কারণ কোরবানি সম্পর্কে আমাদের পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকার কারণে বিভিন্ন সময় এর সঙ্গে অনেক ভুল ধারণাকেও গুলিয়ে ফেলি।
এ ধরনের অসামঞ্জস্যের কারণ হলো, আমরা স্পষ্টভাবে জানি না কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব আর কার ওপর ওয়াজিব নয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন কারণে মানুষের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়।
নিসাব কী : সোনার ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি সোনার মালিক হলেই তাকে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বলে গণ্য করা হবে। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার দামের সমপরিমাণ অর্থ বা এমন প্রয়োজনাতিরিক্ত জিনিস, যার দাম সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার দামের সমপরিমাণ বা বেশি হয়
যেমন—কারো কাছে দুই ভরি সোনা ও ৫০০ টাকা আছে, যার কোনো একটিও পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নয়। কিন্তু দুই ভরি সোনার দাম ও ৫০০ টাকা একত্র করলে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার দামের বেশি হয়ে যায়। তাই তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হবেন এবং তাঁর ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
উল্লিখিত আলোচনা দ্বারা বোঝা যায়, আমাদের দেশে এমন অনেক নারী রয়েছেন, যাঁর ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে আছে, কিন্তু তাঁর পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া হয় না। আবার এমন অনেক পুরুষ আছেন, যাঁর ওপর মূলত কোরবানি ওয়াজিব নয় (ওয়াজিব তাঁর স্ত্রী বা কন্যার ওপর)। কিন্তু তাঁর পক্ষ থেকেই কোরবানি দেওয়া হচ্ছে। আছে এমন যুবক-যুবতিও, যার কাছে কোনো না কোনোভাবে নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে, কিন্তু সে জানেই না যে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। যেহেতু কোরবানি একটি ইবাদত, তাই ওই কোরবানি ওয়াজিব না হওয়া ব্যক্তিটি কোরবানি করার সওয়াব পেয়ে গেলেও মূলত যার ওপর ওয়াজিব ছিল, তাকে অবশ্যই কোরবানি করতে হবে।
তাই এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার। যাঁরা ধনাঢ্য, তাঁরা চাইলেই পরিবারের সবার পক্ষ থেকে কোরবানি করতে পারেন। কিন্তু যাঁরা মধ্যবিত্ত রয়েছেন, তাঁরা সব দিক চিন্তা করে ঠিক করতে হবে, এ বছর তাঁদের পরিবারে কার কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে। প্রয়োজনে স্থানীয় কোনো বিজ্ঞ আলেমের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা বিষয়টি ঠিক করতে পারি আমাদের আসলে কার কার পক্ষ থেকে কোরবানি করা ওয়াজিব।