নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থাকা দলের সব অফিসই ছেড়ে দিয়েছে এর সহযোগী সংগঠনগুলো। দলটির সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো নিজেদের জন্য নতুন অফিস খুঁজে পেলেও এখনো ঠিকানাহীন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের পুরনো কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ ছাড়াও সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, তাঁতি লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের অফিস ছিল। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে সহযোগী সংগঠন (তাঁতি লীগ ছাড়া) ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো নতুন ঠিকানায় উঠে গেছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল কার্যালয় ছেড়ে দিলেও এখন পর্যন্ত নতুন কোনো অফিস নির্ধারণ করতে পারেনি তারা। তবে যত দিন কার্যালয় না পাওয়া যাবে, তত দিন ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অফিসের মালামাল রাখা হবে তাদের।
এ ব্যাপারে জানতে দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে একই সমস্যার সম্মুখীন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগও। মহানগরের দুই শীর্ষ নেতার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, উত্তরের অফিস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকা থেকে স্থানান্তরের কথা ভাবছেন নেতারা। তারা এ জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গেও আলোচনা করবেন। আর প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেলেই তারা তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করবেন। তবে আপাতত ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কিংবা রমনা ভবন ব্যবহারের সম্ভবনা আছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, “আমাদের নতুন অফিসের জন্য ভবন খুঁজছি। আশা করি শিগগিরই তা পেয়ে যাব।”
জানা গেছে, যুবলীগের নতুন কার্যালয় ভাড়া নেয়া হয়েছে ২৫ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, “নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাদের বলেছেন ধানমণ্ডি কার্যালয়ে অফিস করতে। এখন থেকে আমাদের অফিসের কার্যক্রম সেখান থেকে পরিচালনা হবে। তবে পরে কোথাও ভালো অফিস পেলে সেখানে চলে যাবে সংগঠনের অফিস।”
মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুন্নেছা মোশাররফ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়টি আমাদের নতুন কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করব।”
এখান থেকে যুব মহিলা লীগের কার্যক্রমও পরিচালনা করা হবে বলে জানান সংগঠনটির সভাপতি নাজমা আকতার।
তাতীঁ লীগের আহ্বায়ক এনাজুর রহমান চৌধুরী বলেন, “আমরা সাময়িকভাবে খদ্দর মার্কেটের ছয় তলায় একজন উকিলের চেম্বারে আমাদের মালপত্র রেখেছি। কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সহযোগী সংগঠনের জন্য অফিস বরাদ্দ দেয়া হবে। অফিস পেলেই আমরা সেখানে মালামাল স্থানান্তর করব।”
সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ ও দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের নতুন অফিস ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর চার তালায়। নতুন অফিসে মালপত্র স্থানান্তরের কাজ শুরু হয়েছে বলে ছাত্রলীগ জানায়।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার পর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের বর্তমান অফিসটি ভাড়া নেয়া হয়। এরপর গত ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে লিজ নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলেও সেটা সেই সময় শেষ করা যায়নি। পরে বর্তমান সরকারের আগের মেয়াদে ওই লিজ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আওয়ামী লীগ। পাশে আরো কিছু জায়গাও দলীয় ফান্ড থেকে কেনা হয়।
লিজ ও জমি ক্রয় প্রক্রিয়া শেষ হলে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ক্ষমতাসীন দলটি। পরে নকশা প্রস্তুত ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদনের পর এখন বাস্তবায়নের দিকে যাচ্ছে দলটি।