নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগে উগান্ডার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া নতুন করে জিম্বাবুয়ের কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়নি।
বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানান, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত করায় আমি জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে নতুন মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করছি। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ধারা ২১২(এ)(৩)(সি) অনুসারে, জিম্বাবুয়েতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করায় জড়িত বা দায়ী ব্যক্তিদের ওপর এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
এ ধরনের কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কারচুপি; ভোটারদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা বা ভোটদানে বাধা দেওয়া; রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া; গণতান্ত্রিক, শাসন বা মানবাধিকারসংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োজিত নাগরিক সমাজ সংস্থাগুলোর (সিএসও) ক্ষমতা সীমিত করা, ভোটার, নির্বাচন পর্যবেক্ষক বা সিএসওগুলোকে হুমকি বা শারীরিক সহিংসতার মাধ্যমে ভয় দেখানো।
এ ছাড়াও রয়েছে ঘুষ প্রদানসহ দুর্নীতিমূলক কাজে জড়িত থাকা, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে; নির্বাচনী মামলার বিচারের সময় বিচার বিভাগের স্বাধীন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করা; জিম্বাবুয়েতে মানবাধিকারের অপব্যবহার বা লঙ্ঘন করা।
এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি কেবল জিম্বাবুয়েতে ২০২৩ সালের আগস্টের নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে, দেশটির সর্বসাধারণ নাগরিকদের জন্য নয়।
গত আগস্টে এক বিতর্কিত নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়লাভ করেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়া। তবে তার বিরোধীরা ওই নির্বাচনে ‘বিশাল জালিয়াতি’র অভিযোগ করেছে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও বলেছেন, জিম্বাবুয়ের নির্বাচন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
উগান্ডা প্রসঙ্গে পৃথক এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় উগান্ডার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে একটি ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। ওই সময় দেশটির সরকারকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনি প্রক্রিয়া, সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করতে অনুরোধ করা হয়।
সে প্রক্রিয়ায় কোনো উন্নতি না হওয়ায় বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, আমি উগান্ডার বর্তমান বা সাবেক কর্মকর্তাদের বা অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভিসানীতির সম্প্রসারণ ঘোষণা করছি। যারা উগান্ডার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য বা প্রান্তিক সদস্যদের দমন করার লক্ষ্যে নীতি বা কর্মের জন্য দায়ী বা জড়িত তারাই এর লক্ষ্য।