দামের কারণেই পেঁয়াজ এখন ‘নিরাপত্তাহীন’। খেত থেকেই চুরি হয়ে যেতে পারে পেঁয়াজ—এমন শঙ্কায় রাজশাহীর পুঠিয়ায় নিজ নিজ পেঁয়াজের খেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। শুধু রাত জেগে পাহারা নয়, দিনেও চলছে কঠোর নজরদারি।
১০ কাঠা জমিতে আগের মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেন মৃধা মিয়া। দামও পেয়েছিলেন ভালো। এ কারণে এবার এক বিঘা জমিতে চাষ করেছেন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুরহাটের এ চাষি। তবে সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম বাড়ায় চুরি আতঙ্কে পড়েছেন মৃধার মতো চাষিরা। বাধ্য হয়ে রাত জেগে খেত পাহারা দিচ্ছেন তারা।
শিবপুরহাট পড়েছে উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নে। এ গ্রামের বাসিন্দা মৃধা মিয়া জমি থেকে পেঁয়াজ তুলছেন কদিন ধরে। ফলনও পেয়েছেন ভালো। তিনি মণপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায়।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যে কারণে কৃষকরা দামও পাচ্ছেন ভালো। সেই সঙ্গে উপজেলাটি উন্নত জাতের পেঁয়াজ উৎপাদনের উপযোগী হওয়ায় চাষেও প্রতিনিয়ত আগ্রহ বাড়ছে।
পুঠিয়া সদর ইউনিয়নের তারাপুরের চাষি মাসুদ রানা। দেড় বিঘা জমিতে চাষ করেছেন গ্রীষ্মকালীন এ পেঁয়াজ। প্রতি বিঘার চাষে তার খরচ হয়েছে ৩৫-৪০ হাজার টাকা। উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম মিলছে ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা। এ কারণে তার জমি দেখতে প্রতিদিন নানা এলাকার কৃষক আসছেন। বাজারে দাম ভালো মেলায় মাসুদ পরিকল্পনা করছেন আগামী মৌসুমে দ্বিগুণ জমিতে পেঁয়াজ চাষের।
পেঁয়াজের ফলন ভালো হওয়ার কৃতিত্ব চাষিদের দেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সাকলাইন। তিনি বলেন, কৃষি কর্মকর্তারা যেভাবে তদারক করেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন, চাষিরা সেভাবে পরিচর্যা করেছেন। এ কারণে ফলন ভালো হয়েছে। সরকারি প্রণোদনায় আগের মৌসুমের চেয়ে এবার দ্বিগুণ জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়েছে বলেও জানান।
গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন লাভজনক হওয়ায় চাষিদের আগ্রহ অনেক বেড়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সরকার। তার ভাষ্য, দুই মৌসুম ধরে এ অঞ্চলে এ পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। এখানকার আবহাওয়াও চাষ উপযোগী। চাষিরাও সঠিক নিয়মে পরিচর্যা করায় উৎপাদন ভালো হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ সময় বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে যায়। ফলে দাম ভালো পেয়ে উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা।