ঢাকা ০৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৪১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
  • ৩ বার

গত ১৫ সেপ্টেম্বর খুচরা, পাইকারি এবং উৎপাদক পর্যায়ে ডিম, মুরগির দাম সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছিল। দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার একমাস পরেও বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার-সোনালি মুরগি।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২১০ টাকায় আর সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। এ ছাড়া, লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ৩৩০ টাকা, কক মুরগি প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি আগের মতো বাড়তি দামে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বাজারে গরুর মাংস আগের মতো বাড়তি দামে প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মালিবাগের একটি বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী খোরশেদ আলম। বাড়তি দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশি মুরগি, গরু, খাসির মাংস তো অতিরিক্ত দামের কারণে খেতে পারি না। খাওয়ার মধ্যে কোনোভাবে কিনি ব্রয়লার আবার কোনো কোনো সময় সোনালি মুরগি। কিন্তু বর্তমান বাজারের যে অবস্থা তাতে করে ব্রয়লার মুরগিও কেনা এখন দায় হয়ে গেছে। ২১০ টাকা কেজি ব্রয়লার! আর সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা। সরকার গতমাসে ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিলো, কিন্তু এরপর থেকে একটি দিনের জন্যও ব্রয়লার নির্ধারিত দামে বিক্রি হয়নি। সংশ্লিষ্টদের যদি বাজারে মনিটরিং না থাকে তাহলে শুধু দাম নির্ধারণের ঘোষণা দিয়ে কি লাভ?

রাজধানীর মহাখালী বাজারের আরেক ক্রেতা গার্মেন্টস কর্মী মনছুর আলী বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণের পর থেকেই আরও দাম বেড়েছে। স্বল্প ইনকামের লোক আমরা যে কারণে এমনিতে বাজারে আসলে দিশেহারা হয়ে যায়। মাংস কেনা বলতে আমরা স্বল্প আয়ের মানুষরা শুধু বুঝি ব্রয়লার মুরগি, কারণ অন্যগুলো কেনার সামর্থ্য আমাদের নেই। সেই ব্রয়লারের দামও এখন বেশি চলছে। তাহলে আমরা কোনটা কিনব?

গরু খাসির মাংসের আজকের বাজার দর জানিয়ে মগবাজার এলাকার মাংস বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, আসলে আমাদের কেনা দাম বেশি পড়ছে তাই খুচরা বাজারে এমন দাম চলছে। আমরা যদি তুলনামূলক কম দামে গরুর খাসি কিনতে পারি তাহলে ক্রেতা পর্যায়ে কম দাম রাখতে পারব। আজ বাজারে গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা আর খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার মুরগি বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম একটু বেশি যাচ্ছে, পাশাপাশি অন্য সব ধরনের মুরগির দামই কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে। মূলত পাইকারি বাজারে আমাদের কেনা দাম বেশি পড়ছে যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। আসলে কিছুদিন আগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার কারণে প্রচুর পরিমাণে মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই কারণে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, এর ফলে দাম বেড়েছে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সেখানকার মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়, ডিমের পাশাপাশি সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি চিঠিতে মুরগি (সোনালি ও ব্রয়লার) ও ডিমের নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্য (উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে) সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

সেই নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী ডিমের মূল্যের পাশাপাশি কেজিপ্রতি সোনালি মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ১৬৮ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি

আপডেট টাইম : ০২:৪১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

গত ১৫ সেপ্টেম্বর খুচরা, পাইকারি এবং উৎপাদক পর্যায়ে ডিম, মুরগির দাম সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছিল। দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার একমাস পরেও বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার-সোনালি মুরগি।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২১০ টাকায় আর সোনালি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। এ ছাড়া, লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ৩৩০ টাকা, কক মুরগি প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি আগের মতো বাড়তি দামে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বাজারে গরুর মাংস আগের মতো বাড়তি দামে প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মালিবাগের একটি বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী খোরশেদ আলম। বাড়তি দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশি মুরগি, গরু, খাসির মাংস তো অতিরিক্ত দামের কারণে খেতে পারি না। খাওয়ার মধ্যে কোনোভাবে কিনি ব্রয়লার আবার কোনো কোনো সময় সোনালি মুরগি। কিন্তু বর্তমান বাজারের যে অবস্থা তাতে করে ব্রয়লার মুরগিও কেনা এখন দায় হয়ে গেছে। ২১০ টাকা কেজি ব্রয়লার! আর সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা। সরকার গতমাসে ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিলো, কিন্তু এরপর থেকে একটি দিনের জন্যও ব্রয়লার নির্ধারিত দামে বিক্রি হয়নি। সংশ্লিষ্টদের যদি বাজারে মনিটরিং না থাকে তাহলে শুধু দাম নির্ধারণের ঘোষণা দিয়ে কি লাভ?

রাজধানীর মহাখালী বাজারের আরেক ক্রেতা গার্মেন্টস কর্মী মনছুর আলী বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণের পর থেকেই আরও দাম বেড়েছে। স্বল্প ইনকামের লোক আমরা যে কারণে এমনিতে বাজারে আসলে দিশেহারা হয়ে যায়। মাংস কেনা বলতে আমরা স্বল্প আয়ের মানুষরা শুধু বুঝি ব্রয়লার মুরগি, কারণ অন্যগুলো কেনার সামর্থ্য আমাদের নেই। সেই ব্রয়লারের দামও এখন বেশি চলছে। তাহলে আমরা কোনটা কিনব?

গরু খাসির মাংসের আজকের বাজার দর জানিয়ে মগবাজার এলাকার মাংস বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, আসলে আমাদের কেনা দাম বেশি পড়ছে তাই খুচরা বাজারে এমন দাম চলছে। আমরা যদি তুলনামূলক কম দামে গরুর খাসি কিনতে পারি তাহলে ক্রেতা পর্যায়ে কম দাম রাখতে পারব। আজ বাজারে গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা আর খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার মুরগি বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম একটু বেশি যাচ্ছে, পাশাপাশি অন্য সব ধরনের মুরগির দামই কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে। মূলত পাইকারি বাজারে আমাদের কেনা দাম বেশি পড়ছে যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। আসলে কিছুদিন আগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার কারণে প্রচুর পরিমাণে মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই কারণে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, এর ফলে দাম বেড়েছে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সেখানকার মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়, ডিমের পাশাপাশি সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি চিঠিতে মুরগি (সোনালি ও ব্রয়লার) ও ডিমের নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্য (উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে) সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

সেই নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী ডিমের মূল্যের পাশাপাশি কেজিপ্রতি সোনালি মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ১৬৮ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।