ঢাকা ০৬:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় দানার ছোবলে তছনছ উড়িষ্যার উপকূল, লন্ডভন্ড ধামরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫১:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • ১ বার
বৃহস্পতিবার মধ্য রাতেই ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের উপকূলবর্তী স্থল ভাগে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় দানা। উড়িষ্যা উপকূলে ধামরা এবং ভিতরকনিকা এলাকায় আছড়ে পড়ে অতি শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়। দানার প্রভাবে কার্যত তোলপাড় হয়ে গিয়েছে উড়িষ্যার উপকূলবর্তী এলাকা। প্রায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ভেঙে পড়েছে একাধিক গাছ।
তবে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) পর্যন্ত ঝড়, বৃষ্টি চলার কারণে আর কী কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বিস্তারিতভাবে জানা যায়নি।
দানার প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে দুই মেদিনীপুর জেলা এবং সেখানকার উপকূলীয় এলাকাকে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর দানার আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন উড়িশ্যার ভিতরকণিকা থেকে ধামরার মধ্যবর্তী স্থানে স্থলভাগ অতিক্রম করছিল ঘূর্ণিঝড়ের সামনের অংশ। তখন ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। আর সর্বোচ্চ গতি ১২০ কিলোমিটার। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এই ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া চলে। যা সম্পূর্ণ হতে তিন থেকে চার ঘণ্টা লাগবে।
ঝড়ের দাপটে উড়িশ্যার ভদ্রক জেলার বিস্তীর্ণ গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। সকাল থেকেই ভয়াবহ ছবি ওড়িশার উপকূলবর্তী এলাকায়। ভদ্রকের বাসুদেবপুরে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড় দানা। রাত ৩টা থেকেই ঘুম উড়েছে স্থানীয়দের। দমকা হাওয়ার দাপটে উপড়ে গিয়েছে প্রচুর গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। গাছ পড়ে অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। একই অবস্থা ধামরা, চাঁদমালিসহ বিস্তীর্ণ এলাকার। ঘূর্ণিঝড়ে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে ধামরা বন্দর এলাকা। গাছ ভাঙার পাশাপাশি ঝড়ে উড়ে গিয়েছে টিনের চাল।
ভদ্রকে দানার দমকা হাওয়ার দাপটে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে গ্য়াস স্টেশনের মেশিন। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বাইক, টিনের ছাউনি। হেলে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহ ছবি ভদ্রকজুড়ে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতোই ভদ্রক, ধামরার পাশাপাশি ক্ষতির সম্মুখীন উড়িশ্যার কেন্দ্রাপাড়াও। সেখানেও উপড়ে গিয়েছে প্রচুর গাছ। তবে রাস্তা থেকে গাছ সরানোর কাজও শুরু করেছে প্রশাসন। গ্যাস কাটার দিয়ে গাছ কেটে ক্রেন দিয়ে চলছে গাছ সরানোর কাজ। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত উড়িশ্যার মেরিন স্যাংচুয়ারি ভিতরকণিকা। ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ভিতরকণিকা নেচার ক্যাম্প। সামুদ্রিক এই স্যাংচুয়ারিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তু। রয়েছে নানা প্রজাতির কচ্ছপ ও প্রচুর পরিযায়ী পাখিও। বিশ্বের দ্বিতীয় আমাজন রূপে অভিহিত করা হয় ভিতরকণিকাকে। সেখানেই তাণ্ডব চালায়  ঘূর্ণিঝড় দানা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা প্রশাসনের। জীবজন্তুদের প্রাণহানির আশঙ্কা নিয়েও।
ধামরার বিস্তীর্ণ এলাকায় ঢুকেছে নোনা পানি। ৫০ মিটার পর্যন্ত পানিস্তর বেড়েছে বলে সূত্রের খবর।
আবহাওয়া দফতর জানায়, স্থলভাহে অনেকটাই শক্তিক্ষয় করেছে ঘূর্ণিঝড় দানা। তবে নতুন করে আর শক্তি সঞ্চয়ের সম্ভাবনা নেই। এদিকে দানার ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হতেই পশ্চিমবঙ্গের উপকূল এলাকায় ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝড়বৃষ্টি চলছে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রামে শুক্রবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঘূর্ণিঝড় দানার ছোবলে তছনছ উড়িষ্যার উপকূল, লন্ডভন্ড ধামরা

আপডেট টাইম : ০৫:৫১:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
বৃহস্পতিবার মধ্য রাতেই ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের উপকূলবর্তী স্থল ভাগে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় দানা। উড়িষ্যা উপকূলে ধামরা এবং ভিতরকনিকা এলাকায় আছড়ে পড়ে অতি শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়। দানার প্রভাবে কার্যত তোলপাড় হয়ে গিয়েছে উড়িষ্যার উপকূলবর্তী এলাকা। প্রায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ভেঙে পড়েছে একাধিক গাছ।
তবে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) পর্যন্ত ঝড়, বৃষ্টি চলার কারণে আর কী কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বিস্তারিতভাবে জানা যায়নি।
দানার প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে দুই মেদিনীপুর জেলা এবং সেখানকার উপকূলীয় এলাকাকে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর দানার আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন উড়িশ্যার ভিতরকণিকা থেকে ধামরার মধ্যবর্তী স্থানে স্থলভাগ অতিক্রম করছিল ঘূর্ণিঝড়ের সামনের অংশ। তখন ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। আর সর্বোচ্চ গতি ১২০ কিলোমিটার। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এই ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া চলে। যা সম্পূর্ণ হতে তিন থেকে চার ঘণ্টা লাগবে।
ঝড়ের দাপটে উড়িশ্যার ভদ্রক জেলার বিস্তীর্ণ গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। সকাল থেকেই ভয়াবহ ছবি ওড়িশার উপকূলবর্তী এলাকায়। ভদ্রকের বাসুদেবপুরে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড় দানা। রাত ৩টা থেকেই ঘুম উড়েছে স্থানীয়দের। দমকা হাওয়ার দাপটে উপড়ে গিয়েছে প্রচুর গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। গাছ পড়ে অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। একই অবস্থা ধামরা, চাঁদমালিসহ বিস্তীর্ণ এলাকার। ঘূর্ণিঝড়ে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে ধামরা বন্দর এলাকা। গাছ ভাঙার পাশাপাশি ঝড়ে উড়ে গিয়েছে টিনের চাল।
ভদ্রকে দানার দমকা হাওয়ার দাপটে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে গ্য়াস স্টেশনের মেশিন। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বাইক, টিনের ছাউনি। হেলে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহ ছবি ভদ্রকজুড়ে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতোই ভদ্রক, ধামরার পাশাপাশি ক্ষতির সম্মুখীন উড়িশ্যার কেন্দ্রাপাড়াও। সেখানেও উপড়ে গিয়েছে প্রচুর গাছ। তবে রাস্তা থেকে গাছ সরানোর কাজও শুরু করেছে প্রশাসন। গ্যাস কাটার দিয়ে গাছ কেটে ক্রেন দিয়ে চলছে গাছ সরানোর কাজ। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত উড়িশ্যার মেরিন স্যাংচুয়ারি ভিতরকণিকা। ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ভিতরকণিকা নেচার ক্যাম্প। সামুদ্রিক এই স্যাংচুয়ারিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তু। রয়েছে নানা প্রজাতির কচ্ছপ ও প্রচুর পরিযায়ী পাখিও। বিশ্বের দ্বিতীয় আমাজন রূপে অভিহিত করা হয় ভিতরকণিকাকে। সেখানেই তাণ্ডব চালায়  ঘূর্ণিঝড় দানা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা প্রশাসনের। জীবজন্তুদের প্রাণহানির আশঙ্কা নিয়েও।
ধামরার বিস্তীর্ণ এলাকায় ঢুকেছে নোনা পানি। ৫০ মিটার পর্যন্ত পানিস্তর বেড়েছে বলে সূত্রের খবর।
আবহাওয়া দফতর জানায়, স্থলভাহে অনেকটাই শক্তিক্ষয় করেছে ঘূর্ণিঝড় দানা। তবে নতুন করে আর শক্তি সঞ্চয়ের সম্ভাবনা নেই। এদিকে দানার ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হতেই পশ্চিমবঙ্গের উপকূল এলাকায় ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝড়বৃষ্টি চলছে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রামে শুক্রবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে।