ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের কারণে গাজার জনগণের ‘সময় ও বিকল্প ফুরিয়ে যাচ্ছে’। তিনি বুধবার জেনেভায় গ্লোবাল রিফিউজি ফোরামে ভাষণ দেওয়ার সময় এ কথা বলেন।
লাজারিনি বলেছেন, ‘তারা (ফিলিস্তিনিরা) একটি সংকুচিত জায়গায় বোমাবর্ষণ, বঞ্চনা ও রোগের সম্মুখীন হচ্ছে।’ তিনি গাজার পরিস্থিতিকে ‘পৃথিবীতে নরক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
পাশাপাশি সতর্ক করে বলেন, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের লোকেরা ‘১৯৪৮ সাল থেকে তাদের ইতিহাসের অন্ধকার অধ্যায়ের মুখোমুখি হচ্ছে এবং এটি একটি বেদনাদায়ক ইতিহাস’।ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের চালানো হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং প্রায় ২৪০ জন জিম্মি হয়েছে। সেই হামলার পর গাজায় সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ইসরায়েলের নিরলস বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযানে অঞ্চলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
এখন পর্যন্ত সাড়ে ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।জাতিসংঘের অনুমান, গাজার ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে ১৯ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তারা প্রতিদিন প্রায় ১০০টি সহায়তা ট্রাক থেকে পণ্য গ্রহণ করছে।
লাজারিনি বলেছেন, ‘আমরা পর্যাপ্ত মানবিক প্রতিক্রিয়া থেকে অনেক দূরে রয়েছি।’ তাঁর মতে, যখন সহায়তা বিতরণ করা হয়, তখন প্রায়ই একটি বৃহৎ পরিবারকে একটি টুনা বা মটরশুঁটির ক্যান এবং এক বোতল পানিকে ভাগাভাগি করতে হয়।
প্রায়ই তারা এর চেয়ে বেশি কিছু পায় না।জাতিসংঘের সংস্থার প্রধান বর্ণনা করেছেন, মানুষ ত্রাণবাহী ট্রাক থামাচ্ছে এবং হতাশায় রাস্তায় পাওয়া খাবার খাচ্ছে।
গাজায় অধিকাংশ সহায়তা বিতরণ ইউএনআরডাব্লিউএর ওপর নির্ভর করে। তবে সংস্থাটির প্রধান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, তাঁর সংস্থার সক্ষমতা ‘এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে’।
এ ছাড়া গাজার জনগণ এখন মিসরীয় সীমান্তের কাছে মূল ভূখণ্ডের এক-তৃতীয়াংশেরও কম অংশে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে লাজারিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভয়ানক পরিস্থিতি শিগগিরই দেশত্যাগের সূত্রপাত করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এটা ভাবা অবাস্তব যে মানুষ এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির মুখে স্থিতিশীল থাকবে, বিশেষ করে যখন সীমান্ত এত কাছাকাছি।’মিসরীয় সীমান্তের রাফাহ শহরের একমাত্র ক্রসিং দিয়ে সহায়তা গাজায় প্রবেশ করছে। সেখানকার জনসংখ্যা দুই লাখ ৮০ হাজার থেকে বেড়ে ১০ লাখেরও বেশি হয়েছে বলে লাজারিনি জানিয়েছেন।
সূত্র : এএফপি