ঢাকা ০৬:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চোরের নম্বরে টাকা পাঠালে ১৫ মিনিটেই মিলছে বৈদ্যুতিক মিটার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৪ বার

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করে ফেলে যাওয়া হচ্ছে চিরকুট। মিটার ফেরত পেতে ফোন করার নির্দেশনা দিয়ে একটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হচ্ছে। ওই নম্বরে ফোন করলে মিটার ফেরত দিতে চাওয়া হচ্ছে টাকা।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পাকা ইউনিয়নের লোকমানপুর বাজারে কাঠমিল, রাইসমিল ও ওয়ার্কসপের চারটি বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীরা জানান, মিটারের বক্সে মোবাইল নম্বর লেখা চিরকুট রেখে মিটার চুরি করছে একটি চক্র। চিরকুটে লেখা আছে, ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন ০১৮৫৬৬৬৫৪৯২’। বাধ্য হয়ে চক্রের দেওয়া নম্বরে গোপনে টাকা পাঠিয়ে চুরি যাওয়া মিটার ফেরত নিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। চিরকুটে থাকা নম্বরে কল করলে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে, যা ওই নম্বরে নগদ বা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হচ্ছে। আরও বলা হচ্ছে, তারা টাকা পাওয়ার ১৫ মিনিট পর মিটার পৌঁছে দেবেন।

স্থানীয় আসলাম উদ্দিন জানান, তার মিটার এই প্রথম চুরি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মিল বন্ধ করে বাড়ি গেছেন। আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মিলে এসে কাজ করার সময় দেখেন মিটার নেই। পরে আস্তে আস্তে জানতে পারেন বাজারের আরও তিনজনের মিটার চুরি হয়েছে। তবে মিটারের নিচে পলিথিনে মোড়ানো একটি চিরকুট দেখতে পান। চিরকুটের ভেতরে একটি কাগজে লেখা ছিল, ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন ০১৮৫৬৬৬৫৪৯২ নম্বরে।’ ওই মোবাইল নম্বরটিতে কল দিলে চোর চক্রটি নগদের মাধ্যমে ৭ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। কিন্তু তিনি গরিব মানুষ হওয়ায় টাকা পাঠতে ব্যর্থ হন।

মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘সকালে এসে দেখি মিলের মিটার নাই। পরে চিরকুটে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করলে ৭ হাজার টাকা দাবি করে। তাদের অনুরোধ করে সাড়ে ৫ হাজার টাকা ওই নম্বরে নগদে পাঠালে তারা বলে ১৫ মিনিট পরে মিটার পাওয়া যাবে। সত্যিই ১৫ মিনিট পরে আমার পাশের বাড়ির খড়ির ঘরে মিটার আছে বলে তারা জানায়। পরে সেখানে গিয়ে সত্যিই মিটার পাওয়া যায়।’

নাটোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১-এর বাগাতিপাড়া সাব জোনাল অফিসের দয়িত্বে থাকা এজিএম (ওএন্ডএম) মঞ্জুর রহমান বলেন, বিষয়টি যেহেতু চুরির তাই থানা দেখবেন। আর থানায় গিয়ে এফআইআর করে ওই কপি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা দিলে পরের দিনই মিটার সংযোগ দেওয়া হবে।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অমিনুল হক বলেন, বিষয়টি শুনেছি, তবে ভুক্তভোগী কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চোরের নম্বরে টাকা পাঠালে ১৫ মিনিটেই মিলছে বৈদ্যুতিক মিটার

আপডেট টাইম : ০৬:২৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করে ফেলে যাওয়া হচ্ছে চিরকুট। মিটার ফেরত পেতে ফোন করার নির্দেশনা দিয়ে একটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হচ্ছে। ওই নম্বরে ফোন করলে মিটার ফেরত দিতে চাওয়া হচ্ছে টাকা।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পাকা ইউনিয়নের লোকমানপুর বাজারে কাঠমিল, রাইসমিল ও ওয়ার্কসপের চারটি বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীরা জানান, মিটারের বক্সে মোবাইল নম্বর লেখা চিরকুট রেখে মিটার চুরি করছে একটি চক্র। চিরকুটে লেখা আছে, ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন ০১৮৫৬৬৬৫৪৯২’। বাধ্য হয়ে চক্রের দেওয়া নম্বরে গোপনে টাকা পাঠিয়ে চুরি যাওয়া মিটার ফেরত নিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। চিরকুটে থাকা নম্বরে কল করলে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে, যা ওই নম্বরে নগদ বা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হচ্ছে। আরও বলা হচ্ছে, তারা টাকা পাওয়ার ১৫ মিনিট পর মিটার পৌঁছে দেবেন।

স্থানীয় আসলাম উদ্দিন জানান, তার মিটার এই প্রথম চুরি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মিল বন্ধ করে বাড়ি গেছেন। আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মিলে এসে কাজ করার সময় দেখেন মিটার নেই। পরে আস্তে আস্তে জানতে পারেন বাজারের আরও তিনজনের মিটার চুরি হয়েছে। তবে মিটারের নিচে পলিথিনে মোড়ানো একটি চিরকুট দেখতে পান। চিরকুটের ভেতরে একটি কাগজে লেখা ছিল, ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন ০১৮৫৬৬৬৫৪৯২ নম্বরে।’ ওই মোবাইল নম্বরটিতে কল দিলে চোর চক্রটি নগদের মাধ্যমে ৭ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। কিন্তু তিনি গরিব মানুষ হওয়ায় টাকা পাঠতে ব্যর্থ হন।

মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘সকালে এসে দেখি মিলের মিটার নাই। পরে চিরকুটে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করলে ৭ হাজার টাকা দাবি করে। তাদের অনুরোধ করে সাড়ে ৫ হাজার টাকা ওই নম্বরে নগদে পাঠালে তারা বলে ১৫ মিনিট পরে মিটার পাওয়া যাবে। সত্যিই ১৫ মিনিট পরে আমার পাশের বাড়ির খড়ির ঘরে মিটার আছে বলে তারা জানায়। পরে সেখানে গিয়ে সত্যিই মিটার পাওয়া যায়।’

নাটোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১-এর বাগাতিপাড়া সাব জোনাল অফিসের দয়িত্বে থাকা এজিএম (ওএন্ডএম) মঞ্জুর রহমান বলেন, বিষয়টি যেহেতু চুরির তাই থানা দেখবেন। আর থানায় গিয়ে এফআইআর করে ওই কপি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা দিলে পরের দিনই মিটার সংযোগ দেওয়া হবে।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অমিনুল হক বলেন, বিষয়টি শুনেছি, তবে ভুক্তভোগী কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।