ঢাকা ০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সংবাদ প্রকাশের পরও গুরুত্ব দেয়নি এলজিইডি, ব্রীজের এ্যাপ্রোচ এখন নদীতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে মিললো বিশাল সুখবর শরতে কাশফুলের রাজ্যে টানা ৪ দিনের ছুটিতে টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় মধ্যরাত থেকে ২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ বাফুফে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন যারা শেখ হাসিনার ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ নিয়ে যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এমন দেশ গড়তে চাই, সব সম্প্রদায়ের সমান অধিকারের বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা- জ্বালানি সংকট দূর করতে বাপেক্স আরও ১৫০ কূপ খনন করবে: জ্বালানি উপদেষ্টা ইংল্যান্ড আমাদের সঙ্গে ৮০০ করে, বাংলাদেশও হারায়

জন্ম-মৃত্যু দিবসে দোয়ার আয়োজন করা যাবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১৩ বার

প্রশ্ন: জন্ম ও মৃত্যু তারিখ পালন বা এ তারিখে বিশেষ দোয়ার আয়োজন ইসলামী শরীয়ত মতে কেমন? বিভিন্ন মসজিদে ইমাম সাহেবকে বিভিন্ন দলের নেতা-নেত্রীদের জন্ম ও মৃত্যু তারিখে আয়োজন-ভিত্তিক দোয়া করার জন্য বলা হয়। সরকার নিয়ন্ত্রিত মসজিদগুলোতে তো করতেই হয় এ ব্যাপারে ইমামদের করণীয় কি? বিশুদ্ধ প্রমাণসহ এর শরয়ী সমাধান জানানোর জন্য আরজ করছি।

উত্তর: জন্মবার্ষিকী-মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা এবং একে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা ইসলামের শিক্ষা নয়। এগুলো বিজাতীয় সংস্কৃতি। এসব অহেতুক কাজ থেকে মুসলমানদের বিরত থাকা আবশ্যক। শরীয়তে জন্ম দিবস বা মৃত্যু দিবসের আলাদা কোনো গুরুত্ব নেই। বিশেষভাবে এই দিনে কোনো ধরনের দোয়া বা আমল-ইবাদতের বিধান নেই।

আর মৃত ব্যক্তিদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা, ঈসালে সাওয়াব করা শরীয়ত স্বীকৃত। তবে এর জন্য কোনো দিনক্ষণ নির্দিষ্ট নেই। বরং যে কোনো দিন যে কোনো সময় তাদের জন্য দোয়া করা, নফল নামাজ, দান-সদকা, ইত্যাদির মাধ্যমে ঈসালে সওয়াব করা যেতে পারে।

কোনো নির্দিষ্ট দিনে বা সময়ে এমনটি করলে বিশেষ সওয়াব পাওয়া যাবে- এমন নয়। সালাফে সালেহীনের যুগেও নির্দিষ্ট দিনে মৃত ব্যক্তিদের জন্য দোয়া-ঈসালে সওয়াবের আয়োজনের প্রমাণ নেই।

ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, মৃতের সন্তান-আত্মীয়স্বজন সব সময়ই মরহুমদের মাগফিরাতের দোয়া করবে, সাধ্যমতো ঈসালে সওয়াব করবে। বছরে কেবল নির্দিষ্ট এক-দুদিন এসব রসমী দোয়া, ঈসালে সওয়াবের আয়োজন করে সারা বছর এ থেকে গাফেল থাকা- এটা যেমন ইসলামের শিক্ষা নয়; তেমনি তা আদর্শ সন্তানেরও আচরণ হতে পারে না। সুতরাং জন্মদিবস, মৃত্যু দিবস পালন বা বিশেষভাবে এ দিনগুলোতে ঈসালে সওয়াবের আয়োজন থেকে বিরত থাকা জরুরি।

কোনো মুসল্লি মসজিদে এজাতীয় আয়োজন করতে চাইলে ইমাম সাহেব প্রজ্ঞা ও হেকমতের সঙ্গে বিষয়টির শরয়ী দিকটা তাদের বুঝিয়ে বলবেন। এবং এসব রসমী আয়োজনের পরিবর্তে মৃত ব্যক্তির জন্য সুন্নাহসম্মত ঈসালে সওয়াবের প্রতি তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন।

এতদসত্ত্বেও কেউ এমন আয়োজন করলে বা এসব দিনে ইমাম সাহেবকে কারো জন্য দোয়া করতে বললে সেক্ষেত্রে ফিতনা-ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলা থেকে বাঁচতে ইমাম সাহেব সাধারণভাবে (একজন মুমিনের মাগফিরাতের নিয়তে, বিশেষ দিবস হিসেবে নয়) ওই মৃত ব্যক্তিসহ সকল মুসলমানের জন্য দোয়া করতে পারেন। এক্ষেত্রে সম্ভব হলে দোয়া-মজলিসের আগে বা পরে মূল শরয়ী বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করবেন।

সূত্র: সহিহ বুখারি, হাদিস ২৬৯৭; শরহে মুসলিম, নববী ১২/১৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫৯; আলবায়িছ আলা ইনকারিল বিদায়ি ওয়াল হাওয়াদিছ, পৃ. ১০৭; আলইতিসাম ১/৫৩, ৪৮৬

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সংবাদ প্রকাশের পরও গুরুত্ব দেয়নি এলজিইডি, ব্রীজের এ্যাপ্রোচ এখন নদীতে

জন্ম-মৃত্যু দিবসে দোয়ার আয়োজন করা যাবে

আপডেট টাইম : ১০:৪৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রশ্ন: জন্ম ও মৃত্যু তারিখ পালন বা এ তারিখে বিশেষ দোয়ার আয়োজন ইসলামী শরীয়ত মতে কেমন? বিভিন্ন মসজিদে ইমাম সাহেবকে বিভিন্ন দলের নেতা-নেত্রীদের জন্ম ও মৃত্যু তারিখে আয়োজন-ভিত্তিক দোয়া করার জন্য বলা হয়। সরকার নিয়ন্ত্রিত মসজিদগুলোতে তো করতেই হয় এ ব্যাপারে ইমামদের করণীয় কি? বিশুদ্ধ প্রমাণসহ এর শরয়ী সমাধান জানানোর জন্য আরজ করছি।

উত্তর: জন্মবার্ষিকী-মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা এবং একে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা ইসলামের শিক্ষা নয়। এগুলো বিজাতীয় সংস্কৃতি। এসব অহেতুক কাজ থেকে মুসলমানদের বিরত থাকা আবশ্যক। শরীয়তে জন্ম দিবস বা মৃত্যু দিবসের আলাদা কোনো গুরুত্ব নেই। বিশেষভাবে এই দিনে কোনো ধরনের দোয়া বা আমল-ইবাদতের বিধান নেই।

আর মৃত ব্যক্তিদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা, ঈসালে সাওয়াব করা শরীয়ত স্বীকৃত। তবে এর জন্য কোনো দিনক্ষণ নির্দিষ্ট নেই। বরং যে কোনো দিন যে কোনো সময় তাদের জন্য দোয়া করা, নফল নামাজ, দান-সদকা, ইত্যাদির মাধ্যমে ঈসালে সওয়াব করা যেতে পারে।

কোনো নির্দিষ্ট দিনে বা সময়ে এমনটি করলে বিশেষ সওয়াব পাওয়া যাবে- এমন নয়। সালাফে সালেহীনের যুগেও নির্দিষ্ট দিনে মৃত ব্যক্তিদের জন্য দোয়া-ঈসালে সওয়াবের আয়োজনের প্রমাণ নেই।

ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, মৃতের সন্তান-আত্মীয়স্বজন সব সময়ই মরহুমদের মাগফিরাতের দোয়া করবে, সাধ্যমতো ঈসালে সওয়াব করবে। বছরে কেবল নির্দিষ্ট এক-দুদিন এসব রসমী দোয়া, ঈসালে সওয়াবের আয়োজন করে সারা বছর এ থেকে গাফেল থাকা- এটা যেমন ইসলামের শিক্ষা নয়; তেমনি তা আদর্শ সন্তানেরও আচরণ হতে পারে না। সুতরাং জন্মদিবস, মৃত্যু দিবস পালন বা বিশেষভাবে এ দিনগুলোতে ঈসালে সওয়াবের আয়োজন থেকে বিরত থাকা জরুরি।

কোনো মুসল্লি মসজিদে এজাতীয় আয়োজন করতে চাইলে ইমাম সাহেব প্রজ্ঞা ও হেকমতের সঙ্গে বিষয়টির শরয়ী দিকটা তাদের বুঝিয়ে বলবেন। এবং এসব রসমী আয়োজনের পরিবর্তে মৃত ব্যক্তির জন্য সুন্নাহসম্মত ঈসালে সওয়াবের প্রতি তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন।

এতদসত্ত্বেও কেউ এমন আয়োজন করলে বা এসব দিনে ইমাম সাহেবকে কারো জন্য দোয়া করতে বললে সেক্ষেত্রে ফিতনা-ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলা থেকে বাঁচতে ইমাম সাহেব সাধারণভাবে (একজন মুমিনের মাগফিরাতের নিয়তে, বিশেষ দিবস হিসেবে নয়) ওই মৃত ব্যক্তিসহ সকল মুসলমানের জন্য দোয়া করতে পারেন। এক্ষেত্রে সম্ভব হলে দোয়া-মজলিসের আগে বা পরে মূল শরয়ী বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করবেন।

সূত্র: সহিহ বুখারি, হাদিস ২৬৯৭; শরহে মুসলিম, নববী ১২/১৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫৯; আলবায়িছ আলা ইনকারিল বিদায়ি ওয়াল হাওয়াদিছ, পৃ. ১০৭; আলইতিসাম ১/৫৩, ৪৮৬