মধ্যে ৫ হাজারের বেশিআশ্রয়প্রার্থী এবং ৩ লাখ ২১ হাজার ৪৪৪ শরণার্থীর মর্যাদায় রয়েছেন।
জার্মানির বিরোধী দল সিডিইউ এবং বাভারিয়া রাজ্যে তাদের অংশ সিএসইউর জ্যেষ্ঠ নেতারা সিরীয়দেরকে তাদের দেশে ফিরে যেতে উৎসাহিত করেছেন। প্রভাবশালী সিডিইউ রাজনীতিবিদ ইয়েন স্পান সোমবার জার্মান প্রচারমাধ্যম আরটিএলকে বলেন, ‘প্রথম ধাপে আমরা একটা প্রস্তাব দিতে পারি৷ জার্মান সরকার এমনটা ঘোষণা দিতে পারে যে, আমরা তাদের জন্য বিশেষ ফিরতি বিমানের আয়োজন করবো এবং তাদের শুরুতে এক হাজার ইউরো করে দেবো।’
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়াকে পুর্নগঠনে তুরস্ক, অস্ট্রিয়া এবং জর্ডানকে সাথে নিয়ে জার্মানি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের পক্ষে৷ তবে সিরীয় শরণার্থীদের নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের সমালোচনাও শোনা যাচ্ছে। চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের মধ্যবামপন্থি দল এসপিডি এবং পরিবেশবান্ধব গ্রিন পার্টি মনে করছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই এ ধরনের আলোচনা শুরু ঠিক হবে না।
সবুজ দলের রাজনীতিবিদ ক্যাথরিন গ্যোরিং-একার্ট বলেন, ‘সিরিয়া যদি একটি নিরাপদ দেশে পরিণত হয় তাহলে মানুষ ফেরত যাবেন, তবে সেই আলোচনা দেশটিতে নিয়ম-শৃঙ্খলা এবং স্থিতিশীলতা ফেরার পর করা যাবে৷ সিরিয়ায় স্বাধীনতা, স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির জন্য সুবিধাজনক সবকিছুকে আমাদের সমর্থন করা উচিত।’
জার্মানির অভিবাসন এবং শরণার্থী বিষয়ক দপ্তর বিএএমএফ-এর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন যে সাবেক প্রেসিডেন্ট আসাদের পতনের পর জার্মানিতে সিরীয়দের আশ্রয় আবেদন যাচাইবাছাই প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করা ৪৭ হাজারের বেশি সিরীয়র ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘বিএএমএফ প্রতিটি ঘটনাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে এবং এর মধ্যে আবেদনকারী যে দেশ বা অঞ্চল থেকে এসেছেন, সেখানকার পরিস্থিতিও রয়েছে।’