ফলের রাজ্য হিসেবে পরিচিত সীমান্ত ঘেষা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা। এই উপজেলায় রয়েছে লিচু, কাঁঠাল, মাল্টা, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফলের বাগান। এবার প্রথম বারের মতো বাণিজ্যিকভাবে চায়না-থ্রি-জাতের কমলার আবাদ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বিজয়নগরের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দুলালপুরের বাসিন্দা প্রবাস ফেরত যুবক মো. আলমগীর ভূঁইয়া। উৎপাদিত এই কমলা চীনসহ অন্য যেকোনো দেশ থেকে আমদানি করা কমলার মতোই সুস্বাদু। জেলার বিভিন্নস্থান থেকে ফরমালিন মুক্ত এ ফলটি নিতে ভিড় জমাচ্ছে আলমগীরের চায়না কমলা বাগানে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে মাত্র দুই বিঘা জমি ১৬ বছরের জন্য বর্গা নিয়ে ইউটিউব দেখে চায়না কমলা চাষ শুরু করেন কৃষক আলমগীর ভূঁইয়া।
তিন বছর আগে ১৮০টি চায়না কমলার চারা রোপনের পর সফলতার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন তিনি। চারা লাগানোর পর অধিকাংশ লোক তাকে নিরুৎসাহিত করলেও হাল ছাড়েননি আলমগীর ভূঁইয়া। মাত্র চার লাখ টাকা নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে শুরু করেন চাষাবাদ।
আজ সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে নজরকাড়া ছোট ছোট হলুদ রঙের চায়না কমলা। নতুন করে আরও ৪০০ চারা রোপণ করেছেন। এ বছর ৯ থেকে ১০ টন কমলার ফলন আসা করছেন তিনি। যা ১২ লাখ টাকার মতো বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে অনেক ফলেই পাকা রং ধরেছে। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো।
প্রবাস ফেরত কৃষক আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, আমি ইউটিউব দেখে ২ বিঘা জমি ১৬ বছরের জন্য বর্গা নিয়ে চায়না কমলা চাষ শুরু করি। এ বছর যে পরিমাণ ফলন এসেছে। আশা করছি, বাগান থেকে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মতো কমলা বিক্রি করতে পারব। ৩ বিঘা জমিতে নতুন করে আরও ৪০০ চারা রোপণ করেছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে চায়না কমলা চাষের দিকে নজর দিলে চীন থেকে কমলা ক্রয় করতে হবে না বলে মনে করছেন গবেষকরা। তারা মনে করেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চায়না কমলার বাম্পার ফলন পাচ্ছে কৃষকরা। কৃষি বিভাগ সুদৃষ্টি দিলে কমলা চাষে যেমন আগ্রহ বাড়বে তেমন দেশের চাহিদাও মেটাতে পারবে চাষিরা।
বিজয়নগর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল ওদুদ জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রবাস ফেরত আলমগীর এখন সফল। গত বছরের তুলনায় এবার তিন গুণ বেশি ফলন এসেছে। তিনি একজন সফল এবং সাহসী উদ্যোক্তা। নতুন করে আরও একটি বাগান করা হয়েছে। আশা করি বিজয়নগরে চায়না কমলার চাষ বাড়বে।