পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ইদ্দত মামলায় (অবৈধ বিয়ে) দোষী সাব্যস্ত করায় বিক্ষোভ চলছে দেশটিতে। ‘আমার শরীর, আমার সিদ্ধান্ত’ স্লোগানে নেমেছেন পাকিস্তানি নারীরা।
আদালতের রায়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার ইসলামাবাদের জাতীয় প্রেস ক্লাবের বাইরে জড়ো হন তারা। বুধবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, সমাজতান্ত্রিক নারীবাদী গ্রুপ আউরাত মার্চ ইসলামাবাদ সমাবেশে বলেছেন, হস্তক্ষেপ থেকে মুক্তি চাই। আমার শরীরে আমার সিদ্ধান্ত থাকবে। বিক্ষোভকারীরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে নারীদের মৌলিক অধিকার দাবি করেন।
৩ জানুয়ারি আদিয়ালা কারাগারের একটি বিশেষ আদালত খান ও বিবিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। শরিয়াহ আইন লঙ্ঘন করে বিয়ে করার দায়ে এ রায় দেন আদালত। পাশাপাশি ৫ লাখ রুপি করে জরিমানাও করা হয়।
তাদের (খান ও বিবির) বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন বুশরা বিবির সাবেক স্বামী খাওয়ার মানেকার। অভিযোগ করেন, তার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর নির্দিষ্ট সময় পার না হতেই খানকে বিয়ে করেন বিবি। অভিযোগের পরপরই তাদের দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেন আদালত। যার জেরেই শুরু হয় বিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীরা খান ও বিবির বিরুদ্ধে দেওয়া আদালতের রায়কে লজ্জাজনক ও নারীবিরোধী বলে নিন্দা করেছেন। নারী কর্মী ইয়াকুব বলেছেন, এটি একটি লজ্জাজনক রায়। আদালত আমাদের মর্যাদা, আমাদের গোপনীয়তা, আমাদের শারীরিক স্বায়ত্তশাসনে আক্রমণ করেছেন।
আরেক নারীকর্মী ফারজানা বারী আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ করে বলেন, একজন নারীর শরীর নিয়ে শুধু তারই সিদ্ধান্ত থাকবে। আদালতের রায়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়, পুরুষতান্ত্রিক এবং নারীবিরোধী।
সাবেক সিনেটর ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপির) সদস্য ফারহাতুল্লাহ বাবরও বিক্ষোভে যোগ দেন। বলেছেন, তিনি ইমরান খানের প্রতিপক্ষ। কিন্তু এ রায় অন্যায়। এজন্য প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন।
বাবর সতর্ক করে আরও বলেছেন, এটি পুরো ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রীদের জন্য একটি সতর্কবাণী। পরে তারা শুধু দোষী সাব্যস্ত হবেন না। বরং প্রকাশ্যে অপমানিতও হতে পারেন। আউরাত মার্চ ইসলামাবাদ তাদের অফিসিয়াল বিবৃতির মাধ্যমে উচ্চ আদালতকে রায়ের সিদ্ধান্তগুলোকে বাতিল করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।